ASANSOL

আসানসোলের উপনির্বাচন ২০২৪ এর সেমিফাইনাল: শত্রুঘ্ন সিনহা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচন ১২ এপ্রিল । তারজন্য একবারে শেষ মুহুর্তে চলছে নির্বাচনী প্রচার। দলের প্রার্থীর সমর্থনে বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষক কমিটির পক্ষ থেকে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যথেষ্ট ভীড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।

এই সভায় তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি বিধান উপাধ্যায়, রাজ্য কমিটির সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু, মাধ্যমিক শিক্ষা কমিটির রাজ্যর চেয়ারম্যান দীপেন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতা সমীর চক্রবর্তী, জয়প্রকাশ মজুমদার, আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জী, ব্লক (১) সভাপতি গুরুদাস ওরফে রকেট চ্যাটার্জি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, এখানে এই প্রথম শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করছি। শিক্ষকদের প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা আছে। আমি যখন লেখাপড়া করতাম, আমি খুব দুষ্টু ছিলাম। অনেকবার শাস্তি পেয়েছি। কলেজের দিনগুলোতেও অনেক দুষ্টুমি করতেন বলেও তিনি জানান । তিনি বলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমি তাঁর দলে যোগ দিয়েছি। বাংলার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। তিনি বাংলা ভাষায় অর্ধেক সময় ধরে ভাষণ দেন।

তিনি বলেন, আসানসোলের এই উপনির্বাচন দেখছে গোটা দেশ, এটা নিয়ে সারা দেশে আলোচনা, এই নির্বাচন আসানসোলের সম্মানের কথা। বিজেপি সরকার এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ বিক্রি করে নিজের ঝুলি ভরছে কিন্তু আসানসোলের মানুষের জন্য কিছুই করছে না। বিগত সিপিএমের আমলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং যেটি কেন্দ্রের অধীনে আছে তাও বিক্রির জন্য প্রস্তুত। এই সব বিক্রি হলে আসানসোলে কি পড়ে থাকবে সে বিষয়ে ভাবতে হবে। রিভার সাইড স্কুলের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। এই নির্বাচন ২৪-এর প্রস্তুতি, এই নির্বাচন একটি সেমিফাইনালের মতো।

দেশের সিংহাসনে বসে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের চেয়ার কাঁপানোর জন্য এই নির্বাচনে জয়ই যথেষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যেভাবে বাংলার উন্নয়ন হচ্ছে, একইভাবে ২৪ বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন হবে। এই মুহূর্তে দেশের সিংহাসনে বসে থাকা সরকার স্বৈরাচারী পরিণত হয়েছে। যা উপড়ে ফেলতে পারেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, বিজেপি শুধু জানে কীভাবে নেতাদের ভয় দেখিয়ে সিবিআইকে ভয় দেখিয়ে ভোট নিতে হয়। বিজেপি প্রার্থীকে কটাক্ষ করেন তিনি।

তিনি বলেন, সে বলে আমি এখানকার মেয়ে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি কোথায় ছিলেন? বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাকে কেউ চিনতেও পারেনি, তিনি কলকাতায় বড় হয়েছেন এবং সেখানেই থেকেছেন। আর এর প্রমাণ তিনি নিজেই দিয়েছেন। নির্বাচনী মনোনয়নের সময় আপনার ঠিকানা কলকাতা বলে দিয়েছেন। সে এত মিথ্যা কিভাবে বলতে পারে? জনগণের সামনে মিথ্যাচার করে এখানে ভোট পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি শিক্ষকদের বলেন, নির্বাচনের দুই-চার দিন বাকি, আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর করা কাজের প্রচার করুন এবং শত্রুঘ্ন সিনহার পক্ষে ভোট দেওয়ার আবেদন করুন। শত্রুঘ্ন সিনহা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন যে তিনি ৪ বার লোকসভায় গিয়েছেন এবং দু’বার ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়েছেন, তিনি সেই ব্যক্তি যিনি বিজেপি সরকারে থাকাকালীন নোট বাতিল এবং জিএসটির বিরোধিতা করেছিলেন। সেই জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন যাতে আসানসোলের কণ্ঠস্বর জোরে জোরে সংসদে বাংলার আওয়াজ তুলতে পারে। অসিত উপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এসটিএ শিক্ষক সংগঠনের শতাধিক শিক্ষক মন্ত্রী মলয় ঘটক ও বিধান উপাধ্যায়ের হাতে তৃণমূলের পতাকা হাতে দলে যোগ দেন। সভা সফল করার জন্য সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় শিক্ষকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *