রানীগঞ্জের সেই পেতলের রথের রথযাত্রা এবার ১০০ তম বর্ষে পদার্পণ করল
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : ( Historical RATHYATRA of Raniganj ) সুবিশাল ঐতিহ্যবাহী রানীগঞ্জের পেতলের রথ যা শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয় সারা ভারতের মধ্যে সর্ববৃহৎ এই পেতলের রথ। যা রানীগঞ্জের গর্ব, সেই পেতলের রথের রথযাত্রা এবার ১০০ তম বর্ষে পদার্পণ করল। রানীগঞ্জের রাজ পরিবারের দাবি, এটি শুধু ভারতেই নয় বিশ্বের মধ্যে এই রথ সর্ববৃহৎ রথ। যে রথের মধ্যে রয়েছে রামায়ণ–মহাভারতের বিভিন্ন কথা, তুলে ধরার জন্য নানান সব মূর্তি। আর সকল এই মূর্তি রথের গায়ে তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই রথযাত্রায়, রথের দড়িতে হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষজন টান দিয়ে, রথ কে নূতন রাজবাড়ী থেকে পুরাতন রাজবাড়ীতে নিয়ে গেল ।
কথিত আছে রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজবাড়ীর রাজ পরিবারের সদস্যরা পূর্বে গ্রামে কোন উৎসব না থাকায় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার দিনে সিয়ারসোলে কাঠের রথ তৈরি করে রথযাত্রা শুরু করেন। তবে তা রক্ষণাবেক্ষণের সময় হঠাতই আগুন ধরে যাওয়ায় ১৯২৩ সালে গোবিন্দপ্রসাদ পন্ডিতের মেয়ে হরসুন্দরী দেবী মহেশের রথের অনুকরণে তৈরি করেন পেতলের রথ। এই রথে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার সাথেই অধিষ্ঠিত হন, রাজ পরিবারের কুল দেবতা দামোদর চন্দ্র জিও। পূর্বে এই রথের মেলাতে গ্রামীণ সব সামগ্রী কেনাবেচার চল থাকলেও বর্তমানে আধুনিক সব সামগ্রীর সাথেই গ্রামীণ সব চাষবাসের সামগ্রী নিয়ে হাজির হন বিক্রেতারা। এবারের মেলায় প্রায় আড়াইশোটিরও বেশি স্টল হয়েছে। যেখানে খাদ্য রসিকদের জন্য রয়েছে নানান রকমারি খাবারের সাথেই বাড়ি সাজিয়ে তোলার নানান সামগ্রী।
প্রতিটি বছরই এই রথের মেলাতে কেন্দ্র করে রানীগঞ্জের মানুষজনের একটা আলাদা আবেগ কাজ করে, সুবিশাল এই পেতলের রথে দেখতে প্রতিবছরই ভিড় জমায় হাজারো হাজার ভক্ত, এবারেও সেই ভিড় লক্ষ্য করা গেল রথের মেলাতে কেন্দ্র করে। বড়দের সাথে ছোটরাও এদিন দাবি করে যে বছরের অন্যান্য উৎসবে থেকে রথের মেলাটাই যেন তাদের কাছে সব থেকে বড় উৎসব। এই দিনটার জন্য তারা বছরভর অপেক্ষা করে থাকে, যা নিয়ে নানা কথা জানিয়ে দিল রথের মেলা দেখতে আসা ভক্তরা।