ASANSOL

আসানসোল পুরনিগমের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধিতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির, পাল্টা জবাব মেয়রের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল পুরনিগমের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে, বর্তমান পুর বোর্ডের সমালোচনায় সরব হলেন প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি। পাল্টা জবাব দিয়ে আক্রমণ করেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি শুক্রবার দুপুরে জিটি রোডের গোধুলি মোড় সংলগ্ন তার আবাসিক কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি আসানসোল পুরনিগমের দুটি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন যে এর থেকে প্রমাণিত হয় যে বর্তমান পুর বোর্ড এখন পুর পরিসেবা দেওয়ার পরিবর্তে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালানোর কথা ভাবছে।

জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, আমি যখন মেয়র ছিলাম , তখন আসানসোলের ১৯ নং জাতীয় সড়কের কালিপাহাড়ীতে মা ঘাগর বুড়ি মন্দির কমপ্লেক্সে একটি ম্যারেজ হল তৈরি করা হয়েছিল। সেই ম্যারেজ হল তৈরির উদ্দেশ্য ছিল যারা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের, তারা মা ঘাগরবুড়ি মন্দিরে বিয়ের জন্য যায়। যাতে তারা এই ম্যারেজ হল মাত্র ৫০০ টাকায় পায়। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে আসানসোল পুরনিগম এটি একটি ব্যক্তিগত মালিকানায় দিয়েছে। যে ঐ ম্যারেজ হল ২০/ ২৫ হাজার টাকা ভাড়া হিসেবে টাকা নেবেন। তার প্রশ্ন, কারোর যদি ২০/২৫ হাজার টাকায় ম্যারেজ হল ভাড়া নেওয়ার ক্ষমতা থাকে, তাহলে সে কেন মন্দিরে যাবেন? বিয়ের জন্য অন্য কোথাও হল বুক করবেন।


জিতেন্দ্র তেওয়ারি আরো বলেন, আসানসোল পুরনিগমের তরফে ” গীতবিতান ” নামে একটি গেস্ট হাউস বিএনআর মোড় সংলগ্ন রবীন্দ্র ভবনের পেছনে তৈরি করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল আসানসোলে কেউ এলে খুব কম টাকার বিনিময়ে এখানে থাকার সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, আমি যখন মেয়র ছিলাম, তখন দেশের বিভিন্ন শহর ঘুরে দেখেছিলাম প্রায় সব জায়গায় পুরনিগম বা পুরসভার একটি করে নিজস্ব গেস্ট হাউস বা অতিথিশালা আছে। সেই কারণেই আসানসোলের ঐরকম একটা এলাকায় ‘ গীতবিতান ‘ তৈরি করা হয়। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে সেখানে এক ব্যক্তিকে সেটি লিজে দিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ তৈরি করা হবে। এর কাছেই রবীন্দ্র ভবন, একটি কফি হাউস ও একটি আর্ট গ্যালারি রয়েছে। সেই জায়গাটির নিজস্ব একটা ঐতিহ্য রয়েছে। এই রকম একটা ভবনকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এটি ব্যক্তিগত হাতে তুলে দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়৷ তিনি বলেন, বিজেপি এর তীব্র বিরোধিতা করছে। তিনি আসানসোলের মানুষের কাছে আবেদন করে বলেন, আপনার পুরনিগমের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করুন।


প্রাক্তন মেয়রের দাবি ও তার অভিযোগ সম্পর্কে বর্তমান মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ঘাগরবুড়ি মন্দির সংলগ্ন এলাকায় যে ম্যারেজ হলটি তৈরি করা হয়েছিল তা একটি ভাল প্রচেষ্টা ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে সবকিছু বদলে গেছে। তিনি বলেন, একটা জিনিস তৈরি করাটাই যথেষ্ট নয়। সেই জিনিসের রক্ষণাবেক্ষণও প্রয়োজন। তারজন্য ফান্ডেরও দরকার। তারজন্য একটা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই কথা মাথায় রেখে ” গীতবিতান” তৈরি করা হয়েছে। এটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এসি বসানোর পাশাপাশি আরও অনেক কাজ রয়েছে। যা এখন সম্পূর্ণ করতে হবে। সেইসব কাজের জন্য প্রয়োজন এক থেকে দেড় কোটি টাকা। যা বর্তমানে পুরনিগমের কাছে নেই। তাই এটিকে লিজের মাধ্যমে বাণিজ্যিক রেস্তোরাঁর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সেখানে গেস্ট হাউস থাকবে না। গেস্ট হাউস যেমন ছিল তেমনই থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা দেখে পুরনিগমের ফান্ডের প্রয়োজন বুঝে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সাথে মেয়র বলেন, আসানসোল পুরনিগম রবীন্দ্র ভবনে নতুন ও পুরনো বাংলা ছবি দেখানোর কথাও ভাবছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *