বার্ণপুরে অবৈধভাবে দখল আবাসন উচ্ছেদে কড়া পদক্ষেপের বার্তা ইস্কো কতৃপক্ষের, এলাকা পরিদর্শনে বিশেষ কমিটি
বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* সেইল আইএসপি বা ইস্কো কারখানার অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া কোয়ার্টার বা আবাসন উচ্ছেদের অভিযানকে এগিয়ে নিতে গঠিত বিশেষ কমিটি মঙ্গলবার বার্নপুরের কয়েকটি পরিদর্শন করে। ইস্কো কারখানার জিএম বা মহাপ্রবন্ধক (এস্টেট) মহেশ বার্নওয়ালের নেতৃত্বে এই কমিটি এদিন অবৈধভাবে দখল করে থাকা আবাসনে বসবাসকারী লোকদেরকে সচেতন করে। তাদেরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবাসনগুলি খালি করার জন্য ও কারখানা কতৃপক্ষকে এই ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য না করার আবেদন জানানো হয়।
কমিটির তরফে বার্নপুর সিনেমার কাছে কে/কেএস টাইপের দখল করে নেওয়া কোয়ার্টারগুলিকে দুই মাসের মধ্যে খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে কে-৫১ থেকে কে-৫৫, কে-৬৪ থেকে কে-৬৮ এবং কেএস-১ ব্লকগুলিকে অনেক আগেই নিরাপদ নয় বা বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই ব্লকগুলি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ভেঙে ফেলা হবে। যাতে সেখানে ইস্কো কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা যায়। এর জন্য সেখানে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে।
এদিন কমিটি কোয়ার্টার নম্বর জি-১৮/১ এবং এফ ৫/৬ ও পরিদর্শন করেছে। এগুলি অনুমোদন ছাড়াই দখল করে নেওয়া হয়েছে। সেখানে বাস করা বাসিন্দাদেরকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাতে তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে কোয়ার্টার খালি করতে বলা হয়েছে। যাতে কোয়ার্টারগুলি কর্মচারীদের হস্তান্তর করা যায়।
এরপর কমিটির তরফে অবৈধভাবে দখল করে থাকা কোয়ার্টার নম্বর এফ- সি/২ এর তালা ভেঙ্গে নতুন তালা লাগানো হয়। তা ছাড়া, একটি নোটিশও ঐ কোয়ার্টারে সাঁটানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে এই কোয়ার্টারটি আইএসপি টাউন এস্টেট বিভাগের অধীনে রয়েছে।
সবশেষে কমিটি বার্ণপুরের বারি ময়দানের কাছে ই/৫ নম্বর কোয়ার্টারটি পরিদর্শন করে। এই কোয়ার্টারটি অবৈধভাবে রাম মোহন রায়ের দখলে রয়েছে। কিন্তু তিনি এদিন উপস্থিত ছিলেন না। তাই কমিটির সদস্যরা ঐ কোয়ার্টারে মহিলাকে কোয়ার্টার খালি করার জন্য সতর্ক করেন।
ইস্কো কারখানা কতৃপক্ষের আরও কিছু আবাসন রয়েছে, যেগুলি টাউন এস্টেট বিভাগ নিয়ম অনুসারে কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ করে দিয়েছিলো। তবে কর্মচারীরা সেখানে প্রবেশ করার আগেই, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই খালি বাড়ির তালাগুলি দিনের আলোতে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। জোর করে দখল করা হয় বলে দাবি ইস্কো কতৃপক্ষের।
ইস্কোর বরাদ্দ করা, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খালি থাকা আবাসনগুলির তালা ভেঙে অবৈধ দখল নেওয়ার র্যাকেট বা চক্র গত কয়েক বছরে বার্নপুরে অনেক বেড়েছে। কিছু চক্র প্রকাশ্যে তা চালাচ্ছে। এইসব কোয়ার্টার দখলের পর বহিরাগত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা সর্বোচ্চ ভাড়া দিতে প্রস্তুত তাদেরই তা দিচ্ছে এই চক্র। যখন ইস্কো কর্মীরা আবাসন না পেয়ে ঘরে ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন এইসব চক্র জোর করে তা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে।
কোম্পানির অনুমোদনহীন কোয়ার্টারগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত করতে ইস্কোর টাউন এস্টেট বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীরা লাগাতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে, দখলমুক্ত করার কাজটা এই বিভাগের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা হচ্ছে।
ইস্কো বা সেইল আইএসপির মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার বলেন, কোম্পানির টাউন বিভাগ আবাসনগুলো অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ এইভাবে দখলের কারণে কোম্পানি তার বেশিরভাগ কর্মীদেরকে আবাসনের সুবিধা দিতে পারছে না।