ASANSOLKULTI-BARAKAR

আসানসোল পুরনিগমের ৭৩ নং ওয়ার্ডে আতঙ্ক, ধসে রাস্তায় বড়সড় ফাটল ও গর্ত

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল ও কুলটি, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ( Asansol News Today ) আসানসোল পুরনিগমের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটি বিধানসভার আলডি গ্রামে আবার ধসের ঘটনা ঘটলো। বুধবার সকালের পর থেকে এই ধস নামা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় রাস্তা থেকে সর্বত্র এই ধসের জেরে এলাকায় ফাটল তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধসের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এবার ধসে আলডি গ্রামের প্রধান রাস্তা ,দুটি দোকান , কমিউনিটি সেন্টার একাধিক বাড়ি ও মাঠে ফাটল দেখা দিয়েছে। এলাকায় এতটাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে রাতভর গ্রামের হাজার পাঁচেক মানুষ ঘুমোতে পর্যন্ত পারেনি। বুধবার সকালে ধস নামা শুরু হলেও সন্ধ্যের পর থেকেই তা ভয়ংকর আকার নেয়। ফাটল বেড়েই চলে। ফেটে গেছে জলের লাইনও। যার ফলে গ্রামের জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, এই এলাকায় কয়লাখনি জাতীয়করণের আগেই বেসরকারি কয়লা কোম্পানি কোলিয়ারি থেকে কয়লা তুলতো । স্থানীয় মানুষের দাবি, এখানে বাম আমলে ব্যাপকভাবে অবৈধ ভাবে কয়লা কাটা হয়েছে,। যার ফলে এই এলাকায় বারবারই ধস নামে। এর আগে ধস নেমেছিল মন্দিরের রাস্তায়। ক্ষতি হয়েছিল মসজিদের কাছের এলাকাও।


যে রাস্তায় বুধবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রায় দেড়শো মিটার জুড়ে বড় ধরনের ফাটল ও গর্ত তৈরি হয়েছে সেই কংক্রিটের রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল ২০২২ সালে ।
এই এলাকার বাসিন্দা সুনীল সিং বলেন, ধসে নতুন রাস্তাটা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে জলের পাইপ লাইনেও ফাটল হয়েছে। চরম জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে । তিনি আরো বলেন, এই রাস্তা দিয়েই বেজডি, আলডি, মিঠানি ও পাটমোহনার হাজার হাজার মানুষেরা নিয়ামতপুরে যান। এখন ভয়ে ও ধসের জেরে বেহাল রাস্তার কারণে লোকজনেরা যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। ফাটল রাস্তার চারপাশে ফিতে দিয়ে ঘিরে বন্ধ করে রাখান হয়েছে।


মহঃ আয়ুস নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, এখানে এমন জায়গায় ধস হয়েছে যাতে রাস্তার ওপারে মন্দির, ঈদগায় আর যাওয়া যাবে না। অনেক আগে এখানে বড় ধরনের আরো ধস নেমেছিল। ইসিএল কর্তৃপক্ষকে আমরা বারবার বলেছি বালি দিয়ে ভরাট করা হোক। তাহলে হয়তো কিছুটা আতঙ্ক কমবে ।গতকাল রাতে এখানকার কোনও মানুষ ঘুমোতে পারেননি আতঙ্কে।
৭৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি উদয় কর্মকার বলেন, ২০০৯-১০ সাল পর্যন্ত এখানে অবৈধ খননের কারণে বারবার ধস নেমেছে। ইসিএলকে অনেকবার বলেও কোন লাভ হচ্ছে না। সুন্দর তৈরি করা রাস্তাটাও এবার ভেঙে গেল। রাস্তা মেরামতের আগে বালি দিয়ে ভরাট না করলে হয়তো আবার এমন ঘটনা ঘটবে।


এই ওয়ার্ডেট কাউন্সিলার সুনিতা বাউরি বলেন, আমার জন্মের আগে এখানে একবার বড় ধরনের ধসের খবর শুনেছিলাম। তারপর মাঝেমধ্যে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে। ইসিএলকে প্রত্যেক বার জানানো হয়। এত বড় ঘটনার পরেও ইসিএলের কাউকে এলাকায় দেখা মেলেনি । ফলে এই গ্রামে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে আছে। নিয়ামতপুরে যাওয়ার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি নিচে মনে হয় বড় ধরনের গর্ত তৈরি হয়েছে। অবশ্যই সেটা বালি ভরাট করা উচিত। এলাকার মানুষের পুনর্বাসনের দাবি মেনে ইসিএল কতৃপক্ষের তার ব্যবস্থা করা উচিত।
এই প্রসঙ্গে ইসিএল কতৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *