ASANSOL

আসানসোলে যমজ মেয়েদেরকে নিতে এসে স্কুলের সামনে দূর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগে মৃতদেহ নিয়ে পুলিশ পোস্টে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ২৯ এপ্রিলঃ ( Asansol News In Bengali )যমজ মেয়েদেরকে স্কুল থেকে নিতে এসে মর্মান্তিক এক পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যু হলো মায়ের। শুক্রবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার জিটি রোডের সেন্ট মেরী গরেটি স্কুলের সামনে। আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের শান্তিনগর মেন রোডের বাসিন্দা মৃত মহিলার নাম বেবি সাউ ( ২৭)। এই ঘটনা কি ভাবে ঘটেছে,তা নিয়ে সঠিক কোন তথ্য পুলিশ প্রশাসন দিতে না পারায় মৃত মহিলার পরিবারের সদস্য, আত্মীয় পরিজন থেকে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

তারা দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে, মৃতদেহ নিয়ে চলে আসেন আসানসোলের জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় সংলগ্ন আসানসোল দক্ষিণ পুলিশ পোস্টে। সেখানে মৃতদেহ রেখে, পুলিশ পোষ্ট ঘেরাও করে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ও ঠিক কি ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘক্ষন ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশ পোস্ট চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ দাবি মতো ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।


জানা গেছে, হিরাপুর থানার বার্ণপুরের শান্তিনগর মেন রোডের বাসিন্দা বার্ণপুর ডেইলি মার্কেটের ব্যবসায়ী মুকেশ কুমার সাই অন্যদিনের মতো শুক্রবার সকালে আসানসোলের জিটি রোডের সেন্ট মেরী গরেটি হাইস্কুলে যমজ মেয়েদের দিয়ে যান। সকাল দশটা নাগাদ মুকেশ কুমারের স্ত্রী অন্যদিনের মতো মেয়েদের নিতে আসেন। স্কুলের সামনে বাস থেকে নেমে তিনি রাস্তা পার করছিলেন। সেই সময় তাকে একটি মোটরবাইক ধাক্কা মারলে তিনি জিটি রোডের উপর পড়ে যান। তখন একটি মিনিবাস পেছন থেকে তার শরীরে উপর দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ আসে। গুরুতর জখম অবস্থায় বেবী সাউকে একটি টোটোয় চাপিয়ে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে মুকেশ কুমার সাউ জেলা হাসপাতালে আসেন।


বেবী সাউয়ের মৃতদেহ নিয়ে আসানসোল দক্ষিণ পুলিশ পোস্টে বিক্ষোভ দেখানো পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা বলেন, পুলিশ এলাকায় গিয়ে তাকে জেলা হাসপাতালে পাঠালো, আর আমাদের কাছে জানতে চাইছে কি হয়েছিলো? আমরা কি করে জানবো? সেটা তো পুলিশ জানবে। পুলিশের কি দায়িত্ব মৃত্যু হলে পরিবারকে জানানো ও যত তাড়াতাড়ি মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা? এই মহিলার দুই মেয়ে ও তার পরিবারের কি হবে? তারা দাবি করেন, এই ঘটনা কি করে হয়েছে তার তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ঐ এলাকায় স্কুল শুরু ও ছুটির সময় ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। তাদের দাবি, ঐ এলাকায় ট্রাফিক আইন সঠিক না থাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, ঘাতক বাসটিকে পরে আটক করা হয়েছে। দূর্ঘটনা ঠিক করে হয়েছে তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
যদিও জানা গেছে, এই ঘটনার প্রতিবাদে স্কুলের অভিভাবকরা স্কুলের সামনে জিটি রোড অবরোধের ডাক দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *