বালুরঘাট ও কোচবিহারে বিমান পরিষেবা চালুর বিষয়ে হলফনামা চাইল হাইকোর্ট, কেন্দ্র ও রাজ্যকে জমা দেওয়ার নির্দেশ
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : আদালতের শুনানির পরে বিমান পরিষেবা বিশেষত: এয়ারবাস চালু করার ব্যাপারে আশার আলো দেখছেন বালুরঘাট ( Balurghat) ও কোচবিহারের ( coochbehar) মানুষ।শুক্রবার এই দুই বিমানবন্দর থেকে বিমান পরিষেবা ( Air Service) চালুর দাবিতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সহ এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে ( Airport Authority of India) এই পরিষেবা চালুর বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে হলফনামা জমা দিতে বলল হাইকোর্ট ।এরই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের ( Calcutta Highcourt) প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের বেঞ্চ বালুরঘাট বিমানবন্দর পরিদর্শনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আগামী ৯ মার্চ আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ।
জেনে রাখা ভালো যে, অতীতে বালুরঘাট ও কোচবিহার , দুই বিমানবন্দর থেকেই বিমান পরিষেবা চালু ছিল । কিন্তু নিরাপত্তা, পরিকাঠামোগত ত্রুটিসহ নানা কারণে এই দুই বিমানবন্দর থেকে উড়ান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায় । ফের এই দুই বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা চালুর দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন আইনজীবী অশোক হালদার । দুই বিমানবন্দর থেকে অন্তত এয়ারবাস চালু করার দাবি জানিয়েছেন মামলাকারী ।
মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী বলেন ” আজ আদালতে আমরা বালুরঘাট বিমানবন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলাম । ব্যবসা , শিল্প , চিকিৎসা , আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন বিষয়ে এই বিমানবন্দর দুটি চালুর প্রয়োজনীয়তা আদালতকে জানানো হয়েছে । হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের বেঞ্চ আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার , রাজ্য সরকার এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে” । মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী আদালতে আরো তথ্য দিয়ে বলেন, বিমানবন্দরগুলির পরিকাঠামো আগেই ঢেলে সাজানো হয়েছিল । তাই হাইকোর্টের বিমানবন্দরগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেছিলাম । প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের বেঞ্চ আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার , রাজ্য সরকার রাজ্য সরকার এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে । এরইসঙ্গে বালুরঘাট বিমানবন্দরের পরিদর্শনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও জমা দিতে বলেছে । আগামী ৯ মা র্চ ফের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে”।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , বারবার এয়ারপোর্ট পরিদর্শনের পরেও বিমান চালু না হওয়ায় জেলাবাসীর অন্দরে ইতিমধ্যেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে । তাঁদের বক্তব্য , ১৯৮৭ সালে যখন বালুরঘাটের জনসংখ্যা কম , সেই সময় এখানে বিমান পরিষেবা চালু ছিল । কিন্তু বর্তমানে বালুরঘাটের জনসংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে । বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ বালুরঘাট হয়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করাতে যান । বিমানবন্দর চালু হয় গেলে তাঁরা বালুরঘাট বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারবেন । এছাড়াও জেলার মানুষ চিকিৎসা , পেশা ছাড়াও নানা প্রয়োজনে বাইরে যেতে বিমান পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবেন । এখানে বিমান পরিষেবা চালু হলে জেলার আর্থ সামাজিক চিত্রটাই বদলাবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা ।
২০১৭ সাল নাগাদ বালুরঘাট বিমানবন্দরের সমস্ত কাজ প্রায় শেষ হয়েছে । কিন্তু এখানে উড়ান দেখা যায়নি । এর মধ্যে অনেকবার এয়ারপোর্ট অথরিটির তরফে বিমানবন্দরের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার পর দ্রুত উড়ান চালু হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় । পরবর্তীকালে দীর্ঘদিন পর এয়ারপোর্ট চালুর উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার । মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সম্প্রতি এয়ারপোর্ট অথরিটি ও পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন।এখন দেখার বিষয় কত তাড়াতাড়ি আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হয় এবং বালুরঘাট ও কোচবিহারের মানুষ বিমানপরিবহণের সুবিধে নিতে পারেন।