আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ৫০০ একর ফুট পানীয় জল সরবরাহ অব্যাহত থাকবে : ডিভিসি
১৫ ই জুন পর্যন্ত বৃষ্টি না হলেও আসানসোল সহ শিল্পাঞ্চলে ৫০০ একর ফুট পানীয় জল সরবরাহ
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। আসানসোল ও মাইথনের তাপমাত্রা ৪৩° ছিল। এই ভয়ঙ্কর গরমে কুয়ো এবং পুকুর অনেক জায়গায় শুকিয়ে যাচ্ছে । তবু তারই মধ্যে ডিভিসির পক্ষ থেকে আশ্বাস মিলেছে আগামী ১৫ ই জুন পর্যন্ত বৃষ্টি না হলেও আসানসোল সহ শিল্পাঞ্চলে তারা প্রতিদিন যে ৫০০ একর ফুট পানীয় জল সরবরাহ করে থাকেন তা অব্যাহত থাকবে। পানীয় জলের কোনো রকম সমস্যা হবে না । শুধু তাই নয় পশ্চিমবাংলায় বোরো চাষের জন্য ৫০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে ।আগামী কাল এই পরিমাণ জল চাষের জন্য দেওয়া হবে। অর্থাৎ আসানসোল পুরসভায় হোক কিম্বা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর, আসানসোল ডিভিশনের রেল কর্তৃপক্ষ ,ইসকো বানপুর কারখানাই হোক কিম্বা বেসরকারি সংস্থা হোক , যারা ডিভিসির কাছে পানীয় জল চুক্তিভিত্তিতে নিয়ে থাকেন তাদের আগামী ১৫ই জুন পর্যন্ত জলের সংকট হবে না বলে জানান ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেতের দায়িত্বে থাকা এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল ) আঞ্জনি দুবে।
আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমর চট্টোপাধ্যায় কয়েকদিন আগে শ্রী দুবে কে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছিলেন যেহেতু গত বছরে ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেতের জলাধারে জল কম থাকায় চরম জলসংকট হয়েছিল। এবারে জলের কোন সমস্যা হবে কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে আঞ্জনি দুবে মঙ্গলবার এই সময়কে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন আমরা ওনাদেরও জানিয়ে দিয়েছি প্রতিদিন যে পানীয় জল তাদের দেওয়া হয় তা অব্যাহত থাকবে ।বৃষ্টি ত্রিশে জুন পর্যন্ত না হলেও কোন অসুবিধা নেই। পুরসভার চেয়ারম্যান অমর চট্টোপাধ্যায় বলেন ভয়ংকর গরম দাবদাহ চলছে ।তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় পানীয় জল অব্যাহত থাকবে কিনা তা চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম ডিভিসির কাছে। তারা আশার বাণী শুনিয়েছেন।
মঙ্গলবার এই সময়কে আঞ্জনি দুবে বলেন মাইথন জলাধারে এই দিন প্রায় ৪৬৯ ফুটে এবং পঞ্চেত জলাধারে প্রায় ৪০৬ ফুট জল আছে। অন্য বারের তুলনায় কিছুটা বেশি। এছাড়াও এই দিন আমরা বোরো চাষের জন্য পশ্চিমবঙ্গে ৫০০০ কিউসেক জল দিয়েছি। আগামী কালও তা দেওয়া হবে। তিনি জানান প্রাথমিকভাবে বলছি ১৫ই জুন, কিন্তু ৩০ শে জুন পর্যন্ত যদি বৃষ্টি নাও হয় তাহলেও আমরা আসানসোল শিল্পাঞ্চল সহ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বা ধানবাদ জেলায় যাদের পানিয় জল সরবরাহ করি তাদের জলের সমস্যা হবে না।
কিন্তু গত বছরে প্রচুর পরিমাণ জল কমে যাওয়ায় নদীতে পাথর বেরিয়ে পড়েছিল এবং নৌকোগুলো যেখানে থাকার কথা তার থেকে নদীর অনেক ভেতরে কাঁদায় গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে শ্রী দুবে বলেন গত বছরে বারবার ঝড়-বৃষ্টি আচমকা হওয়াতে সমগ্র দামোদর এলাকায় প্রচুর পরিমাণ জল জমে যাচ্ছিল ।স্বাভাবিকভাবেই দামোদর ভ্যালি রিভার অপারেশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো জল ছাড়া হয়েছিল বাঁধ ঠিক রাখার কারণে। এর ফলে বাঁধে জলের পরিমাণ কম হয়েছিল।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রূপম ঘোষ বলেন আমরা দামোদর থেকে যে জল তুলছি কল্যানেশ্বরী বা অন্য প্রকল্পে সেখানে আমাদের জলের কোন ঘাটতি নেই। ডি ভি সি থেকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা আধিকারিক গোরাচাঁদ মন্ডল বলেন আমি দীর্ঘ কয়েক দশক মাইথনে চাকরি করতে গিয়ে দেখেছিলাম গত বছর যে জল সংকট গরমের সময় হয়েছিল তা অতীতে কখনো হয়নি। এবার এখনো পর্যন্ত নদীর উপর মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধে যথেষ্ট পরিমাণ জল আছে। কিন্তু নদীর ধারে ধারে বিশেষ করে যেখানে পর্যটকরা আসেন এবং নৌকায় যাতায়াত করেন সেখানে কিছুটা জল শুকোচ্ছে।