ASANSOL

বিজেপির মহিলা কাউন্সিলরকে জেরা পুলিশের, তৃনমুলে যোগদানে চাপ, বিস্ফোরক দাবি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও কাজল মিত্রঃ* ঠিক এক মাস পরে আসানসোল কম্বল কান্ডে আসানসোল পুরনিগমের ১০৫ নং ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্য্যকে জেরা করলো আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। রবিবার সকালে এই কম্বল কান্ডের মামলায় আসানসোল উত্তর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কুলটির ডিসেরগড়ে বিজেপি কাউন্সিলরের বাড়িতে আসে। পুলিশ বেরিয়ে যাওয়ার পরে বিজেপি কাউন্সিলর সাংবাদিকদের সামনে এসে বিস্ফোরক দাবি করেন। তিনি বলেন, পুলিশ জেরার নামে আসলে বিজেপি ছেড়ে দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে আসার জন্যে চাপ দিচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই ইন্দ্রাণী আচার্যের এই দাবির পরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুলিশ আধিকারিকরা অবশ্য বিজেপি কাউন্সিলরের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
তবে তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব ইন্দ্রাণীদেবীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য পুলিশ দিয়ে কাউন্সিলর টানার দরকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজ দেখে এমনিতেই অন্য দলের কাউন্সিলররা তৃনমুল কংগ্রেসে আসতে চাইছেন।



জানা গেছে, রবিবার বাড়িতে এসে কম্বল কান্ডে জেরা করার জন্য শনিবারই বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্য্যকে আসানসোল উত্তর থানার তরফে নোটিশ দেওয়া হয়। সেইমতো এদিন সকালে পুলিশ তার বাড়িতে আসে। প্রায় ঘন্টা খানেকের মতো পুলিশ তাকে জেরা করে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাকে ঐ ঘটনা নিয়ে বেশকিছু প্রশ্ন করা হয়েছিলো। জানতে চাওয়া, ঐ অনুষ্ঠানের সিডিউল জানতাম কিনা। গোটা ঘটনা প্রি-প্ল্যানড্ বা পূর্ব পরিকল্পিত কিনা। পুলিশের প্রশ্নে আমার খুব অবাক লাগলো। যেখানে তিনজন পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেন, সেটা কি প্রি-প্ল্যানড হয়? আমাদের মনুষ্যত্ব এখনো ঐ জায়গায় যায়নি। আসলে পুলিশ হুমকি দিতে এসেছিলো, যাতে আমি বিজেপি ছেড়ে তৃনমুল কংগ্রেসে যাই। সেটা পজিবেল নয়।


প্রসঙ্গতঃ, আগামী ১৭ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে কম্বল কান্ড নিয়ে মামলা শুনানি আছে। এই মামলা করেছিলেন পুরসভার বিরোধী দল বিজেপি নেত্রী চৈতালি তেওয়ারি । তিনি আদালতে জানিয়েছেন পুলিশ যে তাদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা এনেছে সেটা ঠিক নয়। এটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা। ১৭ জানুয়ারির শুনানিতে এটা দুর্ঘটনা না অনিচ্ছাকৃত খুন তা নিয়ে প্রধানত দুই পক্ষের তথ্য পেশ হওয়ার কথা। মুলতঃ সেজন্যেই আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ এই মামলায় তথ্য সংগ্রহ করে ঐদিন হাইকোর্টে হাজির হতে চায়।


এদিকে ঐ ঘটনার ঠিক একমাস পূর্ণ হওয়ার দিন গত ১৩ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেছিলেন, মৃত তিনজনের পরিবার পিছু একজন করে চাকরি দেওয়া হবে বলে মেয়র বিধান উপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখনো তা দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য গত ১৩ ডিসেম্বর আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙালে চৈতালি তিওয়ারির উদ্যোগে শিব চর্চা ও কম্বল বিতরণ করার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে রাজ্যের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী এসেছিলেন। কম্বল বিলির সময়ে পদপিষ্ঠ হয়ে তিনজন মারা যান। সেই ঘটনায় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে আটজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ দুই বিজেপি কাউন্সিলর সহ ১০ জনের নামে এফআইআর হয় নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *