BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আরও চল্লিশটি ইঞ্জিন বাড়িয়ে দেওয়া হলো

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। আসন্ন লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এবং ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের কারণে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আরও চল্লিশটি ইঞ্জিন বাড়িয়ে দেওয়া হলো। এমন মন্তব্য করেছেন এখানকার বাম এবং দক্ষিণ সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতৃবৃন্দ।
ভারতীয় রেল ইঞ্জিন সরবরাহের ক্ষেত্রে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার শ্রেষ্ঠত্ব আবারো স্বীকৃতি পেল রেল মন্ত্রকের সর্বশেষ ঘোষিত ইঞ্জিন নির্মাণ উৎপাদনের লক্ষ্যসূচির মাধ্যমে। দেশের সব কটি উৎপাদন ক্ষেত্রে তুলনায় চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আবারও সর্বোচ্চ স্তরে ধার্য করল রেল মন্ত্রক। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষের জন্য গত ১৮ ই ফেব্রুয়ারি যে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছিল মাত্র একপক্ষকাল পরে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার ক্ষেত্রে সেই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো হলো। গত ১৮ ই ফেব্রুয়ারি রেল পর্ষদ জানিয়েছিল চিত্তরঞ্জনের ৪৫০ টি এবং তাদের সঙ্গে থাকা ডানকুনি কারখানায় ৯০ টি অর্থাৎ মোট ৫৪০ টি ইঞ্জিনে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হল। কিন্তু ৫ ই এপ্রিল বুধবার নতুন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে জানিয়ে দেয়া হলো চিত্তরঞ্জন এ ৪৮০ টি এবং ডানকুনিতে ১০০ টি অর্থাৎ মোট চিত্তরঞ্জন রেল কারখানায় ৫৮০ টি বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষে। যদিও ঠিকঠাক কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশ সময় মত না পাওয়ায় গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯৫ টি রেল ইঞ্জিন প্রায় কম হয়েছে চিত্তরঞ্জন এবং ডানকুনি কারখানা মিলিয়ে।

চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা


মাত্র দু সপ্তাহের ব্যবধানে রেল পর্ষদ চিত্তরঞ্জনের উৎপাদনের পরিমাণ আরো ৪০টি ইঞ্জিন বাড়ালো কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে সিটু অনুমোদিত লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত বলেন ২০২৪ এ দেশজুড়ে ভোট আছে। সেক্ষেত্রে যাতে বিরোধীরা বলতে না পারে যে এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় নেই বলে তারা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত তিনি বলেন উৎপাদন বাড়ানোর অর্থ আউটসোর্সিং এর পরিমাণ বাড়ানো। বছরে ৫০০ জনের বেশি এই কারখানায় অবসর নিচ্ছেন । কিন্তু বহুদিন ধরেই কোন নিয়োগ হচ্ছে না।, আমরা বারবার শূন্য পদ গুলি নিয়োগের দাবি তুলেছি। তাছাড়াও আগামী ১৬ই এপ্রিল এই কারখানায় ৯০০০ এবং ১২০০০ অশ্ব শক্তির উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রেল ইঞ্জিন নির্মাণের জন্য সমস্ত রেল শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে একটি বড় ধরনের কনভেনশন ডাকা হয়েছে।

চিত্তরঞ্জনের আই এন টি ইউ সি ক্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলের সর্বভারতীয় স্তরের নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং বলেন এই কারখানা সমস্ত ধরনের শ্রমিকরা এখান থেকে দিল্লী পর্যন্ত তাদের উৎপাদন বাড়ানো এবং অতিরিক্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন নির্মাণের দাবিতে যে আন্দোলন চালাচ্ছে তাতেই রেলকর্তারা বাধ্য হয়েছেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে। ২০২৪ এর ভোট অবশ্যই এক্ষেত্রে একটা ইসু।সি এল ডব্লু সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত মালঙ্গী ও রেলওয়ে এমপ্লয়িস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একই সুরে বলেন টানা শ্রমিক আন্দোলন এবং অবশ্যই ২০২৪ এর ভোটের দিকে তাকিয়েই এই উৎপাদন এর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি আমরা বারবার দাবি জানাচ্ছি শ্রমিক সংখ্যা না বাড়ালে এবং সময় মত যন্ত্রাংশ না মিললে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *