মহাষষ্ঠীতেই দেদার মজা, প্যান্ডলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখলো আসানসোলের হোমের আবাসিকরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* পুজো শুরুর একবারে প্রথম দিন মহাষষ্ঠীতেই দেদার মজা। নতুন পোষাকে পড়ে হৈ-হুল্লোড় করতে করতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ইসমাইলের ” স্ব-শক্তি স্বধার গৃহ বা হোমের মেয়েরা ( ” হোম ফর অরফান এন্ড ডিসট্রেস ওম্যান”, ” Home for orfan & distress women ” ) এদিন আসানসোল ও বার্ণপুর শহরে বিভিন্ন পূজো মন্ডপ ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখলো। সঙ্গে ছিলো দেদার খাওয়া দাওয়া। আসানসোলের এই হোমের মেয়েদের দূর্গাপুজোর ঠাকুর দেখা এই নিয়ে ৯ বছর পড়লো। হোমের ওরা আজকের দিনটির দিকেই সারা বছর তাকিয়ে থাকে। কেননা হোমের নিয়মে নিরাপত্তার জন্য আর কোন সময় এইভাবে হোম থেকে বেরোতে পারেনা ! তাই ষষ্ঠীর দিনই ওরা ‘সব আনন্দ’ পুষিয়ে নেয়, এইভাবে বেরিয়ে। মামনি, রূপা, মাহি, শামিমা, বর্ণালী, সুস্মিতারা মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরে বেড়ালো এক প্যান্ডেল থেকে অন্য প্যান্ডেলে। ওরা এইদিনে এইভাবে দাপিয়ে বেড়িয়ে যেন বলতে চাইল, ” দ্যাখো একেই বলে উৎসব “, যেখানে অল্প আয়োজনই খুশীর প্রাণ-ভ্রমরা হিসাবে কাজ করে ৷ পুজোর বাকি চারদিনের সব আনন্দ অনূভূতি ওরা আজকের দিনটাতেই চেটেপুটে নিল ৷




আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় এমন একটা কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি হোমের মেয়েদের জন্য মিনিবাসের ব্যবস্থা করে করেছিলেন ৷
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এএসআই বা সহকারী সাব ইন্সপেক্টর সুরজিৎ সরকার হোমের মেয়েদের ঠাকুর দেখতে যাতে কোন সমস্যা না হয়, তারজন্য পুলিশী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দেন।
একবারে শুরুতেই হোমের মেয়েদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে আপ্যায়ন করলেন বার্ণপুরের পুরানহাট নব বিকাশ ক্লাব পরিচালিত পূজা কমিটির সদস্যরা৷ সবাইকে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে দেওয়া হয় মিষ্টির প্যাকেট। এরপর আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলার মিলন মন্ডল মিষ্টি সিঙ্গারায় জলযোগের আয়োজন করেছিলেন।
এইভাবে একে একে আসানসোলের বার্ণপুর রোডের
রবীন্দ্রনগর উন্নয়ন সমিতি , রাধানগর এ্যাথলেটিক ক্লাব , এ বি টাইপ, আপকার গার্ডেন, কল্যাণপুর হাউজিং হয়ে ট্রাফিক কলোনি। ট্রাফিক কলোনিতেও হোমের মেয়েদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। মেয়েদের রাতের খাবার বা নৈশকালীন আহারের ব্যবস্থা করেছিলো আসানসোলের ট্র্যাফিক রেল কলোনী সর্বজনীন পূজা কমিটি। সবশেষে হোমে ফেরা।
গোটা রাস্তায় আসানসোলের ইস্টার্ন রেলওয়ে হাইস্কুলের শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্রের সহযোগিতায় হোমের সুপারিন্টেন্ডেন্ট সেরিনা মন্ডল একবারে অভিভাবকের মতো মেয়েদেরকে আগলে রেখেছিলেন।
এই প্রসঙ্গে শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্র বলেন, হোমের মেয়েদের এই ঠাকুর দেখার ব্যবস্থায় যারা পাশে দাঁড়িয়েছেন বা সাহায্য করছেন তাদের অবদান কোন অংশে কম নয়। বিশেষত আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও মিলন মন্ডল ও নব বিকাশ এবং ট্রাফিক রেল কলোনি পূজা কমিটিও আমাদের পাশে ছিলো। তিনি আরো বলেন, আমরাও হোমের মেয়েদের মতো আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকলাম।