ASANSOL

কয়লা পাচার মামলা : জেলে গিয়ে জেরার অনুমতি পেলো সিবিআই, দ্বিতীয় চার্জশিটে নাম থাকা ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর ও সিআইএসএফের ইন্সপেক্টরের আবারও জামিন নাকচ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ কয়লা পাচার মামলায় সোমবার আবারও জামিন নাকচ হলো প্রাক্তন ইসিএল কর্তা ও সিআইএসএফ ইন্সপেক্টরের। তাই আরো ১৪ দিন আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারে থাকতে হবে ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর টেকনিক্যাল ( অপারেশন তথা ভারপ্রাপ্ত সিএমডি বা চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর) সুনীল কুমার ঝাঁ ও সিআইএসএফের ইন্সপেক্টর আনন্দ কুমার সিংকে। কয়লা পাচার মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিটে নাম থাকা এই দুজনকে ১৪ দিন হেফাজত শেষে সোমবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। এদিন দুপক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শেষে দুজনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আগামী ২৬ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এদিন সিআইএসএফ ইন্সপেক্টরের কোন জামিনের আবেদন করা হয় নি। যদিও ইসিএলের প্রাক্তন কর্তার জামিনের আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী বিভাষ বন্দোপাধ্যায়।


আইনজীবী বিচারকের কাছে এদিন তার যে কোন শর্তে জামিন দেওয়ার আবেদন করেন। সওয়াল করে বলা হয়, তিনি বয়স্ক। শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তিনি অনেক আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু সিবিআইয়ের তরফে আগের দিনের মতোই ” প্রভাবশালী ” তত্ত্বে তার জামিনের বিরোধিতা করেন আইনজীবী রাকেশ কুমার। তিনি বলেন, এখনো তদন্ত বাকি আছে। নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। সেই সবকিছু পরীক্ষা ও যাচাই করা দরকার। এমন ক্ষেত্রে তাদেরকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত ব্যহত হবে। সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হতে পারে। তাই তাদের জামিন নাকচ করে জেল হেফাজত পাঠানো হোক। পাশাপাশি এদিন সিবিআইয়ের তরফে প্রাক্তন ইসিএল কর্তা ও সিআইএসএফ ইন্সপেক্টরকে জেলে গিয়ে জেরা জন্য আবেদন করা হয়েছিলো। বিচারক তা মঞ্জুর করেন।


এদিন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শুনানির সময় ইসিএল কর্তার একটি দামী গাড়ি ও সম্পত্তির কথা বিচারকের কাছে বলা হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির তরফে দাবি করা হয়, এগুলোর স্বপক্ষে যা তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা মিলছে না। গরমিল রয়েছে। কিন্তু তার আইনজীবী পাল্টা সওয়ালে বলেন, আমার মক্কেল এতবড় একটা পদে চাকরি করতেন। বিভিন্ন ভাবে টাকা নিয়ে তিনি এইসব কিছু করেছেন। তাতে কোন অস্বচ্ছতা নেই। 
জানা গেছে, প্রাক্তন ইসিএল কর্তার এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি।
         প্রসঙ্গতঃ গত ১১ মে নোটিশ দিয়ে সুনীল কুমার ঝাঁ ও আনন্দ কুমার সিংকে সিবিআই জেরার জন্য কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায়। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে সেদিন রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন শুক্রবার ১২ মে তাদেরকে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করে চারদিনের হেফাজত নিয়েছিলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারপর থেকে তারা আসানসোল জেলে রয়েছেন।


উল্লেখ্য, এই কয়লা পাচার মামলায় ২০২২ সালের ১৯ জুলাই সিবিআই প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিলো আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। তাতে ৪১ জনের নাম ছিলো। তারমধ্যে ৩৯ জন এখন জামিনে বাইরে আছে। বাকি ২ জনের মধ্যে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা সুপ্রিম কোর্টের রক্ষা কবচে আছে। পলাতক রয়েছে। বিনয় মিশ্র। এর ১০ মাস পরে গত ২০ মে সিবিআই এই মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাতে নাম রয়েছে সুনীল কুমার ঝাঁ ও আনন্দ কুমার সিংয়ের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *