ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

মাধ্যমিকে যুগ্মভাবে তৃতীয় আসানসোলের অনন্যা দাসগুপ্ত, লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ করোনার পরে এবারই প্রথম অফলাইনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর তাতেই রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা। এই জেলার অন্যতম নামজাদা আসানসোল উমারানি গরাই মহিলা কল্যান স্কুলের হাত ধরে শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন পালক জুড়লো। রানিগঞ্জের গীর্জা পাড়ার রহমত নগরের বাসিন্দা এই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অনন্যা দাসগুপ্ত তৃতীয় স্থান দখল করলো। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। সে আপাততঃ এই স্কুলেই বিঞ্জান নিয়ে পড়বে। বাবা ও মায়ের একমাত্র সন্তান অনন্যার লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।

সে প্রথম ভাষা বাংলায় পেয়েছে ৯৯ ইংরেজিতে ৯৬, অংকে ১০০, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, জীবন বিজ্ঞানে ১০০, ইতিহাসে ৯৮ ও ভূগোলে ১০০। অনন্যার এই রেজাল্টে স্বভাবতই খুশি তার স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা পাপড়ি বন্দোপাধ্যায় থেকে স্কুলের সব শিক্ষিকা, শিক্ষা কর্মী ও সহপাঠীরা। যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেননা, এর আগে এই স্কুল কোনদিন এমন রেজাল্ট করেনি। ২০২০ সালের মাধ্যমিকে এই স্কুলের এক পড়ুয়া নবম হয়েছিলো। পাপড়ি বন্দোপাধ্যায় বলেন, বলা যেতে এটা এখনো পর্যন্ত সর্বকালের সেরা ফল। সত্যি আমাদের গর্ব হচ্ছে। অনন্যার জন্য সবাই আমাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। ও আমাদের মুখ উজ্জ্বল করল। এই স্কুলের পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সভাপতি, অনন্যা যে শহরে থাকেন সেই রানিগঞ্জের বিধায়ক আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায়ও তাকে আলাদা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।


মৃদুভাষী বা অল্প কথা অনন্যা আসানসোল উমারানি গড়াই মহিলা কল্যাণ গার্লস হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়াশোনা করছে। এতদিন স্কুলের পরীক্ষায় এক থেকে তিনের মধ্যে না থাকলেও, ভালো রেজাল্ট সে বরাবরই করেছে। তার গৃহশিক্ষক শিক্ষক বলতে ছিলেন চারজন। বাবার কাছ থেকে সে আলাদাভাবে অংকের জন্য সাহায্য পেতো। স্কুলের শিক্ষিকারও তাকে খুব সাহায্য করেছে। বাবা সুব্রত দাসগুপ্ত রানিগঞ্জের বল্লভপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা তনুশ্রী দাসগুপ্ত গৃহবধূ।


করোনা মহামারীর সময় পার করে এতো ভালো রেজাল্ট হবে বলে ভাবতেই পারেনি অনন্যা। সে বলে, আশা করেছিলাম ১ থেকে ১০ র মধ্যে থাকবো। তৃতীয় হবো ভাবিনি। আইআইটি ও জয়েন্ট দেবো। ইচ্ছে আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তার কথায় অধ্যাবসায় ও পড়াশোনা করার জন্যই তার এই ফল। আমার মতে, আগামী দিনে যারা মাধ্যমিক দেবে, তারাও এইভাবে পড়াশোনা করলে সাফল্য পাবে। অনন্যার হবি বা শখ হলো, বই পড়া। তাও আবার গোয়েন্দার। পড়াশোনার সঙ্গে একটু টিভি দেখার নেশা আছে অনন্যার। সব খাবারই খেতে ভালো লাগে অনন্যার। তবে মা ও জ্যাঠাইমার হাতের রান্না হলে তো কথাই নেই। অনন্যা জানায়, করোনা আমাদের পড়ায় খুব প্রভাব ফেলেছে। সেই সময় অনলাইনে পড়াশোনা হলেও, স্কুল আসতে না পারাটা খুব খারাপ ছিলো। যতই হোক স্কুলের আলাদা একটা স্বাদ আছে।


এদিন দুপুরে স্কুলের মার্কশীট নিতে অনন্যা সঙ্গে নিয়ে আসে বাবা, মা ও জ্যাঠতুতো দিদি অর্পিতা দাসগুপ্তকে। তিনজনই খুব খুশি। তারা বলেন, ও যে এত ভালো রেজাল্ট করবে ভাবিনি। সুব্রতবাবু বলেন, মেয়ে যা পড়তে চায় তাই পড়ানো।
অনন্যা সহ এই স্কুল থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলো ১৯১ জন। সবাই পাশ করেছে। এই স্কুলের আরো দুই পড়ুয়া দ্যুতি বন্দোপাধ্যায় ও ঈশিতা মাজি ৬৭৮ নম্বর পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *