‘কালীঘাটের কাকু’গ্রেফতার, প্রায় ১২ ঘন্টা জেরার পর ইডি-র জালে
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ‘কালীঘাটের কাকু’র ভূমিকা জানতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করেছিল ইডি
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায় : Breaking:
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার গ্রেফতার করা হল ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। মঙ্গলবার
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ‘কালীঘাটের কাকু’কে গ্রেফতার করেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তথ্য গোপন ও তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
এদিন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ‘কালীঘাটের কাকু’র ভূমিকা জানতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করেছিল ইডি। সকাল ১১টা নাগাদ তিনি সেখানে পৌঁছে যান। তারপর থেকেই সুজয়কৃষ্ণকে জেরা চালাতে থাকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা। প্রায় ১২ ঘন্টা ম্যারাথন জেরার পর ইডি-র জালে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় ধৃত তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষের মুখে প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম উঠে এসেছিল। পরে গোপাল দলপতির মুখেও এই ব্যক্তির নাম শোনা গিয়েছিল। তারপরই ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি অভিযান চালায় তাঁর বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং তথ্য হাতে আসে গোয়েন্দাদের। তাঁর দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের কথা সামনে আসে। এই তিনটি কোম্পানিই আর্থিক তছরুপের সঙ্গে জড়িত বলে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর।
এই তিন সংস্থার সঙ্গে কালীঘাটের কাকুর কী সম্পর্ক? সেটাই ম্যারাথন জেরায় জানতে চাইছে ইডি-র তদন্তকারীরা। এরপরই গোয়েন্দাদের আতসকাচের তলায় আসেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
জানা গিয়েছে, এই তিন সংস্থার আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তলব করে তাদের যে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সেইগুলোর সঙ্গেই মঙ্গলবার কালীঘাটের কাকুকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু সদুত্তোর মেলেনি বলে ইডি সূত্রে খবর। তারপরই সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ‘কালীঘাটের কাকু’কে আদালতে পেশ করবে ইডি। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
উল্লেখ্য, এর আগে সিবিআই ‘কালীঘাটের কাকু’কে দুই’বার তলব করেছিল। প্রথম বার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তবে পরের বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠান।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মে, তাঁর বেহালার বাড়ি ও ফ্ল্যাটে হানা দেয় সিবিআই। সূত্র মারফত খবর সেই সময় ‘কাকু’র বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে তদন্তে নামে ইডি। ‘কালীঘাটের কাকু’র বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে দেড় হাজার পাতার নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। প্রায় ১২-১৩টি মোবাইল ফোনের সন্ধানও পায় কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা।