ASANSOL

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকদের সঙ্গে মন্ত্রী মলয় ঘটকের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক,একাধিক বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকের সভাপতিত্বে আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের কার্যালয়ে আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার কনফারেন্স হলে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট, আসানসোল পুরনিগম, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, পরিবহন দফতর সহ অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিক ছিলেন।

বৈঠকে মন্ত্রী মলয় ঘটক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের ২নং জাতীয় সড়কের আশপাশের এলাকায় আবাসন প্রকল্পের নামে সরকারি জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আধিকারিকদের বলেন, তদন্ত করে যেখানেই সরকারি জমি দখল করা হয়েছে সেখানটা চিহ্নিত করতে হবে। পরে তা ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি জমির রেকর্ড সংক্রান্ত সমস্যা দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বার্ণপুরে প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের নাম হওয়া উচিত আসানসোলের নামে। তা বার্ণপুরের নামে হওয়া উচিত নয় বলে মন্ত্রী মলয় ঘটক মনে করেন।

এই বৈঠকে মন্ত্রী মলয় ঘটক আসানসোলের মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজাকে বার্ণপুরে সেইল আইএসপির প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে আসানসোল বিমানবন্দর করার জন্য এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশ দেন। কারণ হিসাবে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলার মধ্যে আসানসোল হলো প্রধান শহর বা জেলা সদর। বার্ণপুর আসানসোল শহরের অন্তর্গত। অন্ডালে যে বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে তা দুর্গাপুর বিমানবন্দর নামে পরিচিত। একইভাবে এই বিমানবন্দরের নাম আসানসোল বিমানবন্দর হওয়া উচিত।

অন্যদিকে, অটো ও টোটো চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতির উপর মন্ত্রী এদিনের বৈঠকে জোর দেন। তিনি বলেন, শহর তথা শিল্পাঞ্চলের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু করতে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। অটোর জন্য আরও রুট ঠিক ও পারমিট ইস্যু করতে হবে। এর সঙ্গে আসানসোল আরটিওকে ঝাড়খণ্ড ও অন্যান্য জেলার অটো যা এই শিল্পাঞ্চলে চলছে তা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে টোটো চলাচলের উপর আরও কঠোরতা দেখানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বৈঠকে আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার এন সুধীর কুমার নীলকান্তম বলেন, জিটি রোডের একটি অংশে টোটো চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এভাবে সব প্রধান রাস্তায় একযোগে টোটো চলাচল বন্ধ করা হলে, অন্যান্য এলাকায় টোটোর সংখ্যা বাড়বে। তাতে সমস্যা হবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথমে শহরে টোটোর জন্য একটি স্ট্যান্ড তৈরি করতে হবে। এ জন্য শহরের হটন রোড চার্চের কাছে, রেলের বন্ধ ক্যান্টিনের কাছে ও আসানসোল পুরনিগমের কাছে রেলওয়ে কলোনিতে টোটো স্ট্যান্ড তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে এই তিনটি জায়গা রেলের। তাই এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ঠিক করা হয়েছে।

গোটা বিষয় দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে আসানসোল পুরনিগমের ওয়াসিমুল হককে। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (ট্রাফিক), এসিপি (ট্রাফিক), পুর সচিব শুভজিৎ বসু, পুর ইঞ্জিনিয়ার আর কে শ্রীবাস্তব প্রমুখকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এই কমিটির বৈঠক হবে। তারপর এই বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এই বৈঠকে জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, পুলিশ কমিশনার এন সুধীর কুমার নীলকান্তম ছাড়াও ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক হরিশঙ্কর পানিকর, আসানসোল পুরনিগমের কমিশনার রাহুল মজুমদার, চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় , (ডিসিপি সেন্ট্রাল) ডাঃ কুলদীপ এসএস, মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *