উপনির্বাচন মিটতেই তৎপর রেল, ডিভিশন জুড়ে একাধিক জায়গায় বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদের নোটিশ
সাতদিনের সময়সীমা, বিরোধীতায় তৃনমুল
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৭ এপ্রিলঃ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পালা মিটতেই পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি দখলদারদের সরাতে তৎপর হলো রেল। বলা ভালো যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে হাতিয়ার করে এবার একবারে কোমর বেঁধে নেমেছে রেল।
জানা গেছে, পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের মগমা, কুমারডুবি থেকে কুলটি স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে কেন্দুয়া বাজার, বরাকরের বালতোড়িয়া ও করিমডাঙ্গা, আসানসোলের রেলপারের চাঁদমারি ও আশপাশের এলাকা ও রানিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেল কোয়ার্টার দখল করা হয়েছে। এমনকি রেলের জমি ঝুপড়ি যেমন করা হয়েছে, তেমনি অনেক এলাকায় পাকা বাড়ি ও দোকান তৈরী করা হয়েছে। সবমিলিয়ে সংখ্যাটা ৪ হাজারেরও বেশি বলে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের এক আধিকারিক জানান।
পূর্ব রেলের আসানসোল দূর্গাপুর আরপিএফের সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বেআইনি দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাতে ৭ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে সরে না গেলে আইন মতো উচ্ছেদ করা হবে। তিনি আরো বলেন, সবমিলিয়ে বেআইনী দখলদারদের সংখ্যাটা ৪ হাজারেরও বেশি। রেলের এস্টেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে এই নোটিশ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ইতিমধ্যেই বেশকিছু এলাকায় রেলের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় বুধবার দেওয়া হয়। বাকি জায়গায় আগামী এক/দুদিনের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে।
কুলটির কেন্দুয়া বাজার এলাকায় এমন অনেক দোকান আছে, যেগুলি রেলের জমিতে করা হয়েছে। তেমনই এক দোকানদার মহঃ আলাউজ বলেন, ৩০/৪০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। এমন নোটিশ আগে পাইনি। বুঝতে পারছি না, কি করবো।
অন্যদিকে, রেলের এই তৎপরতায় রাজনৈতিক কারণ দেখছে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস। পাশাপাশি তারা রেলের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বিরোধিতা করবে বলে জানিয়েছে।
আসানসোল রেলপারের চাঁদমারি এলাকার তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর সিকে রেশমা বলেন, এর আগে রেল এমন নোটিশ দিয়েছিলো। আমরা এলাকায় গিয়ে তার বিরোধিতা করি। এবার আমরা এই ক্ষেত্রে কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও এটা মনে রাখতে হবে, রাজ্যে পুনর্বাসন প্রকল্প ছাড়া কাউকে কাউকে উচ্ছেদ করা যায়না। এটা সরকারি নিয়ম।
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক এর পেছনে রাজনীতি দেখছেন। তিনি বলেন, বিজেপি ভোটের সময় এমনভাবেই ভোটারদের ভয় দেখানো জন্য কেন্দ্র সরকারের মাধ্যমে নোটিশ পাঠায়। এবার আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপি খুব খারাপ ভাবে হেরেছে। তাই তারা ভেবেছে এখানে ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। সেই কারণে এই পদক্ষেপ। আমরা দলগতভাবে যা করার করবো।