বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাংক ভেঙে পড়ে মৃত্যু হলো তিনজনের, আহত ২০ জনেরও বেশি
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী :: বুধবার দুপুরে হঠাৎই বর্ধমান স্টেশনের ২ – ৩ নং প্ল্যাটফর্মের মধ্যবর্তী অংশে থাকা জলের ট্যাংক ভেঙে পড়ে মৃত্যু হলো তিনজনের আহত হলেন প্রায় ২০ জনেরও বেশি ব্যক্তি। যেখানে বিষয়টি লক্ষ্য করে দ্রুত রেল কর্তৃপক্ষ আহতদের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা করে। ঘটনার জেরে ববর্ধমান স্টেশনে ব্যাপক উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়।




রেল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ২ – ৩ নং প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে জলের ট্যাংক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেই সময় যারা প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই সেখানে চাপা পড়ে যায়। স্টেশন চত্বরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্টেশনে থাকা অন্যান্য যাত্রীরা উদ্ধার কাজে হাত লাগায়। ছুটে আসেন রেলের আধিকারিকেরা। দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। আসে জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বর্ধমান থানার পুলিশ। প্রায় ৩০ জনকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। মৃতদের মধ্যে একজন মহিলা আছেন।
জানা গেছে এদিন বর্ধমান স্টেশনের ২ ও ৩ নং প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে প্রায় দেড় লক্ষ লিটারের একটা জলের ট্যাংক আছে। ওই ট্যাংক লাগোয়া আছে ২ ও ৩ নং প্ল্যাটফর্মে নামার ফুট ওভারব্রিজ। এছাড়া আছে একটা চলন্ত সিঁড়ি। ওই দুটি প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ সেখানে জলের ট্যাংকটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেই ভারে ভেঙে পড়ে ফুট ওভারব্রিজের ছাদও।
ঘটনাস্থলে অনেকেই চাপা পড়ে । শুরু হয় মানুষ জনের আতর্নাদ। স্থানীয়রা, ও পুলিশ দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আমনদীপ অবশ্য তিন জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ এই দুর্ঘটনার তথ্য পাই। জানতে পারি প্ল্যাটফর্ম নম্বর ২ এবং ৩-এর মধ্যে একটি জলের ট্যাঙ্ক ফেটে যায়। ফলে জল শেডে পড়ে এবং তা ভেঙে যায়। কিছু যাত্রী আহত হন। আমাদের থানার তরফে আধিকারিকরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছি তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৭ জন আহত।’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তিনি বলেন, ‘১৮৯০ সালে তৈরি হয়েছিল এই ট্যাঙ্কটি। নিয়মিত এটির দেখাশোনা করা হয়। বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ এই জলের ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়ার খবর সামনে আসে। তৎক্ষনাৎ শুরু হয়ে যায় উদ্ধারকাজ। আহতদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’২০ থেকে ২২ জন আহত বলে জানান তিনি। তবে রেলের তরফে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। কৌশিক মিত্র জানান, এই জলের ট্যাঙ্কটির প্রতিনিয়ত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। সেক্ষেত্রে কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।