বুধবার মন্ত্রিসভায় রদবদল, ৭ টি নতুন জেলার ঘোষণা, মোট জেলার সংখ্যা হবে ৩০
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : বুধবার বিকেলে রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে চলেছে। সোমবার বিকেলে নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মমতা। সেখানে তিনি জানান, মন্ত্রিসভায় রদবদল হচ্ছে। বুধবার তিনি একটি ‘ছোট রদবদল’ করবেন। সেখানে শূন্য থাকা দপ্তরগুলির দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। কিন্তু একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, তিনি কিছু মন্ত্রীকে দলীয় কাজে ব্যবহার করতে চান। সেক্ষেত্রে ওই মন্ত্রীদের মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।




সোমবার নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে দুপুর সাড়ে ১২টায় মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে । বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এলে তাকে প্রশ্ন করা হয় মন্ত্রিসভায় রদবদল হয়েছে কি না। কারণ তখন পর্যন্ত রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা সোমবারই মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেন। এমনকি নতুন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাব্য তালিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সম্ভাব্য মন্ত্রী হিসেবে সেই আলোচনায় উঠেছিল বাবুল সুপ্রিয় এমনকি পার্থ ভৌমিকের নামও। মমতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। কারণ এতগুলো দপ্তরের ভার একা তার পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। কিন্তু সোমবারের বৈঠকে সেই পরিবর্তন হয়নি। মমতা বলেন, “আজ না হলেও কাল একটা ছোট পরিবর্তন করব।”
বস্তুত, মমতা এটাও স্পষ্ট করেছেন যে তাঁর মন্ত্রিসভায় রদবদলের জল্পনা সঠিক নয়। তিনি মন্ত্রিসভায় সামান্য রদবদল করবেন। যদিও এই রদবদলে কে স্থান পাবে আর কে পাবে না, কেউ মন্ত্রিত্ব পাবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি মমতা।তিনি বলেন, “চার থেকে পাঁচজনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিছু মন্ত্রীকে দলীয় কাজে ব্যবহার করা হবে।”
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকার পরে, এটি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। যেহেতু পার্থ চ্যাটার্জিকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের পর এটিই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক, তাই এই বৈঠকে বড় ধরনের পরিবর্তন হতে পারে বলে অনুমান করেছেন অনেকে। জল্পনার কারণ অবশ্য মমতার একটি মন্তব্য। কারণ গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর চারটি দপ্তর থেকে মুক্ত করার পর মমতা বলেন, “পার্থর কাছে যে বিভাগগুলি ছিল, আপাতত আমার কাছে থাকবে। আমি হয়ত কিছু করতে পারব না কিন্তু যতদিন না পর্যন্ত আমি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করছি ততদিন আমার কাছে এই দপ্তরগুলি রয়েছে।
রাজ্যে আরও ৭ টি নতুন জেলা হবে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা ঘোষণা করেন। আগামী ছয় মাসে জেলার সংখ্যা বেড়ে ৩০টি হবে। বর্তমানে বাংলায় জেলার সংখ্যা ২৩টি – আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, বীরভূম, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, হুগলি, হাওড়া, জলপাইগুড়ি, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, কলকাতা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান ও পুরুলিয়া।সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নতুন জেলার সম্ভাব্য নামও ঘোষণা করেছেন।
তিনিই প্রথম সুন্দরবনের নাম ঘোষণা করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে বিভক্ত করে এই নতুন জেলা তৈরি করা হবে। দ্বিতীয় জেলা হবে ইছামতি। ইছামতি ভাঙছে উত্তর চব্বিশ পরগনাকে। মূলত:, এই নতুন জেলা বনগাঁ মহকুমা নিয়ে গঠিত। বসিরহাট মহকুমা তৃতীয় নতুন জেলার অন্তর্ভুক্ত হবে (নাম পরে জানানো হবে)। এই জেলাটি উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট মহকুমার অন্তর্গত। চতুর্থ জেলা রানাঘাট। নদীয়া জেলা থেকে রানাঘাট আলাদা হচ্ছে। পঞ্চম জেলা বিষ্ণুপুর। বিষ্ণুপুর জেলা বাঁকুড়া ভেঙে তৈরি হচ্ছে। ষষ্ঠ জেলা কান্দি। মুর্শিদাবাদকে ভেঙে কান্দি করা হবে। সপ্তম বহরমপুর। মুর্শিদাবাদের সদর বহরমপুর ভেঙে নতুন জেলা হচ্ছে।