ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

জামুড়িয়ায় ৭ মাস আগে ইসিএলের কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনা, ধৃত দুজনের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৯ জুনঃ ৭ মাস আগে এক ইসিএল কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটেছিলো। সেই ঘটনায় তদন্ত করতে নেমে আসানসোলের জামুড়িয়া থানার পুলিশ বুধবার দুজনকে গ্রেফতার করলো। পুলিশের দাবি, ধৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করায় খুনের রহস্য বেরিয়েছে ও ঘটনার কিনারা হয়েছে। ধৃতরা হলো রানিগঞ্জ থানার রতিবাটি ৪০ নং ধাওড়ার উমেশ ভুঁইয়া ও ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার ভুলি থানার চারতল্লার বিএল কলোনির সাগর ভুঁইয়া। ধৃত সাগর সম্পর্কে উমেশ ভুঁইয়ার ভাগ্নে।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর রাত নটা থেকে সাড়ে নটার মধ্যে বছর ৫৭ ইসিএলের কর্মী রানিগঞ্জ থানার চাঁপুই সাওয়ার বাসিন্দা মদন বাউরিকে মোটরসাইকেলে করে আসা দূষ্কৃতিরা গুলি করেছিল। সেই সময় তিনি জামুড়িয়া থানার চাঁদা মোড়ের কাছে মন্ডল মাংসের দোকানে বসেছিলেন। এরপর নিহত ইসিএল কর্মীর ভাই অমর বাউরি জামুড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জামুরিয়া থানার পুলিশ খুনের মামলা ( নং-৪৯৪/২০২১, তারিখ- ২৪/ ১১/ ২০২১, আইপিসি – ৩০২ নং ও অস্ত্র আইন ২৫/২৭ নং) তদন্ত শুরু করে।


টানা ৬ মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করার পরে এই ঘটনায় সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের খোঁজ পুলিশ পায়। সেই মতো বুধবার রাতে জামুড়িয়া থানার পুলিশ গোপন সূত্রের রানিগঞ্জ থানার রতিবাটি ৪০ নং ধাওড়ায় অভিযান চালিয়ে উমেশ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বুধবারই পুলিশ ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার ভুলি থানার চারতল্লার বিএল কলোনিতে গিয়ে সম্পর্কে উমেশের ভাগ্নে সাগর ভূঁইয়া (২২)কে ধরে। পুলিশের জেরায় তারা দোষ স্বীকার করে। গ্রেফতার করা দুজনকে ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আদালতে পাঠায়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।


জামুরিয়া থানা পুলিশ তদন্তে জানতে পারে যে , মৃত মদন বাউরি ইসিএলের চাঁপুই কোলিয়ারির কর্মী ছিলেন। সেই কোলিয়ারিতেই চাকরি করতেন উমেশ ভুঁইয়াও। কোলিয়ারিতে চাকরি করার পাশাপাশি মদন বাউরি চড়া সুদে টাকা ধার দিতেন। অনেকেই সুদের বিনিময়ে টাকা ধার নিতো মদনের কাছ থেকে। পুলিশ জানায়, সেই মতো মদন বাউরির কাছ থেকে উমেশ ভুঁইয়া সুদে টাকা নিয়েছিলো। সুদের পরিমান এতোটাই বেশি ছিলো যে, উমেশের সেই টাকার পরিমাণ ১৪ লক্ষ টাকা হয়। সেই টাকা দিতে যাতে না হয়, তারজন্য উমেশ মদনকে মারার পরিকল্পনা করে। তা সে নিজের ভাগ্নে সাগরকে জানায়। সাগর সেই মতো একজন শুটার ঠিক করে। এরপর সেই শুটারকে এনে পরিকল্পনা মতো মদনকে খুন করা হয় বলে পুলিশের দাবি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি (সেন্ট্রাল) তথাগত পান্ডে বলেন, সুদের টাকা নিয়ে গন্ডগোলেই এই ঘটনা। ধৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করেছে। যে শুটার এখনো ফেরার রয়েছে, তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *