ASANSOL

আসানসোল গ্রাম গাজন উৎসব এবার ৩২৮ বছরের

নীলষষ্ঠীকে সামনে রেখে রয়েছে অনেক রীতি ও আচার

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শহরের আসানসোল গ্রাম গাজন উৎসব। ২০২৩ সালের এই উৎসব ৩২৮ বছরের। শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বর জীউ গাজন উৎসব পরিচালনা করে শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বর দেবোত্তর ট্রাস্ট ও গাজন উৎসব কমিটি। সোমবার ১০ এপ্রিল থেকে আসানসোল গ্রামে শিবমন্দিরে এই গাজন উৎসব শুরু হবে। চলবে ১৫ এপ্রিল শনিবার বাংলা নববর্ষের দিন বা পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত। মাঝে দুবছর করোনার কারণে এই উৎসবের আয়োজন তেমনভাবে করা সম্ভব হয়নি। সেই দুবছর শুধু বাদ দিলে, আসানসোলে গ্রামে আয়োজন করা হচ্ছে পুরনো ও ঐতিহ্যশালী গাজন উৎসবের। ১০ এপ্রিল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এবছরের গাজন উৎসব বলে রবিবার জানান শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বর জীও দেবোত্তর ট্রাস্ট ও গাজন উৎসব কমিটির সভাপতি শচীন রায়।


তিনি বলেন, এবারের গাজন উৎসব ৩২৮ বছরের। ৬ দিনের এই চলবে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।
আসানসোল গ্রামের ভেতরে যে শিবমন্দির আছে সেখানেই মুলতঃ নীলষষ্ঠীকে কেন্দ্র করেই গাজন উৎসবের আয়োজন এত বছর ধরে হয়ে আসছে। রয়েছে অনেক রীতিনীতি ও পুরনো আচার। কালের নিয়মে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও, এই গাজনের কোন কিছুরই পরিবর্তন হয়নি।
সোমবার শিবমন্দিরে সন্ন্যাসীরা তাদের ব্রত শুরু করবেন। পরে সন্ধ্যায় আসানসোল গ্রামের রামসায়ের ময়দান সংলগ্ন পার্কে নকড়ি রায় ও রামকৃষ্ণ রায়ের মূর্তিতে মাল্যদান করা হবে। সেখান থেকে একটি পদযাত্রা শিবমন্দির পর্যন্ত আসবে। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবারের গাজন উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। থাকবেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা। এদিন নকড়ি রায় ও রামকৃষ্ণ রায়, আসানসোলের ইতিহাস নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।


এবছরের ক্যালেন্ডার মতে ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার নীল ষষ্ঠী। সেদিন সকাল থেকেই বলতে গেলে গোটা আসানসোল গ্রাম গাজন উৎসবের উন্মাদনায় মেতে উঠবে। একবারে সকালে শিব মন্দিরে হবে শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বরের পুজো। সঙ্গে হোম যঞ্জানুষ্ঠান। বিকেলে হবে গাজন সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসীনিদের দন্ডি কাটা। শিব মন্দির থেকে তারা দন্ডি কেটে রামসায়ের পুকুরে যান। পরে আবার তারা মন্দিরে ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় হয় সন্ন্যাসীদের এক পায়ে নৃত্য। এই গাজন উৎসবের শেষ দিন হবে সন্ন্যাসীদের নিম ও হলুদ খেয়ে নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠান। এছাড়াও সেদিন রয়েছে ধর্মযঞ্জ ও জাতি, ধর্ম এবং বর্ণ নির্বিশেষে পক্তি ভোজন। ৬ দিনের উৎসবের মধ্যে প্রথম ও শেষ দিন বাদে চারদিন শিবমন্দিরে হবে যাত্রাপালা। দুদিন গ্রামের দুটি ক্লাবের সদস্যরা যাত্রা করবেন। বাকি দুদিন কলকাতা থেকে দল আসবে।
ট্রাস্টের সভাপতি আরো বলেন, এই গাজন উৎসবের সঙ্গে একটা ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *