ASANSOL

Abhishek Banerjee In Asansol : আসানসোলের মেয়ে আসানসোলেই থাক, শত্রুঘ্ন সিনহা দিল্লি যাক

শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে ৪ কিলোমিটারের রোডশো

মূল্যবৃদ্ধি থেকে সিবিআই ইডি, বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে বেনজির আক্রমণ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৯ এপ্রিলঃ (Abhishek Banerjee In Asansol ) আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচার শেষের ঠিক একদিন আগে শনিবার দলের প্রার্থীর সমর্থনে রোডশো করতে আসানসোলে এসে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বেনজির আক্রমণ করলেন তৃনমুল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। জ্বালানি, ঔষুধ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি থেকে সিবিআই ইডি কোনকিছুই বাদ যায়নি তার আক্রমনাত্মক বক্তব্য থেকে।


এদিন বিকেল ঠিক চারটের সময় আসানসোলের জিটি রোডের উষাগ্রাম থেকে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের রোডশো শুরু হয়। হুড খোলা গাড়িতে তার সঙ্গে ছিলেন আসানসোলের তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা, তার স্ত্রী পুনম সিনহা, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যান বন্দোপাধ্যায় ও রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক। দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা শেষে সন্ধ্যা ছটার সময় গীর্জা মোড়ে এসে সেই রোডশো শেষ হয়।


সেই হুড খোলা গাড়িতেই অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখার শুরু থেকেই কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে খড়্গ হস্ত ছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রে সরকার গঠন করেন তখন পেট্রোল ৭০, ডিজেল ৬০, গ্যাস ৪০০, কেরোসিন তেল ৩০ ও সরষের তেল ১০০ টাকা ছিলো। আর মাত্র ৮ বছরে এই গুলোর দাম হয়েছে ১১৬, ১০০, ১০০০, ৭২ ও ২০০ টাকা। এই সরকারের শাসনে সিনেমায় কর নেই। প্যারসিটামলের মতো ওষুধে কর বসানো হয়েছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ১১ বছরে বাংলার মানুষের উপর কোন কিছু বাড়তি কর চাপাননি। কোন জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি লক্ষীর ভান্ডার, সবুজ সাথী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্প নিয়েছেন। এই জনবিরোধী সরকারকে জবাব দেওয়ায় মোক্ষম সুযোগ আসানসোলের মানুষ এই উপনির্বাচনে পেয়েছেন। যা দেশের কোন এলাকার ভোটাররা পাননি।

জানি গরমের মধ্যে মানুষের কষ্ট হবে। তবুও বলছি, আপনারা বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে শত্রুঘ্ন সিনহাকে জিতিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন। অভিষেক বলেন, কেন এই আসানসোলে উপনির্বাচন হচ্ছে জানেন, বহিরাগতরা বাংলার মানুষদের যোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে পারেননা। আপনারা দু-দুবার বাবুল সুপ্রিয়কে জিতিয়েছিলেন। বাবুল সুপ্রিয় তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেন নি, বিজেপির ঐসব নেতাদের জন্য। তা তিনি দল ছেড়ে দিয়েছেন। তারজন্য তাকে ধন্যবাদ যে তিনি তাদের কাছে মেরুদণ্ড বিক্রি করে দেননি। আর তাই বিজেপির ঐসব নেতাদের এতো রাগ। সব জায়গা থেকে এসে নেতা ও মন্ত্রীরা এসে বসে থেকে গনতন্ত্র ও শান্তির নিদান দিয়ে পাঠ পড়াচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে আক্রমণ করেন অভিষেক। সেখানে ভোটে প্রচারে গিয়ে আমি আক্রান্ত হয়েছি। গাড়ি ভাঙা হয়েছে। বলতে গেলে সবাই মার খেয়েছে।

মধ্যপ্রদেশে খবর করার জন্য সাংবাদিকদের কি করা হয়েছে। এরা আবার শান্তির কথা বলে।
তিনি বলেন, বাংলায় এসে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীরা রাজ্যের ঋণের কথা বলছে। উত্তর প্রদেশের ঋণের পরিমান হলো সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকা। বিজেপি শাসিত সব রাজ্যের ঋণের পরিমাণ আকাশ ছোঁয়া। শুধু তাই নয় এখন দেশের ঋণের পরিমাণ কত জানেন? ১৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৪ লক্ষ কোটি। মোদি সরকারের আমলে মাত্র ৮ বছরে দেশের ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১৫৫ কোটি। ভাবুন? শ্রীলঙ্কার ঋণ ছিলো মাত্র সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকা। তারজন্য সেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। তাহলে ভাবুন মোদি সরকার ৮ বছরে দেশের অর্থনীতিকে কোন জায়গায় নিয়ে গেছে। বিজেপির ছোট, বড়, মাঝারি সব নেতাদের এই তথ্য দিয়ে চ্যালেঞ্জ করছি । ক্ষমতা থাকলে প্রতিবাদ করুন। মিথ্যে হলে জেলে যাবো।


তিনি বলেন, মনে রাখবেন আসানসোলের এই উপনির্বাচনের দিকে সারা দেশ তাকিয়ে আছে। বিজেপির প্রতিশ্রুতি হলো ভাঙা অডিও ক্যাসেটের মতো। শুধু শোনা যায়, কিছু দেখা যায় না। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি হলো হাই কোয়ালিটির ডিভিডি। সব কিছু পরিষ্কার শোনা ও দেখা যায়।
একবারে শেষে রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেন, এখনো খেলাই শুরু হয় নি। আসানসোলে জেতার পরে আসল খেলা শুরু হবে। তারপর দরজা খুলে দেবো। তখন দেখবেন। মনে রাখবেন তৃনমুল কংগ্রেস সিপিএম বা কংগ্রেস নয়। একটা সিবিআই ও ইডির চিঠি দিয়ে তৃনমুল কংগ্রেসকে আটকে রাখা যাবেনা। আমরা মেরুদণ্ডহীন নই। আমরা ঘাসফুল। যত কাটবেন, ততো বাড়বে। আসানসোলে এসে দেখলাম, আমাদের স্লোগানও চুরি করা হয়েছে। তাই বলছি, ” আসানসোলের মেয়ে আসানসোলেই থাক “, আর ” শত্রুঘ্ন সিনহা দিল্লি যাক “।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *