RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জে ১৪ বছর ভবঘুরে হিসেবে দিন কাটানো গুড্ডু সিং এর খোঁজ পেল তার আত্মীয়রা

রানীগঞ্জের পুলিশকর্মী রাজন কুমারের বুদ্ধিতে বাড়ি ফেরানো সম্ভব হল

বেঙ্গল মিরর, রাণীগঞ্জ, চরণ মুখার্জি : অবশেষে ১৪ বছর খনি শহর রানীগঞ্জের অলিতে গলিতে রাজ পথের ধারে ভবঘুরে হিসেবে দিন কাটানো মানসিক ভারসাম্যহীন নিখোঁজ হওয়া বছর 55র গুড্ডু সিং এর খোঁজ পেল তার আত্মীয় স্বজনেরা। রানীগঞ্জের এক পুলিশকর্মী রাজন কুমারের উপস্থিত বুদ্ধিতে ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন গুড্ডু সিং কে তার বাড়ির লোকের খোঁজ করে বাড়ি ফেরানো সম্ভব হল বলেই দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় রানীগঞ্জের রাজ পথের ধারে দীর্ঘদিন ধরেই ভবঘুরেকে দেখা যেত বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে নিজের শরীরকে তপ্ত রাখতে। বেশ কয়েক দফায় ওই ভবঘুরেকে বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করলেও সে ঠিকঠাক কোন উত্তর না দেওয়ায় পুলিশকর্মীরা তার বাড়ির পরিচয় ও তার সঠিক নাম ঠিকানা কিছুই জানতে পারেনি, বেশ কয়েক দফায় তাকে নিয়ে এসে পুলিশকর্মীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দিয়েছেন, কিন্তু তার নাম গোত্র ঠিকানা কিছুই না মেলায় তার বাড়ি ফেরানো সম্ভব হয়নি। এরপর ফের ওই ভবঘুরে আবারো সেই রাস্তার ধারে রানীগঞ্জের জগন্নাথ ব্রিজের নিচে নিজের স্থায়ী ঠিকানা করে নেয় কনকনে শীতের মধ্যে দয়া দক্ষিণের দেওয়া শাল চাদর গায়ে মুড়ে অসহায় ভাবে দিন কাটা ছিল সে।

এবার সেই বিষয়টি লক্ষ্য করে পুলিশ আধিকারিক তমস কুমার পতি রাজন কুমার কে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতা করার জন্য বললেই মিলে যায় বড়োসড়ো যোগসুত্র। উত্তরপ্রদেশের যে গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ছিল ওই ভবঘুরে তারই কয়েকটি গ্রামের আশেপাশেই বাস করত রাজন কুমার নামের ওই পুলিশ কর্মী শুক্রবার রাতে যখন ওই পুলিশকর্মী গুড্ডু সিং এর কাছে তার ভাষাভাষীতেই কথা বলতে শুরু করেন তখনই গুড্ডু সিং নিজের গ্রাম উত্তরপ্রদেশের, মৌ জেলার পিরুয়া বলে জানায়, এরপর উত্তরপ্রদেশের রানীপুর থানাকে এই ব্যক্তির খোঁজ দেওয়া হলে, তারা রাণীপুর গ্রামের পীরুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান গুড্ডু যাদবকে ওই ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য দিয়ে তার খোঁজ তল্লাশি শুরু করলে গ্রাম প্রধান তার সঙ্গে থাকা ওই ব্যক্তির ছেলের বন্ধু শ্রবণ যাদব কে নিয়েই তখন বসেছিলেন, শ্রবণ ও তড়িঘড়ি তার বন্ধু অঙ্কিত সিং কে নিজের বছর 15 আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বাবার সম্পর্কে জানান দিলে তিনি কোন কালবিলম্ব না করে শ্রবণ যাদব কে সঙ্গে নিয়ে রাতের ট্রেন ধরে সকালেই পৌঁছে যান রানীগঞ্জে।

এরপর তার এক মুখ দাঁড়ি নিয়ে থাকা নোংরা, অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকা বাবাকে দেখে চিনতে পারেন তার ছেলে অঙ্কিত, এরপরই রানীগঞ্জ থানার পুলিশ ওই ভবঘুরে কে রানীগঞ্জ থানায় নিয়ে এসে তার পরিচয় যাচাই করে, তাকে পরিচ্ছন্ন করে দিয়ে দাড়ি কামিয়ে ফিরিয়ে দিলেন তার পরিবারের হাতে। এতদিন পর নিখোঁজ বাবা’র খোঁজ পেয়ে আপ্লুত পরিবারের সদস্যরা রানীগঞ্জ থানার পুলিশ কে অসংখ্য সাধুবাদ জানালেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *