রাজু ঝা হত্যাকাণ্ড : হত্যা করতে আসা আততায়ীদের ব্যবহৃত জাল নম্বর প্লেট লাগানো ফেলে যাওয়া গাড়ি স্টেশন রোডে খুঁজে পেল পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়: শক্তিগড়ে কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনের ঘটনায় নতুন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। যে গাড়ি থেকে রাজুকে গুলি করা হয়েছে সেটি রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা আততায়ীরা গাড়ি ফেলে অন্য দিকে পালিয়ে যেতে পারে।শনিবার রাতে নীল রঙের একটি গাড়ি থেকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত রাজুকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ওই সময় শক্তিগড়ের আমড়া মোদের কাছে একটি ল্যাংচা দোকানের সামনে রাজুর গাড়ি দাঁড় করানো হয়। রাজু গাড়ির চালকের আসনে ছিলেন। তাকে এলোপাথাড়ি গুলি করা হয়। সঙ্গে থাকা তার এক সঙ্গীও গুলিবিদ্ধ হন।




রবিবার সকালে শক্তিগড় রেল স্টেশনের রাস্তায় নীল রঙের একটি গাড়ি দেখতে পায় পুলিশ। তারা বলে গাড়ির নম্বর প্লেটটি ভুয়া। হত্যা করতে আসা আততায়ীরা সড়কপথে কলকাতা যাওয়ার পরিবর্তে রেলপথ বেছে নেয়। পুলিশ জানায়, তারা প্রথমে সড়কপথে কলকাতার দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু মোড়ে মোড়ে নাকা চেকিংয়ের সময় ধরা পড়ার ভয়ে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করে। রাজুর ঝা এর হত্যাকারীরা রেলস্টেশনের রাস্তায় গাড়ি রেখে ট্রেনে চড়ে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নীল গাড়িটি থেকে বেশ কিছু মদের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দ্রুত আসামিরা ধরা পড়বে বলে পুলিশ আশাবাদী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ শক্তিগড়ের লাংচা হাবে একটি সাদা চার চাকার গাড়ি পার্ক করা ছিল। গাড়িতে চারজন ছিলেন। ঠিক তখনই কলকাতাগামী একটি নীল রঙের গাড়ি থেকে গুলি চালানো হয়। স্থানীয়দের দাবি, চার থেকে পাঁচটি গুলি করা হয়েছে। চালকের আসনে বসে ছিলেন রাজু ঝা। মূলত তাকেই টার্গেট করা হয়েছে। গুলিতে আহত হয়েছেন আরও একজন। দুজনকেই বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রাজুকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার রাতে রাজুর মৃত্যু নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। রাজু ছিলেন বিজেপি নেতা। তাঁর খুনের পর বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রাক্তন বিজেপি এবং এখন তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়ার নিশানা করেন৷ বাবুলের দাবি, এই একই রাজু বিজেপিতে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দলের নেতাদের মতবিরোধের অন্যতম কারণ ছিল। রাজুকে দলে যোগ দেওয়ার জন্য দিলীপ ঘোষ এবং বঙ্গীয় বিজেপির প্রাক্তন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বেছে নিয়েছিলেন। বাবুলের মন্তব্যের পর বেঙ্গল মিরর দিলীপের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতা এবং দুর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোরুই বলেছেন, “বাবুল সুপ্রিয়র এখন কোনও গুরুত্ব নেই। খবরে থাকতেই এমন টুইট করছেন তিনি।আসানসোলের মানুষ জানে সে কেমন মানুষ!”