আসানসোল শহরে গুলি চালানোর ঘটনার তদন্তে পুলিশ ফেরার যুবকের খোঁজে তল্লাশি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ তৃতীয়ার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানার জিটি রোডের আসানসোল পুরনিগমের ৫৫ নং ওয়ার্ডের গোপালপুরে একটি বহুতলে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছিলো। এই ঘটনায় গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত যুবক উজ্জ্বল দাস ফেরার রয়েছে। আসানসোলের এসবি গরাই রোডের হিলভিউ নার্সিং হোমের পেছনের বাসিন্দা ঐ যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের কাছে বহুতলের বাসিন্দা মণিদীপা ভট্টাচার্য গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৪৮, ৩২৮, ৩০৭, ৮ পকসো ও ২৫/২৭ নং ধারায় একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
বুধবার রাত আটটা নাগাদ হওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আসানসোলের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দার গুলিবিদ্ধ হওয়া যুবকের নাম অঙ্কিত বর্মন (২১)। তাকে প্রথমে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু যুবকের পরিবারের লোকেরা তাকে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। তার মুখের থুতনিতে গুলি লেগেছে বলে পুলিশ ও জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে ।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি (সেন্ট্রাল ) দেবরাজ দাস ও আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু বিশাল পুলিশ বাহিনী সেখানে পৌঁছান। পুলিশের কাছে করা লিখিত অভিযোগ গোপালপুরের উমা গার্ডেনের বাসিন্দা মণিদীপা ভট্টাচার্য বলেন, তিনি বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় তার ফ্ল্যাটে ১৪ বছরের একমাত্র মেয়ে ঈশিকা একাই ছিলো। ঘন্টা খানেক পরে তিনি মেয়ে খাবার খেয়েছে কিনা জানতে মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু মেয়ে ভালো করে কথা না বলায়, তার সন্দেহ হয়।
মণিদীপা ভট্টাচার্য এরপর ঐ বহুতলের সিকিউরিটি গার্ড সুরজিৎকে ফোন করে তার ফ্ল্যাটে গিয়ে মেয়ের খবর নিতে বলেন। সেইমতো সুরজিৎ গিয়ে ডাকাডাকি করলেও, কেউ দরজা খোলেনি। এরপর মণিদীপা ভট্টাচার্যের কথা মতো সুরজিৎ এলাকার কয়েকজন যুবককে ডেকে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে অঙ্কিত শর্মা নামে ঐ যুবক ছিলো। সবাই মিলে ডাকাডাকি করলে, ফ্ল্যাটের দরজা খোলে মণিদীপা ভট্টাচার্যর মেয়ে। তখন তারা দেখেন ভেতরে রয়েছে উজ্জ্বল দাস নামে এক যুবক। পরে মণিদীপাদেবী আসেন। তার দাবি, উজ্জ্বল দাস মেয়েকে সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। ঐ যুবক তার মেয়েকে মারধর করার চেষ্টাও করে। সেই সময় সবাই মিলে উজ্জ্বলকে ফ্ল্যাট থেকে টেনে বার করার চেষ্টা করে। তখন আচমকাই ঐ যুবক গুলি চালায়। সেই গুলি অঙ্কিতের মুখে থুতনিতে লাগে। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই, ঐ যুবক পালিয়ে যায়।
বুধবার রাতে অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর দীপা চক্রবর্তী বলেন, গুলি চলার কথা শুনেছি । কিন্তু আমি নিজে অসুস্থ থাকায়, বাড়িতে আছি। জানিনা কেন বা কে গুলি চালিয়েছে। পুলিশ এলাকায় এসেছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণ থানার আধিকারিক বলেন, ফ্ল্যাটের মালিক গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বুধবার রাতেই। তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক ফেরার রয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।