বিশ্ব ক্যান্সার ডে পালনে আসানসোল জেলা হাসপাতালে সেমিনার, আক্রান্তদের সঙ্গে আলাপচারিতায় চিকিৎসকেরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়/ সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার ডে বা বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালনে মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কনফারেন্স হলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিলো। পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায় আসানসোল জেলা হাসপাতালের ক্যান্সার বা অনকোলজি ইউনিট এই সেমিনারের উদ্যোক্তা ছিলো। প্রায় ২ ঘন্টা ধরে চলা এই সেমিনারে আসানসোল জেলা হাসপাতালের অনকোলজি ইউনিটে চিকিৎসা করা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ডাকা হয়েছিলো। যার মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা কেমোথেরাপি, অস্ত্রপচার সহ চিকিৎসার পরে আপাততঃ সুস্থ হয়েছেন। তারা এই রোগকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কি কি করেছেন, তার কথা বলেন। তাদের সঙ্গে আলাপচারিতা করেন।
এইসব রোগীদের হাতে ফুল ও স্মারক তুলে দিয়ে সম্মান জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান, ডেপুটি সিএমওএইচ (৪) ডাঃ অনন্যা মুখোপাধ্যায়, জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস, জেলা হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসক ডাঃ রহুল আমিন, ডাঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ এসকে বাসু, অনকোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ অমিত মুখোপাধ্যায়, ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায়, সহকারী সুপার ডাঃ দেবদ্বীপ মুখোপাধ্যায়, সৃজিত মিত্র সহ একাধিক চিকিৎসক ও নার্সেরা।
এই সম্পর্কে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার ডে ছিলো। কিন্তু সেদিন রবিবার থাকায় এদিন জেলা হাসপাতালে এই দিনটি উদযাপন করা হয়েছে। যারা চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন, তারা যেমন ছিলেন, যারা এখন এই রোগের সঙ্গে এখন লড়াই করছেন তাদের ডাকা হয়েছিলো। সবাই তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। চিকিৎসকেরা তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ক্যান্সার ইউনিট চালু করা হয়েছে। গত তিন বছরে সব রকম পরিকাঠামো তৈরী করে যতটা সম্ভব চিকিৎসা করা হচ্ছে। যেটা এখানে সম্ভব নয়, তারজন্য মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছে। জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায় এখানের ইউনিটটি খুব ভালো ভাবে চলছে। এই রোগে আক্রান্ত মানুষেরা যাতে সবরকম সুবিধা ও চিকিৎসা পান তা করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য এইসব মানুষদের পাশে থাকা।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের অনকোলজিস্ট ডাঃ অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০২১ সালের মার্চ মাসে এখানে ইউনিট চালু হয়। ২০২১ সালে রোগীর সংখ্যা ছিল ৭০৭ জন। তারমধ্যে নতুন ছিলেন ২২৪ জন। কেমোথেরাপি দেওয়া হয় ২১৮ জনকে। ঐ বছর ব্রেস্ট ও হেড এন্ড নেক ক্যান্সার ছিলো। ২০২২ সালে ক্যান্সার রোগী ছিলো ৭৯২ জন। তারমধ্যে নতুন ছিলেন ২৪২ জন। কেমোথেরাপি দেওয়া হয় ২৪১ জনকে। একইভাবে ২০২৩ সালে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১২৯০ জন। যার মধ্যে নতুন রোগী ছিলেন ৩১০ জন। কেমোথেরাপি দেওয়া হয় ৫৫৩ জনকে। তিনি আরো বলেন, প্রথম দিকে ব্রেস্ট ও হেড এন্ড নেক ক্যান্সার রোগী আসেন। কিন্তু পরের দুবছর বিভিন্ন ক্যাটাগরীর রোগীরা আসেন। আমরা জেলা হাসপাতালে এই রোগীদের যতটা চিকিৎসা দেওয়ার, তা দিচ্ছি।