পশ্চিম বর্ধমানে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ করার দাবি তুলল রানীগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ: এবার পশ্চিম বর্ধমানে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ করার দাবি তুলল রানীগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স।ভারতজুড়ে ২৫ টি হাইকোর্ট রয়েছে, আর এবার তারই মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের শাসন ও আইনের প্রতিষ্ঠা বলবৎ করার লক্ষ্যে ও দীর্ঘমেয়াদী সব কেসে বহুবার যাতায়াতের বিষয় ও কেসের নিষ্পত্তি হতে দেরি হওয়ার বিষয় লক্ষ্য করে, এবার পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, ও নদীয়া —এই সমস্ত জেলা গুলিকে হাইকোর্টের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনার ক্ষেত্রে সুবিধা করার লক্ষ্যে, আসানসোল জেলা আদালতের সাথেই, পশ্চিম বর্ধমানের হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ করার অনুরোধ জানানোর জন্য, উদ্যোগ গ্রহণ করার লক্ষ্যে সচেষ্ট হল রানীগঞ্জের বণিক সংগঠন চেম্বার অফ কমার্স।
রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে ইতিমধ্যেই প্রায় ২ লক্ষ ৩৪ হাজারেরও বেশি কেস পেন্ডিং রয়েছে। যেগুলিকে নিষ্পত্তির জন্য বহুবার এই সকল এলাকাগুলি থেকে মানুষজনদের মামলা-নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কলকাতা হাইকোর্টে হাজির হতে হয়। আর তা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ ও দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া হওয়ার কারণে, মানুষজনেদের অনেক ক্ষেত্রেই হয়রানির শিকার হতে হয়। আর এর সাথেই রয়েছে বিচারকগণের সংখ্যার ক্ষেত্রে ব্যাপক তারতম্য, যেখানে ৭২ জন বিচারক প্রয়োজন সেখানে বর্তমানে রয়েছে ৪০ জন বিচারক। যদিও দুইজন বিচারককে সদ্য নিয়োগ করায় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ এ। তবে এ-সকল জটিলতার পর বর্তমানে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপ ও জলপাইগুড়ির হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে, গত ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত শুধুমাত্র সিভিল কেস বাকি রয়েছে এক লক্ষ ৫৯ হাজার ১৬৩ টি। সেখানেই ক্রিমিনাল কেস বাকি রয়েছে ৩৩ হাজার এক শ ছিয়াত্তর টি। তবে এই সংখ্যাটি কলকাতা হাইকোর্টের ক্ষেত্রে অনেকটাই কম, সেখানে সিভিল কোর্টে ১৭ হাজার ১৮২ কেস পেন্ডিং রয়েছে।
এইসব বিষয়গুলিকে লক্ষ্য করেই সহজেই অনুমান করা যায়, আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে ও বেশ কিছু ক্ষেত্রে অসুবিধের জন্য, হাইকোর্টের দূরত্ব অনেকটাই বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাধারণ মানুষের জন্য। তাই আইনি প্রক্রিয়া সরল করার ক্ষেত্রে এইসব বাধাগুলিকে দূর করার জন্য আরো একটি সার্কিট বেঞ্চের আদালতের প্রয়োজন,আর সেই বিষয়কে মাথায় রেখেই এই জটিলতা যাতে কাটানো যায়, তারই জন্য এবার পশ্চিম বর্ধমানের যাতে একটি পৃথক হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠন করা যায়, তা নিয়ে উঠল বিশেষ প্রস্তাব। রানীগঞ্জ বণিক সংগঠনের প্রবীণতম সদস্য রাজেন্দ্র প্রসাদ খৈতান এ বিষয়ে জেলাশাসক, এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সরকার যাতে সিদ্ধান্তগ্রহণ করে, এই এলাকায় হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ যাতে গঠিত হয় তার আর্জি জানাবেন, বলেই বৃহস্পতিবার রানীগঞ্জের বণিক সংগঠনের সভাকক্ষে, এক সাংবাদিক বৈঠক করে, এই কথায় ঘোষণা করলেন। এই কর্মসূচিতে তিনি ছাড়াও বর্তমানে চেম্বারের দায়িত্বে থাকা সকল সদস্যরা এই সাংবাদিক বৈঠকে বিশেষভাবে উপস্থিত হন।