আসানসোল ডিভিশনে তিনটি নতুন জংশন এবং একটি আধুনিক কেবিনের, অন্ডাল থেকে শোনপুর পর্যন্ত পণ্যবাহী নতুন রেল লাইনের অনুমোদন মিলল
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল : ( Asansol Latest News ) ৪৩১ কোটি টাকায় আসানসোল রেলস্টেশনকে বিশ্বমানের গড়ে তোলা কাজ শুরুর সাথে সাথেই এবার আসানসোল রেল ডিভিশন তিনটি নতুন জংশন স্টেশন তৈরির অনুমোদন পেল। একইসঙ্গে কালি পাহাড়ি এলাকায় একটি বড় অত্যাধুনিক রেলকেবিন তৈরি হবে। রেল মন্ত্রক আসানসোল ডিভিশনের অন্ডাল রেলস্টেশন থেকে বিহারের শোনপুর পর্যন্ত ৩৭৪. ৫ কিলোমিটার পণ্যবাহী আরো দুটি রেললাইন নির্মাণের কাজের অনুমতি দিয়েছে। এজন্য রেল মন্ত্রক মোট ১৩ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে বলে এই সময়কে জানান পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।
কৌশিকবাবু বলেন আসানসোল ডিভিশনে নতুন যে তিনটি জংশন রেলস্টেশন তৈরি হবে সেগুলি হল নিউ অন্ডাল এবং ঝাড়খন্ডের আসানসোল লাগোয়া নিউ মুগমা ও নিউ প্রধানখন্তা স্টেশন ।এছাড়াও এই নতুন পণ্যবাহী লাইনে ঝাড়খন্ড এলাকায় আরো যে তিনটি রেলজংশন স্টেশন আকারে নতুন করে তৈরি হবে। সেগুলি হল নিউ গোমো ,নিউ কোডার্মা এবং নিউকাস্তা স্টেশন বলে ধানবাদ ডিভিশন সূত্রে জানা গেছে।
কৌশিক বাবু বলেন আসানসোল ডিভিশনের অন্ডাল থেকে প্রধানখন্তা ১০১কিলোমিটার। এদের মধ্যে পশ্চিম বর্ধমান জেলাতেই ৪০ কিলোমিটারে মতো রেললাইন তৈরি হবে। এই নতুন দুটি রেললাইন যুক্ত হলে হাওড়া দিল্লি ভায়া ধানবাদ সেকশনে চারটি রেললাইন হয়ে যাবে এবং এজন্য জমি অধিগ্রহণের ৯৮% সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন এর ফলে যেহেতু ডেডিকেটেড থ্রেট করিডোর হওয়ায় ওই নতুন দুই লাইন দিয়ে মালগাড়ি অনেক বেশি গতিতে যাতায়াত করবে ।তাছাড়া দ্রুত দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ইসিএলের কয়লা ,ইস্কো বা দুর্গাপুর ইস্পাতের কারখানার ইস্পাত বা এখানকার সিমেন্ট কারখানাগুলোর কাঁচামাল অথবা সিমেন্ট অন্যান্য মাঝারি ইস্পাত কারখানা গুলি বা ছোট কারখানা গুলির জিনিসপত্র দ্রুত গতিতে সারা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যাবে ।
পাশাপাশি কৌশিক বাবু বলেন বর্তমানে যাত্রীবাহী ট্রেনের লাইনেই মাল গাড়ি গুলো চালানো হয় বহুক্ষেত্রে। আলাদা করে পণ্যবাহী মাল গাড়ির লাইন তৈরি হয়ে গেলে যাত্রী ট্রেনের গতিও অনেক বেশি বাড়ানো যাবে এবং যাত্রী ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। কালিপাহাড়ি এলাকায় নতুন যে অত্যাধুনিক কেবিন তৈরি হবে তা থেকে আধুনিক ট্রেন অপারেশনের ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। তিনি বলেন আপাতত ঠিক হয়েছে এই কাজ শেষ হতে ৫ বছর সময় লাগবে। তিনি জানান অন্ডাল স্টেশনে নতুন যে জংশন স্টেশন হবে সেখানের সাথেই যুক্ত হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের বড় অংশ। স্বাভাবিকভাবেই ওই সেকশনে মাল পরিবহন বা যাত্রী পরিবহনেও আরো গুরুত্ব বাড়বে।
আসানসোল ডিভিশনের এক রেল আধিকারিক জানান হাওড়া থেকে ধানবাদ গয়া হয়ে দিল্লী পর্যন্ত এই রুটে প্রধানত রাজধানী এক্সপ্রেস ,কালকা মেল সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যে ট্রেনগুলি আছে এর ফলে তাদেরও গতি বাড়ানো সম্ভব হবে । সর্বোপরি স্থানীয় ভিত্তিতে বিভিন্ন সময় লোকাল ট্রেন গুলি লাইন খালি না থাকায় বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে। তাই নিয়ে মাঝে মধ্যে যাত্রীবিক্ষোভ হয়। এই নতুন ব্যবস্থা চালু হলে তাও বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায় ।আসানসোল চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শম্ভু ঝা এবং ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ খৈতান বলেন এতে পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশের ক্ষেত্রে যেমন লাভ হবে। তেমনি মালগাড়িতে মাল পাঠানোয় এখন যতটা করে সময় লাগে তার চেয়ে কম সময় মাল পাঠানো যাবে ।সর্বোপরি যাত্রী ট্রেনের সংখ্যা বাড়লে এই ব্যবস্থায় সাধারণ যাত্রীরা লাভবান হবেন। তাছাড়াও অন্ডাল এর কাছে বিমানবন্দর থাকায় এবং এই স্টেশন গুলির পাশ দিয়ে আমাদের ১৯ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক থাকাতেও মাল ওঠানামার ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা মিলবে।