রানিগঞ্জের নির্মীয়মাণ মার্কেট কমপ্লেক্স নিয়ে তরজা
চৈতালি তেওয়ারির তোলা অভিযোগে পাল্টা জবাব পুর চেয়ারম্যানের, মেয়রকে চিঠি কংগ্রেস কাউন্সিলারের
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়: ( Asansol News Today In Bangla ) আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের রানিগঞ্জে অবস্থিত ব্লুচিপের বিতর্কিত মার্কেটিং কমপ্লেক্স নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চলের রাজনীতি। একদিকে বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি ১০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে, গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর গোলাম সরোবর।
এই বিষয়ে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জি সোমবার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আলোচনা হলে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন এবং কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারির তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন।




প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত রবিবার কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে রানিগঞ্জে ব্লু চিপ কোম্পানি এবং আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি তার বন্ধুর কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করার অভিযোগ করেন। এর পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে অমরনাথ চ্যাটার্জী বলেন, আসানসোলে বিজেপির নেতাদের মধ্যে শিক্ষার অভাব রয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, যে ব্লু চিপ কোম্পানির কথা বলা হচ্ছে সেটি ১৯৯৬ সালে যখন রানিগঞ্জ একটি পৃথক মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ছিল এবং এর রাশ তৎকালীন বামফ্রন্টের হাতে ছিল। তিনি বলেন যে ১৯৯৬ সালে এই চুক্তি হয় যা নিয়ে এখনও ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়।
অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন যে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি করতে হবে। ফলে আদালতের নির্দেশমত আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার, সচিব এবং আইনজীবীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যাতে বলা হয়েছে যে বিল্ডিং তৈরি করা হবে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সেটির ৩০ শতাংশ নেবে এবং আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এর জন্য কোনও অর্থ দেবে না। যেখানে আগে কর্পোরেশনকে ৪ কোটি টাকা দেবার কথা ছিল, তার পরিবর্তে ৪০ শতাংশ পাওয়ার কথা ছিল।
তিনি বলেন, এটি শুধু একটি প্রস্তাব যা বোর্ড মিটিংয়ে পাস করতে হবে, এতে তার কোনো হাত নেই, ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বোর্ড মিটিংয়ে এই প্রস্তাব পাস হলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন যে বোর্ড মিটিংয়ে এই খসড়া পাস হলে এটি চূড়ান্ত হবে এমন নয়। কারণ তারপর এটি ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে হবে এবং যদি বিচারকদের দ্বারা সেটি অনুমোদন পায় তবেই চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি চৈতালি তিওয়ারিকে কটাক্ষ করে অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, হয় তার এই ব্যাপারে সবকিছু জানা নেই বা অন্যান্য বিজেপি নেতাদের মতো তার শিক্ষার অভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, আজকের দিনে চৈতালি তিওয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, কিন্তু তিনি হয়তো ভুলে গেছেন যে তাঁর স্বামী যখন মেয়র ছিলেন, তখন তিনি এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যার ফলে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে এখনও ভুগতে হচ্ছে। সিমোকো, কেলট্রন ইত্যাদি অনেক উদাহরণ রয়েছে যা প্রমাণ করে কিভাবে তৎকালীন মেয়র তার আমলে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি প্রাক্তন মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ শানিয়ে বলেন, বর্তমান সময়ে প্রতিটি কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে করা হচ্ছে, অথচ প্রাক্তন মেয়রের আমলে টেন্ডার ছাড়াই মৌখিকভাবে কাজ বন্টন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এলাকায় যে পার্কিং চলছে তাও বর্তমানে টেন্ডার ছাড়াই চলছে, তবে টেন্ডারের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং যিনি সর্বোচ্চ দর করবেন তাকে পার্কিংয়ের অধিকার দেওয়া হবে। এসবে
আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কোনও আধিকারিকের হাত নেই । এই সমস্ত করা হচ্ছে অত্যন্ত স্বচ্ছ পদ্ধতিতে কিন্তু বিজেপি নেতারা এটা বুঝবে না কারণ তারা শুধু জানে কিভাবে দেশে অস্থিরতা ছড়াতে জানেন। ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি হার চরমে কিন্তু এসবের প্রতি বিজেপির কোন মনোযোগ নেই, তারা শুধু অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন জিনিস দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়।