মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর প্রদেশ যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ, বাংলায় এখনই এনআরসি নিয়ে সরকারি স্তরে কোন ভাবনা নেই, জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ৮ ফেব্রুয়ারিঃ মতুয়া সম্প্রদায় ও সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর যতই বাংলায় এনআরসি ( NRC ) চালু করার দাবি জানাক না কেন, কেন্দ্র সরকারের এই মুহুর্তে তা করা কোন পরিকল্পনা বা ভাবনা নেই। মঙ্গলবার আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনের দলের প্রার্থীদের প্রচারে এসে এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ( Sukanta Majumdar)। একইসঙ্গে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর প্রদেশে যাওয়া নিয়েও কটাক্ষ করেন।
এদিন বেলা সাড়ে বারোটার নাগাদ আসানসোলের এসবি গরাই রোডের ইসমাইল মোড় থেকে পুরনিগমের ৮৪ নং ওয়ার্ডের দলের প্রার্থী মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে রোডশো দিয়ে প্রচার শুরু করেন বালুুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি দিলীপ দে, দুই বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই ও অগ্নিমিত্রা পাল, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ অন্যান্যরা। রোডশো শেষে দুপুরে আসানসোলের মহিশীলা কলোনির ক্ষুদিরাম মূর্তির কাছে ৮৫ নং ও ৪২ নং ওয়ার্ডের দুই প্রার্থীর প্রচারে একটি সভাও করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে সেই সভায় ভিড় একবারেই ছিলো না। সব চেয়ারই ফাঁকা ছিলো। যারা সভাপতির সঙ্গে রোডশোয়ে ছিলেন তারাই সেখানে বসেছিলেন। এমনকি ৪২ নং ওয়ার্ডের প্রার্থীও দেরি করে সভায় আসেন।
প্রচারের মাঝে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলায় এনআরসি চালু নিয়ে সরকারের এই মুহুর্তে কোন ভাবনা নেই। অসম তা হয়েছে আদালতের নির্দেশে। এই রাজ্যে আদালত এমন কোন নির্দেশ দিলে, সেটা অন্য ব্যাপার। তবে আসানসোল সহ রাজ্যের যেখানে উদ্বাস্তুরা রয়েছেন, তাদেরকে সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এনআরসি ও সিএএকে এক করে নিয়ে তৃনমুল কংগ্রেস অপপ্রচার করছে। একইসঙ্গে তিনি দুদিন আগে এক টিভি চ্যানেলে তৃনমুল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশকিছু বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। ষাটোর্ধদের রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া নিয়ে অভিষেকের কথায় প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ওটা উনি সবার,জন্য বলেননি। তার পিসির জন্য বলেছেন। রাজনীতিতে পরিবারের একজন আসবে, এই প্রসঙ্গে বিল আনা নিয়ে সুকান্তবাবুর দাবি, সংবিধান তা বলেনা। এটা করা মানে নাগরিকের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা। তাই এটা অসম্ভব।
একইভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর প্রদেশ যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, রিজিওনাল বা আঞ্চলিক দলগুলো এক একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। এই দলগুলোর উদ্দেশ্য পারিবারিক ও ব্যক্তিগত লাভ করা। রাজ্য বা দেশের কথা এরা ভাবে না। অখিলেশ যাদবের শাসনে ঐ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কি ছিলো? সেখানে গুন্ডারাজ চলতো। যোগীর শাসনে উত্তর প্রদেশ উত্তম প্রদেশ হয়েছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিসটার্ব করতে গেছেন।
এদিনের সভায় লোক না হওয়া নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, মনে হয়, আমার দেরী হয়েছে। তাই অনেকে চলে গেছেন।
এদিকে, সুকান্ত মজুমদারের প্রচার নিয়ে তৃনমুল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, যে দলের রাজ্য সভাপতির সভায় ভিড় হয়না, সেই দলের কি অবস্থা, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। বাংলার মানুষেরা বিজেপিকে চায়না। গত বিধান সভা নির্বাচনে তা তারা দেখিয়ে দিয়েছেন।