আসানসোলে লাইফলাইন মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : ( Multi Speciality Hospital In Asansol ) শিল্পাঞ্চলের মানুষকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য শীঘ্রই একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি হতে চলেছে। প্রস্তাবিত ৭৫০ শয্যা বিশিষ্ট লাইফ লাইন মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল কলেজ এবং নার্সিং ট্রেনিং কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর রবিবার স্থাপন করা হয়। রাজ্যের আইন ও পূর্ত মন্ত্রী মলয় ঘটক, এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস ব্যানার্জি,জামুরিয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জি এবং লাইফলাইন মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: জয়ন্ত ভট্টাচার্য, যৌথভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্থপতি ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী হরিনারায়ন মিশ্র,
রাজা গোস্বামী, শেখ শানদার, কল্যাণী রায়, অভিমন্যু বসু ছাড়াও আরো অনেক অতিথি ও সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গ।
এ বিষয়ে রাজ্যের আইন ও পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, এতদিন আসানসোলে মানুষের চিকিৎসার কোনো গুরুতর সমস্যা হলে কাছাকাছি দুর্গাপুর কিংবা কলকাতা যেতে হতো। সেভাবে বিশেষ পরিষেবা পাওয়া যেতনা। কিন্তু এই হাসপাতাল হওয়ার ফলে সেই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, আসানসোল শিল্পাঞ্চলকে ভারতের রূঢ় বলা হতো একসময় কারণ ভারতবর্ষের সবচেয়ে শিল্পোন্নত শহর গুলির মধ্যে আসানসোল কে মান্যতা দেওয়া হতো । কিন্তু দীর্ঘ ত্রিশ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে আস্তে আস্তে আসানসোলে একের পর এক কারখানা এবং শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে আসানসোলের সাইকেল ফ্যাক্টরি অর্থাৎ সেনরালে লিমিটেড ছাড়াও গ্লাস ফ্যাক্টরি সমেত অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছবি বদলাতে শুরু করেছে। এবার পুরোনো সম্মান ফিরে পাওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে এই শহর। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা পরিষেবা তলানিতে এসে পৌঁছেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর আসানসোলের মহকুমা হাসপাতালকে জেলা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। একটি শহর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে যখন সেই শহরে বিভিন্ন মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় । ইতিমধ্যেই দুটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে। বর্তমানে এই হাসপাতাল হবার ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অর্থনীতিও মজবুত হবে শিল্পাঞ্চলের।পাশাপশি তিনি এই প্রচেষ্টার জন্য হাসপাতালের ডা: জয়ন্ত কুমার ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ জানান।
রানীগঞ্জের বিধায়ক ও এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন আশাকরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্ত বৈধ নথি নিয়েই এই মহান উদ্যোগে এগিয়েছেন। প্রশাসন সহযোগিতার জন্য থাকবে।
লাইফলাইন মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের তরফে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ জয়ন্ত কুমার ভট্টাচার্য বলেন,খুব শীঘ্রই নিঘা এলাকায় একটি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হতে চলেছে।
অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত প্রস্তাবিত এই হাসপাতালে ৭৫০ শয্যার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রথম পর্যায়ে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।এই হাসপাতালে হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, স্নায়বিক সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করার পরিকাঠামো হবে। AIIMS-এর মতো সুপরিচিত হাসপাতাল থেকে ডাক্তারদের এখানে আনা হবে যারা এখানে রোগীদের সার্বক্ষণিক পরিষেবা দেবে। লাইফ লাইন মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধাও পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি এখানে একটি প্যারামেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং ট্রেনিং কলেজও নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি। নার্সিং ট্রেনিং কলেজে ৩ বছরের প্রশিক্ষণ দিয়ে নার্সদের প্রস্তুত করা হবে। সরকার স্বীকৃত কোর্স এখানে পড়ানো হবে। ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে এই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হবে তিনি জানান ।