ASANSOL

মৃত ব্যক্তিও কি সাক্ষ্য দেবেন ? সিবিআই চার্জশিটে রয়েছে মৃত একজনের নাম !

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : মৃত ব্যক্তিও সাক্ষ্য দেবেন! এটাও সম্ভব? গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সম্প্রতি চার্জশিট জমা দিয়েছে। সেই চার্জশিটে মৃত একজনের নাম রয়েছে। সাক্ষী হিসাবে বীরভূমের জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে পরিচিত মাধব কৈবর্ত্যের নাম রয়েছে সেই চার্জশিটে। সাক্ষী হিসাবে যে ৯৫ জনের তালিকা সিবিআইের চার্জশিটে জমা দিয়েছে, তাতে মাধব কৈবর্ত্যের নাম রয়েছে ৫৮ নম্বরে। এই মাধন গত এপ্রিলে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। এই বিষয়ে সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে যে, মাধব কৈবর্ত্য জীবিত থাকাকালীন সিবিআইকে জেরায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং নথি সরবরাহ করেছিলেন। যা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এই মামলার তদন্তে খুবই প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ ।

file photo

অনুব্রত মন্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন ও মাধব কৈবর্ত্যের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। মাধব বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা ছিলেন। গত এপ্রিলে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় মাধবের। সায়গলের পরিবারের সঙ্গে দুর্গাপুর থেকে বোলপুর ফেরার সময় তাদের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় মাধব ও সায়গলের ছোট মেয়ের মৃত্যু হয়েছিলো। সেই ঘটনার প্রায় সাত মাস পর সিবিআই গরু পাচারের মামলায় চতুর্থ চার্জশিট জমা দিয়েছে । এতে সাক্ষী হিসেবে অন্যদের সঙ্গে মাধবের নাম রয়েছে।


সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে যে মাধবের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়নি। তা সত্ত্বেও কিভাবে তাকে এই গরু পাচার মামলায় সাক্ষী করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আইনজীবিরা বলেন, কোন মামলায় তদন্তকারী অফিসাররা যে কারোর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। প্রয়োজনে তাকেও সেই মামলায় সাক্ষী করা হয় বা হয়ে থাকে। কিন্তু আইন অনুযায়ী চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে কোনো সাক্ষী মারা গেলে সাক্ষীর তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তা সিবিআই করেনি। তবে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে , পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া মাধব কৈবর্ত্যের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাক্ষী হিসেবে চার্জশিটে তার স্ত্রীর নামও রয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ, এর আগে এই গরু পাচার মামলায় সাক্ষী হিসাবে চার্জশিটে বীরভূমের তৃনমুল কংগ্রেসের সাংসদ অভিনেত্রী শতাব্দী রায়ের নাম দিয়েছে সিবিআই। ৯৫ জনের নামের তালিকায় শতাব্দীর নাম ৪৬ নং রয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপান ওতর শুরু হয়েছে। এছাড়াও সাক্ষী হিসাবে অনুব্রত মন্ডলের অনেক ঘনিষ্ঠর নাম রয়েছে সিবিআইয়ের দেওয়া এই চার্জশিটে।


প্রসঙ্গতঃ, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে আপাততঃ আসানসোল জেলে রয়েছে অনুব্রত মন্ডল ও সায়গল হোসেন। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের অনুমতি নিয়ে ইতিমধ্যেই ইডি এই মামলায় আসানসোল জেলে গিয়ে সায়গলকে জেরা করেছে। ইডি তাকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চেয়ে আসানসোল জেলা আদালতে ভ্যাকেশান কোর্টে আবেদন করেছিলো। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় আসানসোল আদালতে। পরে ইডি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে গেছিলো। হাইকোর্টেও মঙ্গলবার তা খারিজ করে দিয়ে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *