ASANSOL

ইসিএলে অতিরিক্ত ৯০০ কর্মীকে নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত

কার্যকর ১ ডিসেম্বর থেকে, বিরোধিতায় আন্দোলন অসংগতি শ্রমিক কর্মী অধিকার ইউনিয়নের , প্রতিবাদ তৃনমুল কংগ্রেসের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ অন্যতম কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থা ইষ্টার্ণ কোলফিল্ড লিমিটেড বা ইসিএলের ৯০০ জন কর্মীকে এবার নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এইসব কর্মীরা ইসিএলের বিভিন্ন কোলিয়ারিতে কাজ করবে বলে জানা গেছে। যাদের দিয়ে এই নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করানোর কথা বলা হচ্ছে, তারা অতিরিক্ত। তাদের বেশিরভাগটাই বাবা ও মায়ের মৃত্যুর পরে পোষ্য হিসাবে কাজ পেয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা পোষ্টিং থাকলেও, ইসিএলের দাবি, এদের কারোর কাজ নেই।


এই কারণে এতদিন ধরে ইসিএলের কোলিয়ারিতে কোলিয়ারিতে বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষীরা কাজ করানোর নিয়ম চলে আসছিলো, তা শেষ হতে চলেছে। সেইমতো আগামী ৩০ নভেম্বর নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ইসিএলের যে চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে, তার নবীকরণ হবে না।
এদিকে ইসিএলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই আন্দোলন শুরু করেছে ইসিএল ঠিকা শ্রমিক অধিকার ইউনিয়ন। তারা ইতিমধ্যেই ইসিএলের বিভিন্ন এরিয়ার কয়লাখনিতে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি স্মারক লিপি দিয়েছে। সোমবার একই দাবিতে ইসিএলের সদর দপ্তরে এই ইউনিয়ন বিক্ষোভ দেখায় ও স্মারক লিপি দেয়। এই সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, বেসরকারী সংস্থার অধীনে প্রায় ১ হাজার লোক ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে কাজ করতো। তার মধ্যে অনেকে আছেন, যারা কেউ ২০ বছর , কেউ ২৫ বছর, কেউ বা ৩০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। তাদের কি হবে? কোন অবস্থাতেই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না। দীর্ঘ আন্দোলন করা হবে।


অন্যদিকে, ইসিএলের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু ও শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক। তারা বলেন, কেন্দ্র সরকার, কোল ইন্ডিয়া ও ইসিএল কতৃপক্ষ যখন যা খুশি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবো না। যে কর্মীদের অতিরিক্ত বলা হচ্ছে, তাদের যে পদে নিয়োগ করা হয়েছে, তাতেই কাজ করাতে হবে। অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। আমরা এর বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু করবো। এদিকে দূর্গাপুরের (পশ্চিম) বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ ঘোড়ুই এদিন বলেন, দিন কয়েক আগে কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী দূর্গাপুরের এসেছিলেন। আমি তার সঙ্গে দেখা করে এই প্রসঙ্গে একটা চিটি দিয়েছি। বলেছি এই সিদ্ধান্ত যাতে কার্যকর করা না হয়। পাশাপাশি আমি চিঠিতে এও অভিযোগ আকারে লিখেছি ইসিএল কতৃপক্ষ দলের সাংসদ ও বিধায়কদের কোন কথা শোনেনা।


এই প্রসঙ্গে ইসিএলের চীফ সিকিউরিটি অফিসার শৈলেন্দ্র সিং বলেন, ইসিএলের বিভিন্ন এরিয়ার এমন ৯০০ জন কর্মী আছেন, তাদের কোন কাজ নেই। তাদেরকে নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। সিআইএসএফও তাদের মতো করে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই সিদ্ধান্ত ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে। তাই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ৩০ নভেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে, আর নতুন করে কোন চুক্তি হবেনা।
প্রসঙ্গতঃ, এর আগে বেসরকারি সংস্থা নিরাপত্তা রক্ষীদের নবীকরণ করা নিয়ে ইসিএলের সঙ্গে টালবাহানা করছিলো। সেই সময় ইসিএল ঠিকা শ্রমিক অধিকার ইউনিয়ন দীর্ঘ আন্দোলন করেছিলো। চাপে পড়ে ইসিএল কতৃপক্ষ নতি স্বীকার করে চুক্তি নবীকরণ করেছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *