ASANSOL

ট্রেনে ” অ্যালার্ম চেইন ” টানার ঘটনা বাড়ছে, ৬ মাসে ধৃত ৪৬৮ জন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ভারতীয় রেল সারাদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত ট্রেনগুলির সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, তারই মধ্যে ‘ অ্যালার্ম চেইন পুলিং বা অ্যালার্ম চেন টানা ” র (এসিপি) ঘটনা বাড়ছে। আর এর বিপদ ভারতীয় রেলের জোনাল তথা জাতীয় পর্যায়ে ট্রেন চলাচলে বিলম্বিত বা দেরী ( ডিলেইড অপারেশন) অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।


রেল সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে (অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে এই চেইন টানার ঘটনায় মোট ৪৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২.৬২ লক্ষ টাকা জরিমানা বাবদ তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। অ্যালার্ম চেইন টানার জন্য ৪৭৬ টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এই ৬ মাসে। এই চেইন টানার ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বা প্রভাবিত হয়েছে যে ট্রেনগুলো সেগুলো হল, ১২৩৫২ ডাউন রাজেন্দ্রনগর – হাওড়া এক্সপ্রেস, ১৮১৮৩ আপ টাটানগর – দানাপুর এক্সপ্রেস, ১৫০২৭ আপ মৌর্য এক্সপ্রেস, ১৮১৮৪ ডাউন দানাপুর – টাটানগর এক্সপ্রেস, ১৩২৮৮ ডাউন দক্ষিণ বিহার এক্সপ্রেস ও ১২৩০৪ ডাউন পূর্বা এক্সপ্রেস।

আরো জানা গেছে, পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের বেশিরভাগ অ্যালার্ম চেইন পুল বা টানার জন্য প্রভাবিত হওয়া স্টেশন ও সেকশানের সংখ্যা একাধিক। স্টেশন গুলো হল জসিডি, আসানসোল, দুর্গাপুর, জামতারা ও মধুপুর। সেকশানর মধ্যে রয়েছে কাসিটাঁড়-বিদ্যাসাগর, সালানপুর-সীতারামপুর, বোদমা-জামতারা, তুলসীটাঁড়-লাহাবন ও আসানসোল-নিমচা।

যদি এসিপি বা অ্যালার্ম চেইন টানার ঘটনা স্টেশনে হয়ে থাকেন, তবে সেখানে কর্তব্যরত আরপিএফের কর্মীদেরকে ঐ ট্রেনের কোচে যেতে হবে। এসিপি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করতে হবে। কিছু প্রিমিয়াম ট্রেনে অন ডিউটি ​​মেকানিক্যাল (ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন) কর্মীদেরকে অ্যালার্ম চেইন টানার পরে সেই কোচে যেতে হয় ও ডিভাইস রিসেট করতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্রেনের গার্ড ও ড্রাইভারকে এসিপির ঘটনা ঘটার পরে সেখানে উপস্থিত থাকতে হয়। এর ফলে সংশ্লিষ্ট ট্রেন আটকে রাখা হয়। যে কারণে ঐ সেকশানে ঐ সময়ে পরবর্তী ট্রেনগুলির সময় নষ্ট হয়।

রেলের তরফে এও বলা হচ্ছে যে, বৈধ কারণ ছাড়াই চেইন টানা ভারতীয় রেলওয়ে আইনের ১৪১ নং ধারার অধীনে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যা অনুযায়ী যদি কোনো যাত্রী ট্রেনের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে কর্মীদের এবং যাত্রীদের মধ্যে যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করে, কোনো পর্যাপ্ত কারণ থাকলে, সেই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। তা হলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। অনেক ক্ষেত্রে দুটি সাজাই হতে পারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া যাত্রীর। অ্যালার্ম চেইন টানার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় রেল স্টেশন চত্বরে ও ট্রেনে পোস্টার সাঁটিয়ে সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। পাশা পাশি অ্যালার্ম চেইন পুলিংয়ের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করতে যাত্রীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণও শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *