ASANSOL-BURNPUR

আসানসোলের কলেজের গেটে তৃনমুল ও বিজেপির যুব ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষ , আহত ৬

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোলে বিসি বা বিধানচন্দ্র কলেজের সামনে বিজেপির যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা বা বিজিওয়াইএমের ” নমো নভমদদাতা ” ক্যাম্প চলাকালীন হামলা চালানোর অভিযোগ উঠলো রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের যুব ও ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত কোনার ওরফে অন্তু ও বিজেপির জেলা সম্পাদক শম্পা রায়ের উপর হামলা চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পাল্টা শাসক দলের তরফে তাদের যুব ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের উপরে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সদস্যরা হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। শাসক দলের চারজন সমীর আনসারি, রাজশেখর কুমার, অর্ঘ্য ধীবর ও আসরফ আনসারি এই হামলায় আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরের এই ঘটনায় বিসি কলেজের সামনে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গন্ডগোলের খবর হিরাপুর থানার পুলিশ কলেজে ছুটে আসে। বেশ কিছুক্ষনের চেষ্টায় পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে দুপক্ষের সদস্য ও নেতারা আসানসোল জেলা হাসপাতালে এলে সেখানেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগের সামনে দু’পক্ষ বচসায় জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জেলা হাসপাতালে আসে। জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দুপক্ষের মোট ৬ জনের এমারজেন্সি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।


বিজেপি ও তাদের যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার তরফে দাবি করা হয়েছে, এদিন সকাল থেকে বিসি কলেজের মেন গেটের বাইরে রাস্তার পাশে নতুন ভোটারদের সচেতন করতে ” নমো নভমদদাতা ” স্লোগান সহ ক্যাম্প করা হয়েছিলো। দুপুর নাগাদ আচমকাই সেই ক্যাম্পে হাজির হয় প্রচুর তৃনমুল কংগ্রেসের যুব সংগঠন ও ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির সদস্যরা। তারা জানতে চায়, কি করা হচ্ছে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে বচসা ও কথা কাটাকাটি শুরু। তারপর সংঘর্ষ বেধে যায়। গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় হিরাপুর থানার পুলিশ আসে। এরপর দুপুর আড়াইটে নাগাদ দুপক্ষের সদস্যরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসেন। খবর পেয়ে জেলা হাসপাতালে পৌঁছান দু’দলের নেতারা।


এই প্রসঙ্গে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার দেবব্রত কোনার ওরফে অন্তু বলেন, আমরা কলেজের বাইরে নিজেদের মতো করে নতুন ভোটারদের সচেতন করছিলাম একটা কর্মসূচির মাধ্যমে। তখন শাসক দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা আমাদের উপরে আচমকাই হামলা করে। তাতে আমি সহ দুজন আহত হয়েছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো। তবে পুলিশ যে কোন ব্যবস্থা নেবেনা, তা আমরা জানি। বিজেপির জেলা সম্পাদক অভিজিৎ রায় বলেন, যত দিন যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের পায়ের মাটি তত সরে যাচ্ছে। তাই ভয় পেয়েই এই ধরনের নির্লজ্জের মত আচরণ করা হচ্ছে ।


অন্যদিকে, টিএমসিপির সমীর আনসারিরা বলেন, বিজেপির যুব মোর্চার সদস্যরা কলেজ গেটের সামনে কি করছে, তা জানতে যাই। তখন তারা আমাদের উপর আচমকা হামলা করে। তাতে আমাদের চারজন আহত হয়েছে। টিএমসিপির জেলা নেতৃত্বর তরফে অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির নেতা ও কর্মীরা বিসি কলেজের সামনে নতুন ভোটারদের সচেতন করার নামে কলেজ পড়ুয়াদের হয়রানি করছিলো। বিশেষ করে তারা ছাত্রীদের জোর করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি দেখিয়ে ও একটা
নম্বরে ফোন করাচ্ছিলো। আমাদের সদস্যরা তা শুনে সেখানে যেতেই তাদের উপর হামলা চালানো হয়। বিজেপি যে অভিযোগ করছে, তা ঠিক নয়। আমাদের চারজন আহত হয়েছে। আমরা হিরাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো।
হিরাপুর থানার পুলিশ জানায়, একটা গন্ডগোল বিসি কলেজে হয়। দু’পক্ষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কোন তরফে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করা হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *