ASANSOL

আসানসোল জেলা আদালতে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ, ধৃত এক কলকাতা পুলিশ ও এক রেল কর্মী

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল জেলা আদালতে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় জালিয়াতিতে সাহায্য করার অভিযোগে রাজ্য পুলিশের সিআইডি আসানসোল দক্ষিণ থানার দুটি মামলায় দুজনকে গ্রেফতার করলো। ধৃতদেরকে শুক্রবার আসানসোল জেলা আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তাদেরকে আনা হয়। ধৃত দুজনের মধ্যে একজন কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের কর্মী। তার নাম সুজিত রায়। অন্যজন রেল কর্মী। তার নাম শুভঙ্কর সমাজপতি। রাজ্য সিআইডির পক্ষ থেকে এদিন এদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ ও এই চক্রের সাথে যুক্ত থাকা বাকিদের ধরা ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রমাণ সংগ্রহের কারণে ১৪ দিনের জেল হেফাজত চাওয়া হয় বলে সরকারি আইনজীবী মনোজ কুমার জানান। সেই আবেদনের ভিত্তিতে তাদের জামিন নাকচ করে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ কান্তি মন্ডল দুটি মামলায় দুজনকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতের দিয়েছেন বলে জানা গেছে।



সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, শুভঙ্কর সমাজপতি রেলের মালদা ডিভিশনের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী ও সুজিত রায় কলকাতা পুলিশে রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে প্রথম জনের বিরুদ্ধে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে উত্তরপত্র পাঠানো ও দ্বিতীয় জনের বিরুদ্ধে মোবাইলে বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তরপত্র দেওয়ার কথা অভিযোগে বলা হয়েছে। আগামী ৭ ডিসেম্বর ধৃত দুজনকে সিআইডি হেফাজত শেষে আবার এই আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল জেলা আদালতের স্টাফ সিলেকশন অফ এক্সজামিনেশন অফ পশ্চিম বর্ধমান ২০১৯ র মাধ্যমে ই স্টেনো ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগ করার কথা ছিলো। তার জন্য একটি পরীক্ষা হয়েছিল ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। সেই পরীক্ষার সময় একটি প্রতারণার চক্র ভুয়ো সিমের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকার বিনিময় পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র তাদের মোবাইলে মাধ্যমে বা বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করে পৌঁছে দেয় বলে অভিযোগ। আবার কোন কোন পরীক্ষার্থীকে তাদের ফোনে এসএমএসে উত্তরপত্র পাঠানো হয় ।


আসানসোল শহর সহ শিল্পাঞ্চলের একাধিক স্কুলে পরীক্ষার্থীদের থেকে একাধিক মোবাইল, ভ্যানিশিং কালি, ভুয়ো এ্যাডমিট কার্ড সহ একাধিক সামগ্রী পুলিশ উদ্ধার করে। এইসব নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কারণে আটটি মামলায় ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী ছিল নদীয়ার বাসিন্দা। প্রায় সাত সপ্তাহ পরে এরা সকলেই আদালত থেকে জামিন পায়।
এরপর কলকাতা হাইকোর্টে এক প্রার্থী এই নিয়ে মামলা করেন। পরবর্তী কালে গুরুত্ব বুঝে কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলার তদন্তের দায়িত্বভার রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতে তুলে দেয়। সিআইডি তদন্তে নেমে নদীয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে। যারা এই প্রতারণা চক্রের অন্যতম নায়ক। কিভাবে তারা চক্র চালাতো সেটাও সিআইডি তাদের হেফাজতে নিয়ে জানতে পেরেছে। সেই তিনজনের মধ্যে অন্যতম অতনু ভক্ত। তার বাড়ি নদীয়ার তেহট্টে। অন্য দুজন হল নদীয়ার হাঁসখালির প্রসেনজিৎ মন্ডল ও ধানতলার নিহার বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *