পশ্চিম বর্ধমানের আটটি ব্লকের পানীয়জল নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ জেলাশাসকের
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার ৮ টি ব্লকের পানীয়জল সরবরাহ নিয়ে জেলা প্রশাসনিক স্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হয়। আসানসোলের সার্কিট হাউসে হওয়া শনিবারের এই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলম, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, পিএইচই বা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রুপম ঘোষ, অতিরিক্ত জেলাশাসক বা এডিএম সঞ্জয় পাল, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ মহঃ আরমান সহ জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা।


প্রসঙ্গতঃ, বিভিন্ন জেলার ব্লকের অধীন গ্রামগুলিতে পিএইচই জল সরবরাহ করে থাকে।
এদিনের বৈঠকে মুলতঃ আটটি ব্লকে পানীয়জল সরবরাহের সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিকাঠামো নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে পিএইচই ব্লকগুলিতে যে জল প্রকল্প তৈরি করছে, তা এখন ঠিক কোন জায়গায় ও কবে তা শেষ হবে, তা জানার চেষ্টা করেন জেলাশাসক। বিশেষ করে সালানপুর ও বারাবনি ব্লকে জল প্রকল্পের যে কাজ চলছে, তা এদিনের বৈঠকে উঠে আসে। সামনেই ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেইদিকে লক্ষ্য রেখে এইসব প্রকল্পের কাজ আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার জন্য জেলাশাসক নির্দেশ দেন।
তবে, পিএইচইর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করা না সম্ভব হলে, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে তা শেষ করতেই হবে।
বৈঠকের শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, জেলার আটটি ব্লকে পানীয়জল সরবরাহ করার পরিস্থিতি ও ব্যবস্থা এখন ঠিক কোন পর্যায়ে আছে, তা দিন পর্যালোচনা করা হয়েছে। জেলাশাসক এই জেলার দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি সময় নিয়ে সব ব্লক পরিদর্শন করেন। তাতে পানীয়জল সব জায়গায় একটা সমস্যা ও মানুষদের অসুবিধার বিষয়টি সামনে উঠে আসে। এদিনের বৈঠকে তা জেলাশাসক বলেছেন। কোথাও জল প্রকল্পের কাজ করতে কোন সমস্যা দেখা দিলে, তার সমাধানের জন্য একটি কো-অর্ডিনেশন রাখতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পানীয়জল সরবরাহ করার জন্য পাইপলাইন বসানোর জন্য কংক্রিটের রাস্তা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু সেই কাজ শেষ হওয়ার পরেও, তা সারাই করা হয়নি। দ্রুত তা মেরামত করার জন্য পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ারদের জানানো হয়েছে, তারা যাতে, তা দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদারকে বলেন।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মহঃ আরমান বলেন, পিএইচই জল প্রকল্প তৈরি করছে, কিন্তু তা সব জায়গা কভার করছে না। কিছু কিছু জায়গা বাদ থেকে গেছে। যেমন ১১৮ কোটি টাকা ব্যয় করে সালানপুর ব্লকে জল প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে নামোকেশিয়া, অরবিন্দ নগর ও কল্যানগ্রাম নেই। কেন এমনটা হবে? এরজন্য তো আলাদা করে একটা ডিপিআর করে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা ভালো। তিনি আরো বলেন, পিএইচইর ঠিকাদার এলাকায় গিয়ে কাজ করছেন, কিন্তু সেখানে ব্লক অফিস বা গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে সেই কাজ নিয়ে কিছু বলছেন না। ফলে, তারা কাজের ব্যাপারে কিছু জানতে পারছেনা। সবমিলিয়ে একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। কর্মাধ্যক্ষের দাবি, এই জেলার ৮ টি ব্লকের মধ্যে কাঁকসায় জলের পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। বাকি ব্লকগুলির মানুষেরা যাতে পানীয়জল ঠিক মতো পান, তারজন্য জেলাশাসক যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাকে তিনি স্বাগত জানান।