বেআইনি কয়লার বিরুদ্ধে অভিযানে CISF, ৩ টন কয়লা ও ১৭ টি সাইকেল সহ একটি মোটরসাইকেল আটক করল
বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র :- বেআইনি কয়লা অভিযানে রাজ্যের পুলিশএর পর এবার কুলটি থানা এলাকার ইসকো রাস্তা থেকে সিআইএসএফ এর দল রাস্তায় অভিযান চালিয়ে ৩ টন কয়লা ও ১৭ টি সাইকেল সহ একটি মোটরসাইকেল আটক করল। সিআইএসএফ তল্লাশি চালিয়ে এইসব অবৈধ কয়লা আটক করে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার এর তরফে এলাকায় বারবার তল্লাশি ও অভিযান চলা সত্ত্বেও কয়লা চোরেরা এখনো সক্রিয় রয়েছে যার ফলে রাস্তায় এখনো অবৈধভাবে কয়লা ধরা পড়েছে ।




পুলিশ-প্রশাসন বারবার দাবি করে এসেছে, অবৈধ কয়লা খনন ও পাচারে রাশ টানা গিয়েছে। তবে প্রকাশ্য রাস্তায় সাইকেলে তো বটেই, গত কয়েক মাসে পুলিশি অভিযানে কুলটি থানার চৌরঙ্গী ফাঁড়ি থেকে ধরা পড়া কয়লা বোঝাই ট্রাক বা লরির হিসেব থেকেও পরিষ্কার, আসানসোল-রানিগঞ্জ খনি এলাকায় কয়লা কারবারের দৌরাত্ব এখনো কমেনি।তাছাড়া পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকেও ভয় কয়লা কারবার যুক্ত রয়েছে ।
খনি অঞ্চলে বেআইনি কয়লা খনন চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মূলত তিন পদ্ধতিতে এই কয়লা চুরি চলে। প্রথমত, ইসিএল বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে অবৈধ খাদান তৈরি করে কয়লা তোলা হয়। দ্বিতীয়ত, ইসিএলের বন্ধ বা চালু খোলা মুখ খনিতে গভীর সুড়ঙ্গ (র্যাট হোল) বানিয়ে কয়লা তোলা হয়। তৃতীয়ত, ইসিএলের কয়লা ডম্পার বা রেলের পরিবহণের সময়ে কয়লা নামিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট গঠনের পরে ইসিএল বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে খাদান তৈরি করে কয়লা তোলা কমেছে। কিন্তু অন্য সব পদ্ধতিতে এখনও চুরি চলছে পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন বারাবনি ও সালানপুরে কয়লা চুরির রমরমা সবচেয়ে বেশি। এর পরে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, কুলটি ও আসানসোলের কিছু এলাকায় চলছে এই চুরি। সালানপুরের বনজেমাহারি, সংগ্রামগড়, ডাবর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় খাদান গড়ে কয়লা তুলছে চোরেরা। বনজেমাহারি রেল সাইডিং থেকেও কয়লা চুরি যাচ্ছে। বারাবনির রসুনপুর এলাকা থেকেও চোরেরা কয়লা কাটছে। সাইকেল, গরুর গাড়ি বা মোটরবাইকে চাপিয়ে এই কয়লা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া অবৈধ ডিপোয়।
বারাবনির জামগ্রাম, গৌরান্ডি, মদনপুর, সরিষাতলি এলাকাতেও অবৈধ কয়লার কারবার রমরম করে চলছে বলে এলাকা সূত্রে জানা যায়। যার জেরে মাঝে-মধ্যে ধসের ঘটনাও ঘটছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কুলটির মিঠানি, বেজডিহি, দামাগড়িয়া, বড়িরা, আসানসোলের কালিপাহারি, নুনিয়াবুড়ি, গিরমিট, লালডাঙা এলাকাতেও কয়লা চুরি চলছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি।
বাসিন্দাদের দাবি যে ভুল নয়, তার প্রমাণ মিলেছে পুলিশি অভিযানে নিয়মিত অবৈধ কয়লার লরি আটক হওয়ার ঘটনায়।বেআইনি কয়লা চুরি প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালায়।নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়। অবৈধ কয়লা বোঝাই লরি দেখলেই ধরা হয়।তিনি আরও জানান, তাঁরা ইসিএল-কে জানিয়েছেন, স্থানীয় থানায় জানালেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তাছাড়া সিআইএসেফ এর দল নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ।
এখন দেখার এটাই যে কতদিন এভাবে কয়লা চোরেরা তাদের কারবার চালিয়ে যায়