তার অনুপস্থিতিতে বীরভূমে মাথাচাড়া দিয়েছে দলের গোষ্ঠী কোন্দল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার নির্দেশ অনুব্রত মন্ডলের
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ জেলা সভাপতি জেলে রয়েছেন। এর ফলে বীরভূম জেলায় শাসক দলের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব কোন কোন ব্লকে মাথাচাড়া দিয়েছে। জেলে থাকলেও বিভিন্ন মাধ্যমে সেই কথা অনুব্রত মন্ডলের কানে এসেছে। তাতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ।
তৃণমূল কংগ্রেসের কোনরকম গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। জেলার সমস্ত নেতাদের দ্রুত এই বিষয়টি জেলার বৈঠক ডেকে তা জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আসানসোল জেলে থাকা অনুব্রত মণ্ডল।




শনিবার সকালে আসানসোল জেল থেকে আসানসোল জেলা আদালতে আসার সময় দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করেন তিনি । নেতারা তারাপীঠ ও দলীয় পার্টি অফিসে হওয়া কালিপুজোর ফুল তার মাথায় ঠেকিয়ে হাতে দেন । অনুব্রত মন্ডল নিজে প্রত্যেকের খোঁজখবর যেমন নিচ্ছিলেন তেমনই দলের খোঁজখবর নিয়েছিলেন এইসব নেতাদের কাছ থেকে ।
এদিন অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে দলের বীরভূম জেলার মুখপাত্র তথা জেলার প্রথম সারির নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় ,জেলার সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পুর কাউন্সিলর শেখ নাজিরুদ্দিন।
দুর্গাপুজো ও কালিপুজোর পর এদিনই তাকে আদালতে আসানসোল জেল থেকে আনা হয় আসানসোল জেলা আদালতে। গত ২৪ আগষ্ট থেকে তিনি আসানসোল জেলে রয়েছেন।
এদিন কোনও কোনও নেতা অনুব্রত মন্ডলকে বলেন, অনেকেই দলের মধ্যে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করার চেষ্টা করে দলের ক্ষতি করছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যেই গোষ্ঠী করছে । কোন কোন নেতা দলের জেলা নেতৃত্বকে না জানিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এমনকি সম্প্রতি হওয়া বিজয়া সম্মেলনে দু/একটি বিক্ষোভের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে বলে তারা জানান ।
এইসব শুনে অনুব্রত পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন দলের মধ্যে থেকে কোন গোষ্ঠী করা চলবে না। আর যদি কেউ নিজেকে বেশি করে প্রচার করতে গিয়ে দলের ক্ষতি করে তাহলেও তাদেরকে বলে দিতে হবে ব্যক্তিগত প্রচারের জন্য এই দল নয় । তবে এক জেলা স্তরের নেতা তার কাছে অভিযোগ করেন যে, জনৈক বিধায়ক তিনি তার বিধানসভা ছেড়ে অন্য বিধানসভায় গিয়ে কিছুটা মাতব্বরি করছেন। এর উত্তরে অনুব্রত পরিষ্কার করে বলে দেন সমস্ত বিধায়কদের নিজেদের বিধানসভায় বসেই কাজ করতে হবে। বাইরে অন্য কোন জায়গায় যাওয়া চলবে না। এরমধ্যে তাকে দুই নেতা বলেন, সিপিএম কোন কোন এলাকায় তাদের প্রাধান্য বাড়াচ্ছে। উত্তরে ঐ দুই নেতাকে অনুব্রত বলেন যেখানে যেখানে দলীয় নেতৃত্বর মনে হচ্ছে দল একটু অসংগঠিত বা কমজোরি হয়ে পড়েছে, সেখানে সেখানে আলাদা করে বুথ পর্যন্ত বৈঠক করে দায়িত্ব দিতে হবে। ঐসব এলাকার নেতাদের মনে রাখতে হবে সামনের বছরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন।
পর জেলার মুখপাত্র প্রবীণ নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, দাদার নির্দেশ নিয়ে আমরা বীরভূমে ফিরছি। আমরা দু/একদিনের মধ্যেই জেলায় বৈঠক ডাকবো সবার সাথে কথা বলে। মলয়বাবু স্বীকার করেন যে, দলের মধ্যে লাভপুর ব্লকের ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারীকে নিয়ে কথা উঠছে। এমন আরো কাউকে কাউকে নিয়েও উঠছে। এদিন দাদাকে সব জানানো হয়েছে। এমনকি দলের মধ্যে যে গোষ্ঠী কোন্দল হয়েছে, তা বিজয় সম্মেলনে তা প্রকাশ্যে আসে। তা দাদাকে বলতেই তিনি বলেছেন এসব হতে দেওয়া যাবে না। আমি তো চিরকাল জেলে থাকবো না । মলয়বাবু আরো বলেন, আমরা দলের বৈঠক ডেকে পুরো জেলাকে নতুন করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সব আলোচনা করে নেব । যেখানে যা ক্ষোভ বিক্ষোভ আছে, তা নিয়ে আলোচনা করব। এদিন দুপুরে আদালত থেকে জেলের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে অনুব্রত মণ্ডল আবার যেসব নেতা ও কর্মী উপস্থিত ছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন সবাই ভালো থাকবেন । ঠিকঠাক করে দলের কাজ করবেন।