ASANSOL

ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা, হয়রানি গ্রামের মানুষদের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুর কতৃপক্ষের।
আসানসোল পুরো এলাকা অর্থাৎ শহরের মানুষদের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি পুরনিগমের ৫ টি আরবান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য এত ভাবনা-চিন্তা করা হলেও জেলার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বুধবার পর্যন্ত ডেঙ্গি পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা হয়নি। এর ফলে গ্রাম এলাকায় কারোর ডেঙ্গু পরীক্ষা করার প্রয়োজন হলে তাদের আসানসোল জেলা হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। সেখানেও যে রোগীর চাহিদা মত ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, এমন অভিযোগ লিখিতভাবে মঙ্গলবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খানের কাছে জানান সালানপুর ব্লকের বাসিন্দা দিনমজুর সুবোধ পাল।

তিনি বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমার জ্বর হওয়ায় আমি পিঠাইকেয়ারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গত ২৪ সেপ্টেম্বর যাই। সেখানে চিকিৎসক তাকে ডেঙ্গু , ম্যালেরিয়া সহ সমস্ত রক্তের পরীক্ষা করার জন্য বলেন। পরের দিন তিনি আবার ঐ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে সেখানে কেবল তার ম্যালেরিয়ার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। ডেঙ্গুর পরীক্ষার জন্য তাকে আসানসোলের জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি সেদিনই সঙ্গে সঙ্গে জেলা হাসপাতালে সেখানে যান। কিন্তু গিয়ে লাইনে প্রায় ১০০ জনকে দেখে জানতে পারেন সকালবেলা টোকেন দেওয়া হয়েছে পরীক্ষার জন্য। তার কাছে টোকেন নেই। তাই হবে না। এরপর তিনি ফিরে আসেন ।

তার অভিভাবক দুর্গা শংকর চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলে বলেন, তাহলে ডেঙ্গুর মশা কি কেবল শহরেই থাকে। গ্রাম বা ব্লক এলাকা গুলিতে থাকে না ? গোটা বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও সালানপুরের বিডিওর কাছে বিষয়টি জানান হয়। সালানপুরের বিডিও অদিতি বসু সঙ্গে সঙ্গে ব্লক মেডিকেল অফিসার অফ হেল্থ বা বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলেন। কিভাবে এই কাজ হবে তাও বিএমওএইচকে দেখতে বলেন।


অন্যদিকে, জেলার সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান বলেন, আমরা ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ৯টি যন্ত্র পেয়েছিলাম। সেগুলি আসানসোল জেলা হাসপাতাল ও দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মতো আরবান এলাকায় দিয়েছি। ব্লক এলাকায় তুলনামূলকভাবে ডেঙ্গুর সংখ্যা কম। তাই জেলার আটটি ব্লকের কোথাও আমরা এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য কোন মেশিন দিতে পারিনি বা ব্যবস্থা করা যায়নি। বারাবনির কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিএমওএইচ নাজিন রহমান বলেন, এখানে ডেঙ্গুর পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। কোন রোগীকে প্রাথমিক পরীক্ষায় সন্দেহ হলে আমরা তাদেরকে জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছি।


জেলা হাসপাতালে সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, এখানে প্রতি দিন যথেষ্ট সংখ্যায় ডেঙ্গুর পরীক্ষা করে থাকি। টোকেনের বিষয়টা কি এটা আমি জানিনা। খোঁজ নিয়ে দেখব। ব্লকগুলো থেকে রোগীদের না পাঠিয়ে তাদের রক্তের স্যাম্পেল যদি বিশেষ বাক্স করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তার পরীক্ষা করে ব্লকেই জানিয়ে দিতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *