ASANSOL

পশ্চিম বর্ধমানের জলাশয় পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছে

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। প্রায় এক মাস ধরে পশ্চিম বর্ধমানের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জলাশয় পরিযায়ী পাখিদের সমীক্ষা করার পর বুধবার সমীক্ষা রিপোর্ট হাতে পেয়েছে জেলা বনদপ্তর। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে গত বছরের তুলনায় এবারে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা যথেষ্ট কমেছে। ডি এফ ও বুদ্ধদেব মন্ডল এর দেওয়া এই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে চিত্তরঞ্জন এর জলাশয় গুলিতে গত বছর যেখানে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ছিল ১৬৭৬ এবার সেটা কমে ১২১৭ হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি পাখি কমেছে দুর্গাপুর ব্যারেজে। গত বছর যেখানে সমীক্ষা রিপোর্টে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ২০৮৫ ছিল এবার তা কমে মাত্র ৪২৮ হয়েছে। বার্নপুরের ইস্কোর পুকুরে এবং দামোদরের জলাধার মিলিয়ে গতবারে যেখানে পাখির সংখ্যা ৪ ৩৪ ছিল এবার তা কমে ২৪৪ হয়েছে। দুর্গাপুরের নাচন ড্যামে অবশ্য গতবারের তুলনায় সামান্য হলেও পাখি বেড়ে ১৯২ হয়েছে। সুখের বাঁধ এলাকাতে গতবারের যেখানে ১০৫০ টি পাখি ছিল এবার তা কবে ২১৬ পাওয়া গেছে ।এছাড়া চটিরানীগঞ্জ এলাকায় এবার প্রথম সমীক্ষাতে ৩০৯ টি পরিযায়ী পাখির সন্ধান মিলেছে।


বনদপ্তরের সাথে যুক্ত হয়ে দুর্গাপুর ওয়াইল্ড লাইফ ইনফরমেশন এন্ড নেচার গাইড সোসাইটি এই সমীক্ষার কাজ গত এক মাস ধরে করেছে বলে জানান ডি এফ ও ।এই সংগঠনের সভাপতি সাগর অধূর্য জানান সবচেয়ে বেশি পাখি কমেছে দুর্গাপুর ব্যারেজে ।এর অন্যতম কারণ সেখানে মাঝে মধ্যেই নির্মাণ কার্য হওয়া, দ্বিতীয়তঃ পাখিদের বাসা গুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়া। তিনি বলেন এখানে আগে প্রচুর পরিমাণ লিটিল স্টান্ট ও টেমিং স্টান্ট পাখি আসতো। এখন তা একদমই কমে গেছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন চিত্তরঞ্জনে মোট যেখানে ১২১৭ টি পরিযায়ী পাখি পাওয়া গেছে তার মধ্যে লেজার হুইসিলিং ডাক বা সরাল হাঁস সবচেয়ে বেশি ১০১৫ টি ,তারপরেই ওখানে আছে গেডওয়াল ১৩৫ টি মিলেছে। রাঙামুড়ি হাস অথবা চোখাচোখির সংখ্যাও কম নয় ।এইসব অধিকাংশ পাখি শুধু সাইবেরিয়া নয় হিমালয়ের ওপাশ থেকে আমাদের জেলাতে আসে।

তিনি বলেন পাখি শিকার করে খাওয়ার প্রবণতাও যথেষ্ট আছে। বিশেষ করে আমরা নৌকোয় করে যখন সমীক্ষা করছি, ছবি তুলছি তখন এটাও জানতে পেরেছি কোথাও কোথাও জলে বিষ মিশিয়ে পরিযায়ী হাঁস ধরনের পাখি গুলিকে মেরে খাওয়ার জন্য নেয়া হয়। স্বীকার করলে একটি পাখি মারা যায়। কিন্তু এই ধরনের অন্যায় কাজ করলে তাতে বেশি পাখি মারা যায়। এছাড়াও কোন কোন জলাশয় এর কাছে নানান ধরনের কটেজ বা ঘর তৈরি করার কারণে পাখি আসার সংখ্যাও কমছে


ডি এফ ও বলেন জল দূষণ, পরিবেশ দূষণ, বাতাসের দূষণ এবং কোন কোন সময় আবহাওয়া বড় কারণ হয়ে উঠেছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে। কোথাও কোথাও কচুরিপানা ভরে যাচ্ছে ।আবার আমরা পরিষ্কার করতে বললে পুরোটাই পরিষ্কার করে দেয়া হচ্ছে ।তাতেও পাখিরা কিন্তু আসবেনা এটা মনে রাখতে হবে। আমরা এই জন্য বিভিন্ন শিল্প সংস্থা সহ যেসব জায়গায় পাখি আসে তেমন আধিকারিকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে শীঘ্রই একটি বৈঠক করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *