ASANSOL

আসানসোলের অন্যতম সেরা ঐতিহ্যবাহী পুজো হলো রেলওয়ে ট্রাফিক কলোনি দুর্গা পুজো

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল : আসানসোল শিল্পাঞ্চলের শহরের বুকে কিছু প্রাচীন পূজা গুলির মধ্যে অন্যতম সেরা ঐতিহ্যবাহী পুজো হলো রেলওয়ে ট্রাফিক কলোনি দুর্গা পুজো ১৩৪১ সনে (১৯৩৪) সালে রেলওয়ে ট্রাফিক কলোনিতে স্বর্গীয় অমূল্য রতন ঘোষ, স্বর্গীয় সুপ্রসন্ন বোস, ডক্টর বি এন রায় এবং স্বর্গীয় কিরীটি গাঙ্গুলী মহাশয়দের হাত ধরে প্রথম এই দুর্গা পূজার পথচলা শুরু, দেখতে দেখতে সেই পুজোই আজ অনেকটা পথ পেরিয়ে ৯০ তম বর্ষে পদার্পণ করতে চলেছে, এই পুজোকে কেন্দ্র করেই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এক অদ্ভুত উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই ঐতিহ্যকে এখনো বহন করে চলেছে।


ইতিহাস থেকে জানা যায় এই পূজার এক অপূর্ব মাহাত্ম্য রয়েছে প্রবর্তনের সময় থেকেই একচালা তেই দুর্গা, সরস্বতী লক্ষ্মী এবং গণেশের আরাধনা শুরু হয়। এই পুজোর বিশেষত্ব হলো কার্তিক এবং গণেশের অবস্থান উল্টো অর্থাৎ ধনো দেবী লক্ষ্মীর সাথে কার্তিক এবং বাগদেবী সরস্বতী সাথে সিদ্ধিদাতা গণেশ অধিষ্ঠিত। কথিত আছে কৃষ্ণনগর থেকে আগত মৃৎশিল্পীদের ভাম্য দোষে গণেশ এবং কার্তিকের স্থানের অদল বদল ঘটে, সেই ভুল সুরাহার উদ্যোগ নিলে মা স্বপ্নাদেশ দেন কোনরকম পরিবর্তনের দরকার নেই, মা তাতেই সন্তুষ্ট। প্রথা মেনে আজও একচালা কাঠামোতেই মাকে আহ্বান করা হয়।

যথ সামান্য ব্যয় যে পুজো আজ থেকে 90 বছর আগে এই সম্পন্ন হয়েছিল তার আকার এবং আয়তন উভয়ই প্রতিপত্তি লাভ করেছে। বর্তমানে এই কমিটির প্রেসিডেন্ট শ্রী ব্রজগোপাল ঘোষ, ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রী সুজয় দাস, ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট শ্রী বিপ্লব সরকার, সাধারণ সম্পাদক শ্রীরাম প্রসন্ন ঘোষ, কালচারাল সেক্রেটারি শ্রী ভানু বোস, ট্রেজারার অনির্বাণ গুহ, পুজো সেক্রেটারি আছিস সরকার, চিপ অ্যাডভাইজার পীযুষ কুমার সহ সূর্য, ভিগু, জাবেদ, নাদিম, সাজাদ, বাপ্পা, পিকু, মাধব, কল্যাণ, সন্তোষএবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের তত্ত্বাবধানে পূজা সম্পন্ন হচ্ছে।

প্রতিবছর পবিত্র রথযাত্রা তে মাতৃ কাঠামোতে মৃত্তিকা দানের মাধ্যমে এই পূজোর সূচিত হয়, মহাষষ্ঠীতে দেবীর আহবান থেকে শুরু করে সপ্তমীর নবপত্রিকা স্নান, মহাঅষ্টমীতে দেবীর আরাধনা এবং সন্দীপুজোর বিশেষ রীতি মেনে দেবী দুর্গা পূজিত হন। এই পুজোর বিশেষ অঙ্গ হল নবমীতে কুমারী পুজো, যা এই পুজোর অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং এই চার দিন সন্ধ্যা আরতি এবং বিশেষভাবে ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মিলনস্থল হয়ে ওঠে এই পুজো প্রাঙ্গণ সর্বশেষে দশমীতে দেবীর বিহিত পূজা, নবপত্রিকা বিসর্জন এবং অপরাহ্নের সিঁদুর খেলা ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে ভারাক্লান্ত হৃদয়ে মাকে বিদায় জানানো হয়। সেই সঙ্গে আবার আগামী বছরের প্রতীক্ষা

বেশ তবে এই রইল কথা
আসছে বছর আবার হবে
ফিরবে মা যে, জ্বলবে আলো
প্রাণ ভরে ফের বাঁচা হবে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *