শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ফের বেআইনি কয়লা ব্যবসার রমরমা, সক্রিয় পুরনো মাফিয়াচক্র
বেঙ্গল মিরর আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায় : কয়লা চোরাচালান নিয়ে সিবিআই ও ইডির তৎপরতা সত্ত্বেও পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের ডামরা, কালিপাহাড়ি, কুলটি, সালানপুর, বারাবনি, জামুরিয়া, রানিগঞ্জের মাফিয়ারা কয়লা পাচার করছে। ডামরা, কালীপাহাড়ি এলাকায় পাপ্পু, সালানপুরে তারকেশ্বর ও শর্মা, কুলটি এলাকায় বারাবনি, ভুতু ও কানহাই ডিপো চালাচ্ছে এবং পিন্টা, আশরাফ, মমতাজ অবৈধ কয়লা তোলা ও চুরির সঙ্গে জড়িত বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।জামুরিয়ার চুরুলিয়া, কুনুস্তোরিয়া, সাতগ্রাম ও জেকে নগর এলাকা থেকে ব্যাপকভাবে কয়লা চুরি হচ্ছে। একই অবস্থা রানিগঞ্জেও। সম্প্রতি সালানপুর ও জামুরিয়ায় বড় ধরনের পদক্ষেপ করেছে সিআইএসএফ। কিন্তু এতে এই মাফিয়াদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছেনা।
পাণ্ডবেশ্বর ও অন্ডালের কথা তো ভুলেই যান, সেখানে অনেক রাজনীতিবিদদের যোগসাজশে নির্বিচারে ডিপো চালানো হচ্ছে ও কয়লা চুরি অবাধে চলছে বলে সূত্র মারফত খবর।জেকে নগরের রায় বাবু বালির পরে কয়লার কালো কারবারে আরো সক্রিয় হয়েছে। অন্যদিকে আসানসোল উত্তর থানা এলাকায় দু’জনে মিলে প্রকাশ্যে চালাচ্ছেন অবৈধ কয়লার ডিপো বলে অভিযোগ। কয়লা সিন্ডিকেট বিভিন্ন থানা এলাকায় মাফিয়াদের মাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গোটা বিষয়টি ম্যানেজ করতে বা ঠিক রাখতে তাদের লোকেরা থানা পর্যায়ে তৎপর রয়েছে।
আসানসোল উত্তর থানা এলাকার বাগবান্দি ও আশেপাশের এলাকায় এবং আসানসোল দক্ষিণ থানার এলাকার ডামরা, কালীপাহাড়ি এলাকায় জোরকদমে চলছে অবৈধ কয়লার ব্যবসা। একই সঙ্গে বারাবনি ও সালানপুর এলাকায়ও চলছে অবৈধ কয়লার ব্যবসা। তবে পুলিশের দাবি, তারা নিয়মিত ব্যবস্থা নিচ্ছে। কাল্লার সাতপুকুরিয়া এলাকায় কয়লা ডিপো পরিচালিত হচ্ছে জিতেনের যুগলবন্দিতে। এই সব কারবারিরা সেই বাম জমানা থেকেই অবৈধ কয়লা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।রাজনৈতিক পালাবদল হলেও, এই কারবারিদের কিছু হয়নি।
এমনও কথা মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে যে, অনেক সমাজের ভালো মানুষ ( white collar) নিজেরাই এই কয়লার কালো কারবারে অংশ নিচ্ছে। ট্রান্সপোর্ট বা পরিবহন ব্যবসা থেকে শুরু করে সব কিছুর সঙ্গেই এরা জড়িত। এখন এই কয়লার কালো ব্যবসার অংশীদার হয়েছেন তারা। তাদের লোকেরা এই সমস্ত কাজ দেখাশোনা করে এবং হিসাব পরিচালনা করে। মাথা তো শুধু টাকা এবং লভ্যাংশ নিয়ে । জে কে নগর এলাকায় অনেক ছোট নেতা যারা, কিছু দিন আগেও বড় রাজনীতিবিদদের অনুসরণ করতেন, তারা আজ লক্ষ লক্ষ টাকা সামলাচ্ছেন।সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে, লোকসভা নির্বাচনের আগেই কালো হিরের চোরাকারবার জাঁকিয়ে বসছে।