ASANSOL

Coal Smuggling Case : ২৫ জনকে সমন, আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও দেব ভট্টাচার্যঃ ২০ মাসের মাথায় বহু চর্চিত কয়লা পাচার মামলায় আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে গত ১৯ জুলাই প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ এই মামলার সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে যে মোট ১৪৯ পাতার চার্জশিট দিয়েছিলেন তাতে মোট ৪১ জনের নাম ছিলো। সেই ৪১ জনের মধ্যে চার্জশিটে নাম থাকা ২৫ জনকে সমন পাঠালো হলো। সেই নোটিশে বলা হয়েছে আগামী ১৮ আগষ্ট তাদেরকে আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।

गौ तस्करी CBI चार्जशीट


চার্জশিটে নাম থাকা ১০ জন বেসরকারি সংস্থা বা কোম্পানি ও তাদের ডিরেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকদের এই সমন পাঠানো হয়েছে। এইসব কোম্পানির পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন কারখানা রয়েছে। এই কোম্পানি কয়লা কারবারিদের থেকে বেআইনি কয়লা কিনতো বলে, সিবিআই দাবি করেছে জমা দেওয়া চার্জশিটে । এছাড়াও ১৫ জন বেআইনি কয়লা কারবারে যুক্ত বা ইললিগ্যাল কোল মাইনারের নাম চার্জশিটে আছে। এই কোল মাইনারদের দিয়ে কয়লা কারবারিরা ইসিএলের লিজ হোল্ড এলাকা থেকে বেআইনি কয়লা তোলানোর কাজ করতো। তারপর এই কয়লা বিভিন্ন ভাবে চলে যেতো। এই ১৫ জনকেও একইসঙ্গে সমন দেওয়া হয়েছে, আগামী ১৮ আগষ্ট হাজিরা দেওয়ার জন্য।


তবে, যাদেরকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তাদের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।
৪১ জনের মধ্যে ১৩ জনকে সিবিআই এই ২০ মাসে গ্রেফতার করেছে। তবে এই সিবিআইয়ের চার্জশিটে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশ অফিসারদের নাম নেই।
এই চার্জশিটে যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন পুরুলিয়ার বাসিন্দা এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কয়লা কারবারি অনুপ মাজি ওরফে লালা। সুপ্রিম কোর্টের রক্ষা কবচ থাকায় সিবিআই লালাকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। অন্যজন কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা বিকাশ মিশ্র। এই চার্জশিটে ২ জনকে পলাতক হিসাবে দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারা হলো বিনয় মিশ্র ও রত্নেশ ওরফে রত্নেশ্বর ভার্মা। জামিনে থাকা লালার ঘনিষ্ঠ ৪ জন কয়লা কারবারির নামও এই চার্জশিটে রয়েছে । তারা হলো কয়লা কারবারি জয়দেব মন্ডল, নারায়ণ খারকা ওরফে নারায়ন নন্দা ,নীরদ মন্ডল ও গুরুপদ মাঝি । এছাড়াও গত জুলাই মাসে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারে থাকা ইসিএলের ৮ কর্তার নাম সিবিআইয়ের দেওয়া প্রাথমিক বা প্রিলিমিনারী চার্জশিটে রয়েছে। তারা হলেন সুশান্ত বন্দোপাধ্যায়, অভিজিৎ মল্লিক, তন্ময় দাস, সুভাষ চন্দ্র মৈত্র, মুকেশ কুমার, দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়, রিঙ্কু বেহেরা ও সুভাষ মুখোপাধ্যায়। এই ৮ ইসিএল কর্তার জামিনের আবেদনের পরবর্তী শুনানির দিন রয়েছে আগামী ১৬ আগষ্ট।


প্রসঙ্গতঃ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যেই আদালতে বলেছে, এই কারবারের মাধ্যমে কোটি টাকা হাতবদল বা লেনদেন হয়েছে। সেই টাকা গেছে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছেও। পাশাপাশি, চার্জশিটে নাম থাকা অনেকেই এই কারবারে থেকে হাজার কোটিরও বেশির নামে বেনামে সম্পত্তি করেছেন। তবে, তদন্ত করতে নেমে এখনো পর্যন্ত সিবিআই অনেকের বাড়ি ও অফিস থেকে নগদ টাকা ও সম্পত্তির নথি উদ্ধার করেছে।
প্রসঙ্গতঃ, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর সিবিআই কয়লা কান্ডে এফআইআর করেছিলো। কেস নম্বর আরসি ২২/ ২০। এই এফআইআর করার পরের দিনই সিবিআইয়ের অফিসাররা এই আসানসোল শিল্পাঞ্চলের একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছিলো। তারপরেও এই অভিযান চলেছে।

Leave a Reply