দূর্গাপুরে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে ১৩ ঘন্টা পরে মৃত্যু দূর্ঘটনায় জখম বৃদ্ধের
দূর্গাপুরেও এবার রেফার রোগ, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থেকেও মিললো না চিকিৎসা,
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় দূর্গাপুর, ৩ এপ্রিলঃ বাইকের ধাক্কায় গুরুতর জখম অবস্থায় একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি না নেওয়ায় এক বৃদ্ধর মৃত্যু হলো বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রবিবার ভোররাত থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের জব্বর পল্লীর বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নির্মল মন্ডল(৬২)। ঘটনার খবর পেয়ে
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে দুর্গাপুর ও ফরিদপুর থানার পুলিস বাহিনী।
অভিযোগ, ১৩ ঘন্টা টানাপোড়নে কোনও হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে ভর্তি নেয়নি। ফলে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা মৃতদেহ রাস্তায় রেখে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন৷
বিক্ষোভরত মৃতের ছেলে রণজয় মন্ডল বলেন, প্রায় ১৩ ঘন্টার টানাপোড়েন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডেও চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়াতে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে বাবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোর রাত থেকে দুর্গাপুরের জব্বরপল্লীতে এই রাস্তা অবরোধের জেরে এলাকায় ব্যাপক যানজট তৈরী হয়। বছর ৬২র নির্মল মন্ডল শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ জব্বরপল্লীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তার একটি ঘড়ির দোকান আছে নির্মলবাবু। শনিবার দুপুরে দোকান বন্ধ করে যখন জব্বরপল্লিতে নিজের বাড়ী ফিরছিলেন নির্মল মন্ডল। ঠিক তখন একটি মোটর বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে সাইকেল আরোহী নির্মলবাবুকে । এরপর থেকে শুরু হয় নাটক। প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নির্মল মন্ডলকে। সেখান থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় অনাময় সরকারী সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় আবার তাকে দুর্গাপুরে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে তাকে একের পর এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে শুনে কোন হাসপাতাল নির্মল মন্ডলকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত রবিবার ভোর তিনটে নাগাদ মারা যান নির্মল মন্ডল। এরপর উত্তেজিত জনতারা মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, এলাকার ব্যস্ততম রাস্তায় স্পিড ব্রেকার ও ট্রাফিক পুলিশের দাবিতে জব্বরপল্লী রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তৈরি হয় ব্যাপক যানজট। সেই যানজটে আটকে পড়ে সমস্ত যানবাহন। মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভে দেখাতে থাকেন উত্তেজিত জনতারা।দুর্ঘটনাস্থল কোন থানা এলাকায় পড়ে এই নিয়ে শুরু হয় দুর্গাপুর থানা ও ফরিদপুর থানার মধ্যে টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত বেলার দিকে দুই থানার পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ অবরোধ উঠে।