বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আসানসোল ইসকনের ১৩ বছরের রথযাত্রা
যোগ দিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে জনপ্রতিনিধিরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ( ISKCON RATHYATRA IN ASANSOL ) রথের দড়িতে টান পড়ে, সামান্য এগোতেই শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি চললো এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে। আর সেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে, জলে ভিজে আসানসোল ইসকনের রথের দড়ি টানলেন অগণিত ভক্ত।
শুক্রবার বিকেলে এমনই দৃশ্য দেখা গেলো আসানসোল শহরে। এই বছর আসানসোল ইসকনের রথযাত্রা পড়লো ১৩ বছরে।
এদিন ঠিক বিকেল সাড়ে তিনটের সময় আসানসোলের এসবি গরাই রোডের বুধা ময়দানের অদূরে বেনিমাধব নগরের পুরনো ইসকনের মন্দির থেকে ১৩ বছরের ইসকনের রথযাত্রা শুরু হয়। দড়ি টেনে ও পুজো অর্চনার মধ্যে দিয়ে শুভ সূচনা করেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক ও আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। উপস্থিত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক, পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সহ বিশিষ্টজনেরা। কিন্তু সেই রথযাত্রা এসবি গরাই রোড হয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালের দিকে এগোতেই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। কিন্তু সেই বৃষ্টি ইসকনের ভক্তদের কিছু করতে পারেনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ভক্তদের দড়ির টানে এগোতে থাকে রথ।
এই বছর নতুন করে আসানসোল ইসকনের রথ তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই সন্ধের পর এসবি গরাই রোড, জিটি রোড, বিএনআর, আসানসোল কোর্ট বাজার হয়ে বুধা ময়দানে সেই রথ এসে পৌঁছায়। এই বুধা ময়দানেই জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রা রথ সহ থাকবেন। এখানেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মাসির বাড়ি। আগামী ৯ জুলাই এই বুধা ময়দানে রথ থাকবে। প্রতিদিন এখানে হবে মেলা ও নানা ধরনের অনুষ্ঠান। হবে প্রসাদ বিতরণও। ৯ জুলাই উল্টো রথের দিন আবার শোভাযাত্রা বেরোবো এবং এই রথেই জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রা ইসকন মন্দিরে ফিরে যাবেন।
সাংসদ হওয়ার পরে প্রথমবার আসানসোল শহরে ইসকনের রথযাত্রায় সামিল হয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত হন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি বলেন, খুব ভালো লাগছে। আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, আসানসোলের সব মানুষ যেনো ভালো রাখেন। কোন বিভেদ যেন না থাকে। সবাই যেনো একসঙ্গে থাকেন। এদিন তার কাছ থেকে , বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা। কিন্তু সাংসদ বলেন, কোন রাজনৈতিক প্রশ্ন নয়, ” খামোশ “।
এদিন, আসানসোল শহরের পাশাপাশি বার্ণপুর, বারাবনি, কুলটি, বরাকর, রুপনারায়নপুর সহ গোটা শিল্পাঞ্চলে রথযাত্রা পালিত হয়। তবে, বৃষ্টির জন্য রথযাত্রার আনন্দ কিছুটা হলেও, মাটি হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
নিয়ামতপুরে আদিবাসী মন্ত্রে রথযাত্রা উৎসব পালন হল, রূপনারায়ণপুরে উদ্বোধন করলেন বিধায়ক
কাজল মিত্র :-পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি বিধানসভা অন্তর্গত নিয়ামতপুরের সিংরায় বাবার আশ্রমে আদিবাসী মন্ত্রে ধুমধামে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হলো।শুক্রবার এই উপলক্ষে বহু আদিবাসী ভক্তের সমাগম হয়েছিলো।এই প্রসঙ্গে আগত ভক্তরা বলেন সিংরায় বাবার আশ্রমে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও ধুমধামে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হল।আদিবাসী মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে রথযাত্রা উপলক্ষে পুজো ও অর্চনা করা হয়েছে।এদিন আশ্রমে সমস্ত দেব দেবীর পাশাপাশি নিজেদের স্বামীদেরও পুজো করলেন স্ত্রীরা।সব মিলিয়ে ধুমধামে পালিত হলো রথযাত্রা উৎসব। রূপনারায়ণপুরে মা মুক্তাঈচণ্ডী মন্দিরের কাছে রথযাত্রা উদ্বোধন করলেন বিধায়ক ও আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্য়ায়। এখানে রথযাত্রায় মানুষের ঢল নামে।