ASANSOL

বর্ষ শেষ থেকে বর্ষবরণ, হৈ-হুল্লোড়, পার্টি থেকে পিকনিকে মাতলো আসানসোল শিল্পাঞ্চল

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* ২০২২ কে বিদায় জানিয়ে ২০২৩ কে স্বাগত জানানো। আর তাই শনিবার সন্ধ্যের পর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন ক্লাব ও হোটেলে চললো হৈ-হুল্লোড়, পার্টি থেকে খাওয়াদাওয়া, নাচা-গানা।
তারপর রবিবার ভোর হতে না হতেই বেরিয়ে পড়া পিকনিক করতে।
ইংরেজি নতুন বছরের প্রথমদিনটায় তাই মাইথন থেকে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সব পর্যটন ও পিকনিক স্পট গুলিতে তাই মানুষের ঢল নামলো। করোনার কারণে গত দুবছর সেভাবে মানুষ নতুন বছরের আনন্দ উৎসবের মেজাজে কাটাতে পারেননি।


এবছর তা না থাকায় জল, জঙ্গল ও পাহাড়ে ঘেরা মাইথনে পিকনিক করতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষদের ঢল নামে। শুধু আসানসোল শিল্পাঞ্চল বা আশপাশের জেলা নয় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড ও বিহার থেকে গাড়ি ও বাসে করে প্রচুর মানুষ মাইথনে আসেন।
আর যারাই মাইথনে এদিন বেড়াতে এসেছেন তাদের বেশীরভাগটাই লাগোয়া কল্যানেশ্বরী মন্দিরে পূজো দেন। উদ্দেশ্য, নতুন বছরের প্রথম দিনে সবার সুখশান্তি চেয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদ নেওয়া। এদিন দুপুর সাড়ে বারোটার সময় গিয়ে দেখা যায় কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের ভেতর থেকে পুজো দেওয়ার লাইন মাইথনের দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত রয়েছে। আর সেই ভিড় সামলাতে নাজেহাল অবস্থা পুলিশের। মন্দিরের এক পুরোহিত বলেন, এর আগে পয়লা জানুয়ারিতে এত ভিড় মন্দিরে দেখা যায়নি।


সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মাইথন জলাধারে নৌকাবিহার পর্যটকদের কাছে বরাবরই আকর্ষণের। মাইথন থার্ড ডাইক, বাথানবাড়ি ,সিদাবাড়ি সহ প্রতিটি পিকনিক স্পটেই এদিন ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। অনেকে আবার মাইথন পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখেছেন।
সব পিকনিক স্পটে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হয় জোর নজরদারি। পুলিশের গাড়ি থেকে ঘুরে ঘুরে ঘোষণা করা হয়, পিকনিক করতে এসে কেউ মদ খাবেন না। মদ সহ ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিকনিক করতে আসা মানুষদের যাতে কোন সমস্যা ও অসুবিধে না হয় তারজন্য পুলিশ ক্যাম্প খোলা হয়। মাইথনে এদিন অন্তত শদেড়েকের স্টল ও দোকান বসেছিলো। যা গোটা জায়গা মেলার আকার নেয়। যেখানে সাজগোজ খাবার সহ নানান ধরনের জিনিস বিক্রি হতে দেখা যায়।
এদিন অনেককেই এমন ছিলেন, যারা মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি থেকে প্রথম বার মাইথনে এসেছেন। তারা বলেন, ভাবতেই পারছিনা আমাদের রাজ্যে এত সুন্দর একটা জায়গা আছে। যেখানে পিকনিক করার পাশাপাশি অনেক কিছু দেখা যায়।


বছরের প্রথমদিনে মাইথনের পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলের একাধিক পিকনিক স্পট ছিলো জমজমাট। সব জায়গাতেই প্রচুর ভিড়ও হয়।
চিত্তরঞ্জন রেল শহরের অজয় নদীর ধারে হনুমান মন্দির, দামোদর নদীর পাশে বৃন্দাবনির ঘাট, বারাবনিতে অজয় নদীর রুনাকুড়া ঘাট, কুলটির ডিশেরগড়ের ছিন্নমস্তা মন্দির এলাকা, বার্ণপুরে দামোদর নদী লাগোয়া নেহেরু পার্ক ও তার আশপাশের এলাকা, রানিগঞ্জের দামোদর নদীর বিভিন্ন জায়গা, জামুরিয়ার দরবারডাঙ্গা সহ একাধিক নদীর ঘাটে এদিন প্রচুর মানুষকে পিকনিক করতে দেখা যায়।
বছরের প্রথম দিনে কল‍্যাণেশ্বরী মন্দিরের পাশাপাশি আসানসোলের ঘাঘরবুড়ি মন্দির, হটন রোড কালিবাড়ি, চিত্তরঞ্জনের শিমজুরির কালিমন্দির বারাবনির বেলিয়াপুর সহ একাধিক কালি মন্দিরে অনেক মানুষকে সকাল থেকেই পুজো দিতে ভিড় জমিয়েছিলেন।

Leave a Reply