ASANSOL

বেসরকারি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার ডাকাতির ঘটনা, হুগলির জেল থেকে ধৃত দুজনকে আসানসোল আদালতে পেশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* আসানসোলের জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় সংলগ্ন ভাঙ্গাপাঁচিল এলাকায় বেসরকারি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থা ” মুথুট ফিনকর্প” এ ডাকাতির ঘটনায় ধৃত দুজন গুডু কুমার ওরফে রাজ ও বিট্টু কুমার ওরফে ছটুকে বৃহস্পতিবার আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়। এদিন তাদেরকে পুলিসের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে হুগলির চন্দননগর জেল থেকে আসানসোল আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই নিয়ে তৃতীয়বার এই দুজনকে এই ডাকাতির ঘটনায় আসানসোল আদালতে পেশ করা হলো।
এদিন এই মামলার সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ২৯ মে আবার আসানসোল আদালতে পরবর্তী শুনানি হবে বলে বিচারক নির্দেশ দেন। শুনানি শেষে, দুজনকে আবার পুলিশ পাহারায় হুগলি নিয়ে যাওয়া হয়।


প্রসঙ্গতঃ, ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ভর দুপুরে আসানসোলে শহরের এই বেসরকারি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার শাখায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছিলো। চারজন সশস্ত্র ডাকাত শাখায় অতর্কিতে ঢুকে শাখার আধিকারিক সহ কর্মীদের গান পয়েন্ট নিয়ে ১২ কেজি সোনার গয়না ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুঠ করে চম্পট দেয়।ডাকাতদের ভেতরে ঢোকা থেকে, নিরাপত্তা রক্ষীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া সব কিছুই শাখার সিসি ক্যামেরায় চলে আসে। আসানসোল দক্ষিণ থানার অদূরে একবারে জিটি রোডের দিনের বেলায় একেবারে ফিল্মি কায়দায় এই ডাকাতির ঘটনা গোটা এলাকা সহ আসানসোল শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
চার ডাকাতের মুখে মাস্ক পড়া ছিলো। সবাই হিন্দিতে কথা বলেছিলো। শাখায় থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় যে, ডাকাতরা দুপুর দুটো বাজার এক মিনিট আগে শাখায় ঢুকছিলো। ২০ মিনিটের মতো ডাকাতরা শাখার ভেতরে ছিলো।


দুপুর দুটো নাগাদ সোনার গয়না রেখে ঋণ নেওয়ার নাম করে এক যুবক ভেতরে ঢোকে । ঠিক পরে আরো তিনজন বন্দুক নিয়ে ভেতরে ঢুকে ধাক্কা মেরে ঠেলে ফেলে দেয় নিরাপত্তা রক্ষীকে। তখন শাখার ভেতরে চারজন কর্মী ও একজন গ্রাহক ছিলেন। এরপর ডাকাতরা বন্দুক দেখিয়ে সবাইকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে একটি ঘরে আটকে রাখে। সবার মুখে সেলোটেপ আটকে দেওয়া হয়। এরপর ডাকাতরা ম্যানেজার সহ অন্যদের মারধর করার পর, লকারের চাবি নিয়ে ব্যাগে সোনা ও নগদ টাকা ভরে পালিয়ে যায়। তৎকালীন শাখার ম্যানেজার সৈকত দাস পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ডাকাতরা ১২ কেজির মতো সোনা এবং নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুট করেছে। লুট হওয়া সোনার বর্তমান বাজারদর সাড়ে ৫ কোটি টাকার মতো।


আসানসোলের এই ঘটনার পরে হুগলিতে একই সংস্থার শাখার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতি করে পালানোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় এই বিট্টু কুমার ওরফে ছটু ও গুড্ডু কুমার ওরফে রাজ। তদন্তে নেমে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসানসোলের ঘটনার সঙ্গে তাদের যোগ থাকার সূত্র পায়। তারপর তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। এই দুজন তখন থেকেই হুগলির জেলে রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *