RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জের বার্নস কোম্পানির আবাসন এলাকা ও জমির মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নোটিস পাঠাল রেল

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ: ( Asansol Raniganj News Today ) রেলের অধিগ্রহণের কয়েক বছর পর এবার রানীগঞ্জের খনি অঞ্চল এলাকায় বার্নস কোম্পানির আবাসন এলাকা ও তার জমির মধ্যে থাকা এলাকাগুলিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের প্রথম পর্যায়ের নোটিস পাঠাল ইস্টার্ন রেল ডিভিশনের আসানসোল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর। মঙ্গলবার প্রথম পর্যায়ে এই নোটিশ পাওয়ার পরপরই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত প্রথম দফায় রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর 117 জন বাসিন্দার হাতে রেলের নোটিশ তুলে দেন, তাদের লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় আগামী চৌঠা মে পর্যন্ত কারোর কোন অভিযোগ বা আপত্তি থাকে তারা নির্দিষ্ট অভিযোগ বা আপত্তি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের আপত্তি গুলিকে জানান দিতে পারবেন।

মঙ্গল ও বুধবার এলাকার বহু পরিবারের সদস্যরা এ ধরনের নোটিশ পাওয়ার পরপরই আতঙ্কে শিউরে ওঠেন। এদিন এলাকার পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি মহিলা সদস্যরা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের যাওয়ার পরপরই তাদেরকে ঘিরে ধরে নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা জানান তিনি দাবি করেন এখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হলে তারা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ির প্রবীণ সদস্যরা বার্নস কোম্পানির কারখানায় কাজে নিয়োজিত থাকার পর হঠাৎ করেই বার্নস কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ঐ সকল অঞ্চলে বসবাস করে কোন রকম ভাবে দিনমজুরের কাজ করে নিজেদের ঘর সংসার চালাচ্ছেন আর এবার করোনার আবহও কাটতে না কাটতেই নির্বাচনের পরপরই হঠাৎ করে তাদের এ ধরনের নোটিশ ধরিয়ে দেয়ায় তারা এখন হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।

বার্নস কোম্পানির মধ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন বাসিন্দাদের দাবি তারা কেউ 30 বছর ধরে কেউ বা তারও বেশি সময় ধরে সেখানে বসবাস করে কোন রকম ভাবে অল্প একটু কাজকর্ম পেয়ে নিজেদের দিন গুজরান করছেন আর এরই মধ্যেই তাদের হঠাৎ করে বসবাসযোগ্য বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানো হয় তাদের মাথায় যেন বাজ পড়েছে। এলাকার মহিলাদের দাবি এভাবে তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হলে তারা এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে ও নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রেললাইনে গিয়ে আত্মহত্যা করবেন, এছাড়া তাদের কোনো বিকল্প পথ নেই বলেই দাবি করেছেন তারা। অনেকেই এদিন দাবি করেন তাদের উচ্ছেদ এর বিষয় নিয়ে অবিলম্বে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তাদের দাবি অসহায় মানুষেরা এবার নিজের বসবাসের জায়গা টুকুর না পেলে কোথায় তারা দিন গুজরান করবেন, বুধবার এই সকল দাবী দাওয়া করে তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কাছে তাদের যেন স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবন্দোবস্ত করা হয় তার আর্জি জানিয়েছেন তাদের বক্তব্যে।

যদিও ইস্টার্ন রেলওয়ে আইও ডাবলুর ইঞ্জিনিয়ারেরা এদিন জানিয়ে দিয়েছেন বার্নস কোম্পানির সমস্ত এলাকাকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ হস্তান্তরিত করেছেন, যে কারণে 2021 সাল থেকেই এই হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলার পর তারা এবার বার্নসের যেসকল জায়গা রয়েছে সেই সমস্ত এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের নোটিশ পাঠাচ্ছেন, তাদের দাবি কারোর যদি কোনো আপত্তি থাকে তাহলে তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের আপত্তির বিষয়গুলি জানিয়ে দেবেন, এর জন্য তারা প্রাথমিক পর্যায়ে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন, বলেই জানান রেলের ইঞ্জিনিয়ার বাবলু কুমার। উল্লেখ্য রানীগঞ্জের কুমোর বাজার, এলাকা থেকে শুরু করে গির্জা পাড়া, কাঠ গাদা, রানীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন হাট বাজার এলাকা, চীন কুঠি মোড় এলাকা, সহ বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে বার্নস কোম্পানির বিশাল পরিমাণ জমি জমা, আর এই সকল এলাকায় বার্নসের কলকারখানা থাকার সাথেই রয়েছে বিশাল এলাকা জুড়ে বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন ধরনের আবাসন।

আর এই সকল আবাসন গুলিতে বার্নস কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও বসবাস করে আসছেন সেখানের কর্মী থেকে শুরু করে অসংখ্য মানুষ, বেশ কয়েক দফায় এই বার্নস কোম্পানি খোলার জন্য আন্দোলনের বিষয়ে লক্ষ্য করা গেলেও, ইদানীংকালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বার্নস কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করার পর, প্রথম পর্যায়ে তারা তাদের জমি চিহ্নিতকরণের জন্য ই আর অর্থাৎ “ইস্টার্ন রেলওয়ে” লিখে দিকে দিকে তাদের জমি গুলি চিহ্নিতকরণের কাজ করেছেন, কয়েক মাস আগেই। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে এই নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর এলাকার মানুষ পড়েছেন অস্বস্তিতে। এখন দেখার কিভাবে তারা তাদের বসবাসের আবাসটুকু রক্ষা করতে পারেন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *