North Bengal News

গাজোল – ডালখোলা রেলপথ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : ১৯৮৪ সালে ঘোষণা হবার পরে পাঁচ দশক কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত চালু হয়নি ডালখোলা থেকে গাজল ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেলপথের কাজ। রায়গঞ্জ সহ জেলায় বেহাল রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার মান উন্নত করতে এবার জনস্বার্থ মামলা হলো কলকাতা হাইকোর্টে। রায়গঞ্জের বাসিন্দা অঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে একশো জন সাধারণ বাসিন্দা হাইকোর্টে এই জনস্বার্থ মামলাটি করেন মঙ্গলবার। ডালখোলা থেকে গাজল ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেলপথের কাজ যা দীর্ঘদিন ধরে থেমে রয়েছে সেই কাজ কবে শুরু হবে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলাটি করা হয়েছে।



উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে রেলমন্ত্রী ছিলেন প্রয়াত গনি খান চৌধুরী। মালদা ও উত্তর দিনাজপুরের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ করতে তিনি গাজোল থেকে ভায়া ইটাহার ও রায়গঞ্জ হয়ে ডালখোলা পর্যন্ত রেলপথের রুট চালু করার পরিকল্পনা করেন। সেইমতো প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। বরাদ্দ হয় টাকাও। কিন্তু তারপরেই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই ফাইল ঠান্ডাঘরে চলে যায়। গনি খান চৌধুরীর মৃত্যুর পর অন্য কোনও রেলমন্ত্রী বা জনপ্রতিনিধিও বিষয়টি নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করেননি। ভোট এলেই অবশ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জট কাটিয়ে প্রকল্পের কোনও উদ্যোগ কাউকে নিতে দেখা যায়নি।

calcutta_Highcourt



মামলাকারী অঞ্জন রায় বলেন, মোট ষাট কিলোমিটারের মত এই রেলপথ হলে খুব সহজেই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে জেলার। দীর্ঘদিন ধরে রেল মানচিত্রে পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে পরিচিত উত্তর দিনাজপুর জেলা। শহরের একমাত্র রেলপথ রায়গঞ্জ-বারসই যা দিয়ে সর্বসাকুল্লে দুটো এক্সপ্রেস ট্রেন চলে, সেখানে দাঁড়িয়ে জেলাবাসীর দুর্ভোগ কাটাতে ডালখেলা থেকে গাজল ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার বিকল্প রেলপথ হলে অনেক সহজেই উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে জেলার যোগাযোগ সহজ হবে, অন্যদিকে রায়গঞ্জ- মালদা রেল পথে যোগাযোগও সহজ । দীর্ঘদিন ধরে ডালখোলা থেকে গাজল ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেলপথের কাজ থেমে রয়েছে কবে এই কাজ শুরু হবে কোনো কিছুই জানা নেই, তাই এই কাজ কবে শুরু হবে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছি। আশা করছি খুব দ্রুত এই রায়ের শুনানি হবে এবং রায়গঞ্জের মানুষের পক্ষেই রায় হবে।

অন্যদিকে এই মামলাটি লড়ছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী। তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে , ডালখোলা থেকে গাজল ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেলপথ প্রকল্পটি ১৯৮৪ সালে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রেল প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। এর ফলে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষ ক্ষতিকর হচ্ছেন। রায়গঞ্জের বাসিন্দা অঞ্জন রায় কলকাতা হাইকোর্টে নিজ উদ্যোগে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। এই রেলপথটি তৈরি হলে উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর দুই জেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রায় সত্তর থেকে আশি কিলোমিটার মিটার রাস্তা কমে যাওয়ার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে যোগাযোগও সহজ হবে। উপকৃত হবেন উত্তর বঙ্গের মানুষ। আগামী দুই সপ্তাহ অর্থাৎ ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *