ASANSOLBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

মেঘনাদের মত আড়ালে থেকে অন্যতম যোদ্ধার দায়িত্ব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পালন করলেন বিধান

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের কয়েক মাস আগেই পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পদে আচমকাই দলীয় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিলেন বিধান উপাধ্যায়কে। তিনি জানতেন বারাবনি বিধানসভাতে  তৃণমূলের  কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই । আর বিধান উপাধ্যায় সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন ।প্রত্যেককে প্রাপ্য সম্মান দেন ,ভোটার থেকে দলের সর্বোচ্চ নেতা বা নেত্রী পর্যন্ত। সেই বিধান উপাধ্যায় কে ভোটের আগেই আচমকা আসানসোলের মেয়র করলেন দলীয় সুপ্রিমো ।আর ভোট ঘোষণার সাথে সাথেই পাণ্ডবেশ্বর থেকে চিত্তরঞ্জন সমস্ত স্তরের ব্লক ধরে ধরে সভা করলেন তিনি। প্রত্যেককে বোঝালেন এই নির্বাচনে কোথাও কোন বুথে যেন অন্তর্দ্বন্দ্ব কোন রকম প্রভাব না ফেলে। সবারই একজন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সকলেই তৃণমূলের কর্মী।

bidhan upadhyay

প্রতিটি সভায় তিনি বলেছেন যদি আমরা জিততে না পারি তাহলে আমাদের সকলেরই পদচ্যুত হতে হবে। তৃণমূল সবচেয়ে বড় কথা দলের রাজ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেই মন্ত্রি মলয় ঘটক থেকে শুরু করে প্রত্যেক বিধায়ক, জেলা স্তরের নেতা ছাত্র-যুব এবং মহিলা নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে তিনি একের পর এক সভা করেছেন। তাদের পরামর্শ নিয়েছেন এবং একসঙ্গে সবাই মিলে হেঁটেছেন। নির্বাচনী যুদ্ধে  যারা দীর্ঘদিনের প্রবীণ কর্মী বা নেতৃত্ব তারা বলেন মেঘের আড়াল থেকে আসল লড়াই যারা করেছেন তাদের অন্যতম মুখ হচ্ছেন বিধান উপাধ্যায়। তিনি বার্তা দিয়েছেন যেমন উপর মহল কে যে তিনি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলছেন ,সেই বার্তা কিন্তু নিচুস্তরের কর্মী পর্যন্ত পৌঁছেছে। আর তারই ফল তিন লক্ষের বেশি ভোটে তৃণমূলের  জয়।

এর আগে দেশের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী মুনমুন সেন প্রার্থী হয়েছেন  আসানসোলে।তার দুই কন্যা অভিনেত্রী তারাও তার মায়ের হয়ে প্রচার করেছিলেন। সেই সময় তার পরাজয়ের পর দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে প্রকাশ্যে নানান মন্তব্য উঠে এসেছিল ।প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল দেশের অন্যতম শ্রমিকনেত্রী তৃণমূলের  দোলা সেন আসানসোলের লোকসভায় পরাজিত হয়েছিলেন। তার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। পরে রাজ্য নেতৃত্ব একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। 

তৃণমূলের এই জেলার ৭২ বছর বয়সী সবচেয়ে প্রবীণ নেতা প্রবোধ রায় যিনি ক্যাপটেন দা নামে পরিচিত তিনি বলেন আমি কংগ্রেস আমল থেকেই নির্বাচনী বুথে বসা নির্বাচনী এজেন্টের কাজ করেছি। এমনকি তৃণমূলের আমলে সরাসরি নির্বাচনে যে পরিসংখ্যান তথ্য নিয়ে কাজ করা এবং একেবারে জেলা স্তর পর্যন্ত দলের ফলাফল কিভাবে ভালো করা যায় তা নিয়ে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গী হয়েছি।  এবারে অবশ্যই জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায় এবং মন্ত্রি মলয় ঘটকের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বিধান উপাধ্যায় এর বৈশিষ্ট্য তিনি সব সময় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারেন এবং চলেছেন ।তার এই মানসিকতা সবাইকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছিল ।আর তৃণমূলের  রাজ্যের পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেয়া মলয় ঘটক তিনিও সব সময় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। দলের রাজ্য সম্পাদক এবং তিন তিনবারের জেলা সভাপতি  ভি শিব দাসন দাশু বলেন বিধানের সবচেয়ে বড় গুণ জেলা সভাপতি হয়ে কারোর  মাথায়  চেপে না বসা।সে একসঙ্গে সবাইকে নিয়ে চলতে চায়। এইজন্য সে সকলের যেমন সহযোগিতা পেয়েছে তেমনি সেও আমি এবং মলয়দা সর্বত্র ছুটে গেছি প্রত্যেকের তৈরি হওয়া সমস্যা মেটাতে।

 রানীগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন এটা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য আমরা অতীতে দেখেছি যিনি জেলা সভাপতি হয়েছেন তাদের অনেকেই আলাদা আলাদা করে কিছু করার কথা ভেবেছেন । কোথাও কোথাও কেউ কেউ তার লোক কেউ কেউ অন্যের লোক হয়েছিলেন। বিধানের ক্ষেত্রে অবশ্যই এটা বলা যাবে না। বিধান সবার এবং সকলেরই বিধান ।তবে এত বিপুল ভোটে জেতার অনেক কারণের মধ্যে আরো অনেক কারণ আছে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দলীয় সুপ্রিমো জানেন কোথায় কাকে কখন বসাতে হয় এবং কিভাবে কাজ নিতে হয়। তার ফলশ্রুতিতে হলো এই বিশাল জয়। এই বিষয়ে বিধান সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেন আমাকে দিদি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন যে দায়িত্ব দিয়েছেন বা দেবেন আমি সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব ।আর আমি সাধারণত গ্রামের ছেলে। আমরা প্রতিটি মানুষকেই আমাদের পরিবারের মানুষ বলে মনে করি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার আনন্দই আলাদা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *